ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থানা পুলিশের অভিযানে বন্ধ করা হলো বহুল আলোচিত সমালোচিত উপজেলার বুজরুক মুন্দিয়া গ্রামের সেই “অলস ঘর”। বুধবার বিকেলে থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম হাওলাদারের নেতৃত্বে অভিযান চালানো হয়। তবে পুলিশের অভিযানের খবর পেয়ে আগে থেকেই শটকে পড়েন সেখানে অবস্থান করা অলস ঘরের সকল অলস সদস্যরা। এজন্য এই অভিযানে কাউকে আটক করা যায়নি। তবে ভবিষ্যতের জন্য সতর্ক করে অলস ঘরটি বন্ধ করে দেওয়ার নির্দেশনা প্রদান করা হয়। 
অলস ঘরের স্থানীয় কয়েকজন সদস্যকে ডেকে পুলিশ তাদেরকে অলস ঘরের কূফল ধারণা দিলে তারা তাদের ভুল বুঝতে পারেন। তারা এ ধরনের কর্মকান্ড থেকে বিরত থাকার অঙ্গীকারও করেন। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আলস সংগঠনের একজন সদস্য জানান, আসলে আমরা লেখাপড়া শিখে চাকুরি না পেয়ে বেকার অবস্থায় আছি, এজন্য আমরা অলস সময়টা এই অলস ঘরে বসে মোবাইল চালাই। আমাদের কয়েকজন বেকার মিলে সিদ্ধান্ত নেই এলোমেলোভাবে না থেকে একটা জায়গায় বসে আমরা নিজেদের ভিতর গল্প করাসহ মোবাইলে ফেসবুক চালানোর মত একটা নির্দিষ্ট স্থান থাকা ভালো। এজন্যই আমরা এটা হাসির ছলে মজা করে বন্ধুরা মিলে অলস ঘর নাম দিয়ে সেখানেই আলস সময় কাটাই। বাড়ি বসে মোবাইলে ফেসবুক চালালে আমাদের অভিভাবকদের বকুনি খেতে হয়। এজন্যই আমরা অলস ঘরে বসে আলস সময় পার করি। পুলিশি অভিযান হতে পারে এমন সংবাদ আগেই টের পেয়ে আলস ঘর সংগঠনের সদস্যরা তাদের লাগানো সাইনবোর্ড খুলে ফেলে। 
অভিযান শেষে কালীগঞ্জ থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) শহিদুল ইসলাম জানান, অলস কথার অর্থ কাজকে নিরুৎসাহিত করা। অলস নামে কোন সংগঠন থাকবে এটা সত্যিই দুঃখজনক। সবাইকে সচেতন করার জন্য এখানে আসা হয়েছে। ভবিষ্যতে এমন কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। অলসতা জীবনে সফলতা আনতে পারে না। তাই স্থানীয়দেরকে কর্মমুখী জীবন গড়ার পরামর্শও তিনি দেন।
উলে­খ্য, গত ১০ এপ্রিল অলস মানুষদের জন্য গড়ে তুলেছিল অসল ঘর। এরপর সর্বত্র শুরু হয় আলোচনা সমালোচনা। বিভিন্ন গণমাধ্যমে ব্যতিক্রমী এবং সমাজের জন্য ক্ষতিকর সংগঠন অলস ঘর নিয়ে সংবাদ পরিবেশিত।  
এর পরিপেক্ষিতে থানা পুলিশের এ ধরনের অভিযানকে সকলে সাধুবাদ জানিয়েছে। ভবিষ্যতে যেন কর্মকে নিরুৎসাহিত করার কোন সংগঠনের উৎপত্তি না হয় সেজন্য সবাই সজাগ থাকবে এমনটাই প্রত্যাশা করেন স্থানীয়রা।