খুলনা | শুক্রবার | ২০ জুন ২০২৫ | ৬ আষাঢ় ১৪৩২

পাঁচ দিন ধরে মাঝারি তাপপ্রবাহে পুড়ছে যশোরের জনজীবন

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর |
০১:৫২ এ.এম | ১২ মে ২০২৫


টানা তাপপ্রবাহে পুড়ছে যশোরের জনজীবন। গত ৫ দিন জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ থেকে ৪০.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে উঠানামা করছে। রোববার দুপুর সাড়ে ৩টায় জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে যশোরের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান বিমান ঘাঁটির নিয়ন্ত্রণাধীন আবহাওয়া অফিস।  
জানা যায়, রোববার সরকারি ছুটির দিন হওয়ায় শহরের রাস্তাঘাটে লোকজনের সংখ্যা তুলনামূলক কম ছিল। সেই সঙ্গে গরমের কারণে অনেকে খুব প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে বের হননি। অনেকটাই ফাঁকা দেখা গেছে শহরের বিভিন্ন এলাকা। শ্রমজীবী ও খেটে খাওয়া মানুষ কাজের তাগিদে তীব্র গরম উপেক্ষা করে বের হচ্ছেন।
তীব্র গরমের কারণে দিনের বেলা বিপণিবিতানগুলোতে ক্রেতার দেখা মিলছে কম। খাদ্যাভ্যাসেও এসেছে পরিবর্তন। বাজারে বেড়েছে সবজির দাম। কৃষি শ্রমিকরাও চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। প্রচণ্ড রোদে সবজি জাতীয় ফসলের অতিরিক্ত সেচের প্রয়োজন পড়েছে। এতে কৃষকদের খরচও বেড়েছে।
শহরের চিত্রামোড়ের বাদাম বিক্রেতা আনোয়ার হোসেন বলেন, দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত ফুটপাতে খোলা আকাশের নিচে ভাজা বাদাম বিক্রি করি। ভ্যানের উপর চুলার আগুনে বাদাম ভাজি, কিন্তু চুলার আগুনের চেয়ে সূর্যের তাপ বেশি লাগছে। গরমে শরীর ঘামছে দর দর করে। খুবই কষ্ট হচ্ছে। প্রচণ্ড গরমে রাস্তার লোকজনের চলাচলও খুবই কম।
শহরের দড়াটানা মোড়ে কথা হয় ইজিবাইক চালক ইসলামাইল হোসেনের সঙ্গে। তিনি বলেন, গরমে প্রচণ্ড গা ঘামছে। পানি পিপাসায় গলা শুকিয়ে আসছে। রাস্তায় লোকজন কম। তবুও কাজে না বের হলে সংসার চলবে না। তাই কষ্ট হলেও কাজে এসেছি।
শহরের মুজিব সড়কে রিকশাচালক রহিম গাজী বলেন, খুবই গরম পড়ছে। দুই-তিনবার খ্যাপ (ভাড়া) মারার পর ঘেমে যাচ্ছি। শরীরে বল পাচ্ছি না। তাই মাঝে মাঝে জিরিয়ে (বিশ্রাম) নিচ্ছি। খুব কষ্ট হচ্ছে রিকশা চালাতে, কিন্তু উপায় নেই।
শহরের রেলবাজারের সবজি বিক্রেতা ইব্রাহিম হোসেন বলেন, খা-খা রোদে গা পুড়ে যাচ্ছে। খুব দরকার ছাড়া মানুষ ঘরের বাইরে কম বের হচ্ছেন। সকালের দিকে লোকজন কেনাকাটা করে চলে যাচ্ছেন। বাজারে সবজি কম, দাম একটু বেশি।
যশোরের ডেপুটি সিভিল সার্জন নাজমুস সাদিক রাসেল জানান, প্রচণ্ড গরমে ঘরের বাইরে সাবধানতার সঙ্গে চলাচল করতে হবে। পাশাপাশি স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খেতে হবে। তা না হলে পানিশূন্যতা থেকে জন্ডিস, ডায়রিয়াসহ নানা সমস্যার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমনকি হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও রয়েছে। পানি শূন্যতা থেকে রক্ষা পেতে ঘন ঘন পানি খেতে হবে। ডায়রিয়া ও জন্ডিস থেকে রক্ষা পেতে ভাজাপোড়াসহ তেল জাতীয় খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
প্রসঙ্গত, থার্মোমিটারের পারদ চড়ে যদি সেটি ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে ওঠে, আবহাওয়াবিদরা সেটিকে মৃদু তাপপ্রবাহ বলেন। উষ্ণতা বেড়ে ৩৮ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস হলে তাকে বলা হয় মাঝারি তাপপ্রবাহ। আর তাপমাত্রা ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি হলে তাকে তীব্র তাপপ্রবাহ ধরা হয়। এরপর তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রির ওপরে উঠলে বলা হয় অতি তীব্র তাপপ্রবাহ।

্রিন্ট

আরও সংবদ