খুলনা | বৃহস্পতিবার | ১৫ মে ২০২৫ | ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দেশের অর্থনীতি পাল্টাতে চট্টগ্রাম বন্দরই মূল ভরসা: ড. ইউনূস

খবর প্রতিবেদন |
০১:০৮ পি.এম | ১৪ মে ২০২৫

 
চট্টগ্রাম বন্দরকে সত্যিকার বন্দরে পরিণত করার কাজ চলছে জানিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, ‘দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র হলো চট্টগ্রাম বন্দর। এখান থেকেই বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে যাবে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি।

তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের অর্থনীতি পাল্টাতে চাইলে চট্টগ্রাম বন্দরই হলো মূল ভরসা। তাই পৃথিবীর সেরা বন্দর ব্যবস্থাপক যারা আছেন, তাদের আমি ডাকতে বলেছি।’

বুধবার (১৪ মে) সকালে চট্টগ্রাম বন্দর পরিদর্শনকালে দেওয়া এক বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

চট্টগ্রাম বন্দরের গুরুত্ব তুলে ধরে ড. ইউনূস বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর বাংলাদেশের অর্থনীতির হৃদয়। যদি এই হৃদয় দুর্বল থাকে, তবে কোনো চিকিৎসকই তাকে সচল রাখতে পারবে না। এ কারণেই আমাদের এটিকে বিশ্বমানের করে গড়ে তুলতে হবে।

‘যথাযথ পরিকল্পনায় এগোতে পারলে ২০৩৬ সালে বাংলাদেশিরা দক্ষ জনশক্তি হয়ে বিদেশের বন্দর পরিচালনা করবে’ বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধান উপদেষ্টা।

তিনি জানান, এর আগে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানকে আহ্বান জানানো হলেও কার্যকর অগ্রগতি হয়নি। তাই পৃথিবীর সেরা বন্দর ব্যবস্থাপক যারা আছেন, তাদের ডাকতে বলেছেন।

আঞ্চলিক সংযোগের গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, এই হৃদয়কে (চট্টগ্রাম বন্দর) প্রতিবেশীদের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। তাই আমি নেপাল ও ভারতের সাত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের (সেভেন সিস্টারস) সঙ্গে সংযোগের কথা বলেছি। তারা যুক্ত হলে তারাও লাভবান হবে, আমরাও। যারা যুক্ত হবে না, তারাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।

চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে নিজের শৈশবস্মৃতি স্মরণ করে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর আমার কাছে নতুন কিছু নয়। ছোটবেলা থেকেই আমি এর সঙ্গে পরিচিত। এটি অনেক বদলেছে, তবে দুঃখজনকভাবে অগ্রগতি খুব ধীর। সুযোগ পেয়েই আমি প্রথম দিন থেকেই খোঁজখবর নিতে শুরু করি—কী করা যায় বন্দরের জন্য।

তিনি আরও বলেন, বিশ্ব অনেক দূর এগিয়ে গেছে, আর আমরা অনেক পিছিয়ে আছি। কেউ যেন তেমন গুরুত্বও দিচ্ছে না। এ কারণেই আমি পরিবর্তনের জন্য চাপ দিয়েছি। আমি বিশ্বের সেরা অপারেটরদের হাতে বন্দরের দায়িত্ব তুলে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছি। আশা করি, সবাই এ সিদ্ধান্তের তাৎপর্য বুঝতে পারবে।

চট্টগ্রাম বন্দরের উন্নয়ন প্রসঙ্গে নৌপরিবহন ও শ্রম মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, প্রধান উপদেষ্টার আগ্রহ ও অঙ্গীকারের জন্যই বন্দরের সুযোগ-সুবিধা উন্নয়নের কাজ এগিয়ে যাচ্ছে। বন্দরের চারপাশে একাধিক টার্মিনাল নির্মাণের মাধ্যমে কনটেইনার জট কমানো সম্ভব হবে।

তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, আমি বিশ্বাস করি, ছয় মাসের মধ্যেই এর বাস্তব প্রভাব দেখা যাবে।

চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এসএম মনিরুজ্জামান বলেন, বাংলাদেশের বৈদেশিক বাণিজ্যের ৯২ শতাংশ এবং তার মধ্যে ৯৮ শতাংশই চট্টগ্রামের নিউ মুরিং কনটেইনার টার্মিনালের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। তাই বন্দরের আধুনিকায়নের কোনো বিকল্প নেই।

তিনি আরও জানান, প্রাকৃতিক সীমাবদ্ধতার কারণে ২০০ মিটার বা তার চেয়ে বড় জাহাজ চট্টগ্রাম বন্দরে নোঙর করতে পারে না। এর ফলে প্রতিদিন বাংলাদেশ বড় অংকের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে বলে বিশ্বব্যাংকের একটি প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

্রিন্ট

আরও সংবদ