খুলনা | সোমবার | ১২ মে ২০২৫ | ২৯ বৈশাখ ১৪৩২

পুঁজিবাজার পরিস্থিতি উন্নয়নে ৫ নির্দেশনা

শেয়ার মার্কেট সংস্কারে বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞ আনার নির্দেশ প্রধান উপদেষ্টার

খবর প্রতিবেদন |
০১:৪৫ এ.এম | ১২ মে ২০২৫


শেয়ার মার্কেট সংস্কার কাজে বিদেশ থেকে বিশেষজ্ঞদল আনার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস। রোববার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় শেয়ার বাজার সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এই নির্দেশনা দেন। বৈঠক শেষে এসব কথা জানান প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। বৈঠকে অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ, প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী ড. আনিসুজ্জামান, বাংলাদেশ সিকিউরিটি অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ উপস্থিত ছিলেন।  
প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, আজ (গতকাল রোববার) প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে শেয়ার মার্কেট সংশ্লিষ্টদের খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বৈঠক ছিল। বৈঠকে কিছু সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিদেশি যেসব কোম্পানিতে সরকারের শেয়ার আছে যেমন- ইউনিলিভার, তাদের যাতে খুব দ্রুত শেয়ার বাজারে অন্তর্ভুক্ত করা হয় সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়। বাংলাদেশে অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আছে যাদের বার্ষিক টার্নওভার ২-৩ বিলিয়ন ডলার, তাদের অনেক বড় বড় ভেঞ্চার আছে, তাদের যাতে স্টক মার্কেটে আনা যায়, সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সে জন্য কী ধরনের প্রণোদনা দেওয়া যায়, সেটি শেয়ার বাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছে। সিটি গ্র“প, মেঘনা গ্র“পের মতো কোম্পানিকে কীভাবে শেয়ার বাজারে আনা যায়, সেটার কথা বলা হয়েছে।
তিনি বলেন, শেয়ার মার্কেটে স্বার্থান্বেষী লোক অনেক আছে। আমরা সংস্কার কাজ হাতে নিলেও অনেক সময় কাজ করতে চায় না বা এরা এই সংস্কারের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়ে যায়। এ জন্য শেয়ার বাজারে খুব গভীরভাবে সংস্কার করা যায়, সে জন্য বিদেশি বিশেষজ্ঞ আনতে বলেছেন প্রধান উপদেষ্টা। তারা এসে পুরো তিন মাসে এই সংস্কার বাস্তবায়ন করবেন।
প্রেস সচিব বলেন, আমাদের স্টক মার্কেট সংশ্লিষ্ট যেসব এজেন্সি আছে বা অফিস আছে, এখানে অনেক ধরনের দুর্নীতি আছে। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, যাদের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে, খুব দ্রুত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। যাতে শেয়ার বাজারে একটা বার্তা পৌঁছায় যে কোনও ধরনের অনিয়ম বরদাশত করা হবে। বাংলাদেশে যত বড় বড় কোম্পানি আছে তারা ব্যংকগুলো থেকে ঋণ নেয়, এটাকে নিরুৎসাহিত করে ঋণ না নিয়ে কীভাবে বন্ড ইস্যু করে স্টক মার্কেটের মাধ্যমে তারা তাদের অর্থায়ন সংগ্রহ করতে পারে, সেই বিষয়ে বলা হয়েছে। আলোচনা খুবই প্রাণবন্ত হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টা পুরোটা শুনেছেন। আমরা আশা করছি, খুব দ্রুত স্টক মার্কেটে পরিষ্কার সংস্কার দেখতে পারবো।’ 
প্রধান উপদেষ্টার দেওয়া পাঁচটি নির্দেশনা হলো : সরকারের মালিকানা রয়েছে এমন মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানিগুলোকে সরকারের শেয়ার কমিয়ে পুঁজিবাজারে অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ; বেসরকারি খাতের দেশীয় বড় কোম্পানিগুলোকে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত করার ক্ষেত্রে উৎসাহিত করতে প্রণোদনাসহ প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ; স্বার্থান্বেষী মহলের কারসাজি রুখতে বিদেশি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে এসে তিন মাসের মধ্যে পুঁজিবাজার সংস্কার করা।
এছাড়াও পুঁজিবাজারে অনিয়মের সঙ্গে জড়িতদের প্রত্যকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং বড় ধরনের ঋণ প্রয়োজন এমন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যাংক ঋণনির্ভরতা কমিয়ে পুঁজিবাজার থেক বন্ড ও ইক্যুইটির মাধ্যমে তহবিল সংগ্রহে আগ্রহী করে তোলার ব্যবস্থা গ্রহণ।
লুটপাটের মাধ্যমে শেয়ারবাজারকে বেসামাল করে দেওয়ার পেছনে গত কয়েক দশক ধরে যারা জড়িত তাদের বিচারের আওতায় না আনতে পারলে মানুষের আস্থা ফিরবে না জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, শেয়ারবাজারকে যে অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে তা অকল্পনীয়। আমাদের অবশ্যই এই পরিস্থিতির উত্তরণ ঘটাতে হবে। শেয়ারবাজারের প্রয়োজনীয় সংস্কারের মাধ্যমে এমন অবস্থায় ফেরাতে হবে যেন মানুষ আস্থা ফিরে পায়, এটা যেন লুটেরাদের আড্ডাখানায় পরিণত না হয়।

্রিন্ট

আরও সংবদ