খুলনা | মঙ্গলবার | ১৩ মে ২০২৫ | ৩০ বৈশাখ ১৪৩২

সাবেক রাষ্ট্রপতির দেশত্যাগ রহস্য দ্রুত উন্মোচন করুন

|
১২:৪২ এ.এম | ১১ মে ২০২৫


সাবেক রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদ হত্যা মামলার একজন আসামি। আশ্চর্য, তিনি নির্বিঘেœ দেশ ছেড়েছেন বিমানবন্দর দিয়ে। এটা এক মিলিয়ন ডলার প্রশ্ন যে, সাবেক রাষ্ট্রপতি ইমিগ্রেশন পার হলেন কীভাবে? তিনি শুধু নিজে নন, সঙ্গী হয়েছেন তার ছেলে ও শ্যালকও। ঢাকা ত্যাগের আগে সাবেক এই রাষ্ট্রপতি ভিআইপি টার্মিনাল ব্যবহার করেন এবং বিমানবন্দরের সার্বিক আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করতে সময় লাগে প্রায় ৪ ঘণ্টা। বলা বাহুল্য, একজন সাধারণ নাগরিকও যদি মামলার আসামি হন, আদালতের অনুমতি ছাড়া তিনি দেশত্যাগ করতে পারেন না। অথচ আবদুল হামিদ, যিনি কি না হত্যার দায়ে অভিযুক্ত, তিনি চলে গেলেন দেশবাসীকে ফাঁকি দিয়ে!
প্রশ্ন উঠতেই পারে, সাবেক এই রাষ্ট্রপতি কি বিমানবন্দরের বিভিন্ন ডেস্ক, বিশেষত ইমিগ্রেশনের চোখে ধুলো দিয়েছেন? নিশ্চয়ই না। পাঁচবারের সংসদ-সদস্য, সংসদের সাবেক স্পিকার এবং দুই টার্মের রাষ্ট্রপতিকে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ চেনে না, এটা হতেই পারে না। তাহলে বোঝা গেল, ইমিগ্রেশনের কর্মকর্তারা হয় নিজেদের দায়িত্বে তাকে ছেড়ে দিয়েছেন, না হয় ঊর্ধ্বতন বড় কর্তাদের সায় পেয়েছেন। এ বড় কর্তা কে বা কারা? জানা গেছে, সাবেক এই রাষ্ট্রপতির ভিআইপি টার্মিনালে পৌঁছানোর সময় থেকে আকাশে ওড়ার আগ পর্যন্ত কোন কর্মকর্তা কী করেছেন, কে কার সঙ্গে যোগাযোগ করে ইমিগ্রেশন সম্পন্নের নির্দেশ দিয়েছেন, সে ব্যাপারে একটি গোয়েন্দা সংস্থা প্রতিবেদন তৈরি করেছে। এতে দেখা গেছে, তিনটি সংস্থার কর্মকর্তারা আবদুল হামিদের দেশত্যাগের বিষয়টি জানতেন। তাদের অনাপত্তির ভিত্তিতেই বিনা প্রশ্নে ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হয়েছে।
সামগ্রিক প্রেক্ষাপটে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের রহস্যজনক ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। নবগঠিত জাতীয় নাগরিক পার্টি স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কড়া সমালোচনা করেছেন, গণঅধিকার পরিষদ ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দিয়েছে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগ দাবি করে। ছাত্র উপদেষ্টাদের পদত্যাগ চেয়েছে ইনকিলাব মঞ্চ। প্রকৃত প্রস্তাবে, ঘনীভূত হচ্ছে রহস্য, সরকারের উদ্দেশ্য নিয়েও কথা হচ্ছে। পুরো বিষয়টি টক অব দ্য কান্ট্রিতে পরিণত হয়েছে।
৫ আগস্টের পর দেশব্যাপী যখন দাবি উঠেছে স্বৈরাচারের দোসরদের অপরাধের বিচার করার, তখন হত্যা মামলার আসামিকে পৃষ্ঠপোষকতা দিয়ে তাকে বিচার এড়ানোর সুযোগ করে দিয়েছেন যারা, তাদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে অবশ্যই। দ্বিতীয়ত, দেশে আইনের শাসনের বিষয়টিও প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। দেশবাসী চায়, দায়ের হওয়া সব মামলার নিষ্পত্তি হবে বিচারব্যবস্থার মাধ্যমে। জনগণের এ দাবিকে অগ্রাহ্য করছেন যারা, তারাও অপরাধী বৈকি। সাবেক রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ আবদুল হামিদের নির্বিঘেœ দেশত্যাগ করার রহস্য দ্রুতই উন্মোচন করতে হবে। তা না হলে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি জনগণের আস্থার পরিমাণ আগের মতো থাকবে না।

্রিন্ট

আরও সংবদ