খুলনা | রবিবার | ১১ মে ২০২৫ | ২৮ বৈশাখ ১৪৩২

মুন্সীগঞ্জ লঞ্চ ঘাটে দুই তরুণীকে মারধরকারী তরুণ আটক

খবর প্রতিবেদন |
০২:১২ এ.এম | ১১ মে ২০২৫


মুন্সীগঞ্জে এমভি ক্যাপ্টেন’ নামে পিকনিকের একটি লঞ্চে দুই তরুণীকে প্রকাশ্যে মারধরকারী তরুণকে আটক করেছে পুলিশ। শনিবার দুপুর নেহাল আহমেদ জিহাদ নামে ওই তরুণকে আটক করে মুন্সীগঞ্জ সদর থানা পুলিশ। শুক্রবার রাতে  এ ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মারধরের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। পুলিশ হেফাজতে নেওয়া নেহাল আহমেদ জিহাদ মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার দক্ষিণ ইসলামপুর এলাকার বাসিন্দা। নৌভ্রমণে বের হয়ে আক্রমণের শিকার ওই লঞ্চটি মুন্সীগঞ্জ শহর লঞ্চঘাটে যাত্রাবিরতি করার সময় এই ঘটনা ঘটে । 
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, লঞ্চটি যখন ঘাটে থেমেছিল তখন অনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং মাদক সেবনের কারণে স্থানীয় জনতঁ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। সম্পূর্ণ লঞ্চে ভাঙচুর চালানোর চেষ্টা করে ক্ষুব্ধ জনতা। সেই সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় থাকা তরুণ-তরুণীদের মারধর করার চেষ্টা করে। এমনকি কয়েকজন তরুণ অশালীন কর্মকাণ্ডে লিপ্ত থাকা এক তরুণীকে কোলে তুলে লঞ্চ থেকে ফেলে দেয়ার  জন্য মনস্থির করেছিল।
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি)  সাইফুল আলম শনিবার বিকেলে  বলেন, ২০০-৩০০ জন ভ্রমণকারী যাত্রী নিয়ে শুক্রবার বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকার কেরানীগঞ্জ থেকে ওই লঞ্চটি রওনা করে। তাঁরা প্রথমে রাজধানীর সদর ঘাটে অবস্থান নেয়। সন্ধ্যার দিকে সেখান থেকে চাঁদপুরের মোহনপুর যাওয়ার উদ্দেশ্যে সদরঘাট থেকে ছেড়ে আসে লঞ্চটি। পথিমধ্যে পিকনিকের চাঁদা দেওয়া নিয়ে ওই যাত্রীদের মধ্যে কিছুটা ঝামেলার গৃষ্টি হয়। তারা রাত আটটার দিকে নাস্তা নেওয়ার জন্য মুন্সীগঞ্জ লঞ্চঘাটে লঞ্চটি থামায়। সে সময় ওই লঞ্চের কয়েকজন তরুণ-তরুণীকে স্থানীয় জনতা মাদকাসক্ত অবস্থায় দেখতে পায়। পরবর্তীতে তারা লঞ্চের ভেতরে গিয়ে তল­াশি চালায়। সে সময় আপত্তিকর অবস্থায় কেবিনের মধ্যে কয়েকজন তরুণ-তরুণীকে দেখতে পায় তাঁরা। এতে স্থানীয় জনতা ক্ষুব্ধ হয়ে লঞ্চে ভাঙচুর করে। সেইসঙ্গে যারা আপত্তিকর অবস্থায় ছিল তাঁদেরকে মারধর করে। ঘটনার খবর পাওয়ার পরপরই আমরা ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ এবং পরিস্থিতি শান্ত করে লঞ্চটিকে ঢাকার দিকে ফিরিয়ে দেই।
এদিকে ওই দুই তরুণীকে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওতে দেখা যায়, দুই তরুণীকে লঞ্চের একেবারে সামনের অংশে উঠিয়ে বেল্ট দিয়ে পেটাচ্ছেন এক তরুণ। এসময় স্থানীয় মানুষ জন সেই দৃশ্য তাঁদের মোবাইল ফোনে ধারণ করে উল­াস করছেন ও বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। এ ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হলে মারধরের ঘটনাটির পক্ষে- বিপক্ষে মন্তব্য করেন নেটিজেনরা।
অভিযোগের  বিষয়ে  নেহাল আহমেদ জিহাদ  বলেন, স্থানীয় কয়েকশো’ মানুষ তরুণীদের আচরণ ও বেশভূষায় ক্ষিপ্ত হয়। তরুণীদের উপর আক্রমণ করতে চলে আসে। ক্ষিপ্ত জনতা ঐ তরুণীদের লঞ্চ থেকে ধরে নিয়ে যাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ হয়। সে সময় ভুক্তভোগী কয়েকজন তরুণী আমাকে অনুরোধ করে, আমি যেন তাঁদেরকে এমন পরিস্থিতি থেকে উদ্ধার করি। তাঁদের অনুরোধে বড় ভাই হয়ে আমি সেখানে শাসন করি। এর বেশি কিছু নয়। তারপরও আমি যেটি করেছি এটি ভুল করেছি, আমি এর জন্য অনুতপ্ত। 
মুন্সীগঞ্জ সদর থানার ওসি সাইফুল আলম বলেন, শুক্রবার এ ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মারধরের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়। সে ঘটনার প্রেক্ষিতে আমরা জিহাদকে থানায় আসতে বলি। সে থানায় চলে আসে। আমরা তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করছি। এ ঘটনায় এখনো কোনো অভিযোগ পাওয়া যায়নি। ভুক্তভোগী এক তরুণীকে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বলা হয়েছিল। তবে সে আসবে না বলে জানিয়েছে। তাঁর মুঠোফোনটি বন্ধ দেখাচ্ছে। নৌপুলিশ লঞ্চ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছে। সবশেষ কেউ কোনো ব্যবস্থা না নিলে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ