খুলনা | শনিবার | ১৭ মে ২০২৫ | ২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

‘দলের সকল নেতা-কর্মী, তরুণরা প্রত্যেকেই ৩১ দফার অ্যাম্বসেডর’

বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা রাজনীতির মহাকাব্য : সালাউদ্দিন আহমদ

নিজস্ব প্রতিবেদক |
১০:৪৩ পি.এম | ১৬ মে ২০২৫


বিএনপি’র জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমদ বলেন, আ’লীগের লিগেসি যেটা আমি সবসময় বলি-আ’লীগের ইতিহাস, একদলীয় শাসন ব্যবস্থার  প্রবর্তনের ইতিহাস। সাংবিধানিক এবং গণতান্ত্রিক শাসন দূরীভূত করার ইতিহাস। এই যে চোরতন্ত্রের যে ওয়ারেশি ব্যবস্থা সেটা আ’লীগ শেখ মুজিবের সময় থেকে শেখ হাসিনার সময় পর্যন্ত  গড়িয়েছে।
গতকাল শুক্রবার বিকেলে খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে ‘শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও মৌলিক অধিকার নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা’ শীর্ষক খুলনা-বরিশাল বিভাগীয় সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদল এ সেমিনারের আয়োজক। কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনে আজ শনিবার নগরীর সার্কিট হাউজ ময়দানে বিভাগীয় সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। 
বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন আহমদ আরো বলেন, বিএনপি ঘোষিত ৩১ দফা রাজনীতির মহাকাব্য। এই দফার মধ্যেই শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থানসহ মানুষের মৌলিক অধিকার এবং বাস্তবায়নের পথ দেখানো হয়েছে। আমাদের এই ভাবনাকে জনগণের মধ্যে ছড়িয়ে দিতে হবে। দলের সকল নেতা-কর্মী, তরুণরা প্রত্যেকেই এই ৩১দফার অ্যাম্বসেডর। 
তিনি আরও বলেন, জাতীয় নির্বাচনের মধ্যদিয়ে প্রবঞ্চনামূলক যে সরকার ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত করা হয়েছিল ২০১৪, ২০১৮ এবং ২০২৪ সালে। তাতে করে রাষ্ট্রের অভিভাবকত্বের মধ্যে দুনীর্তিকে প্রাতাষ্ঠানিক রূপ দেওয়া হয়েছিল। সেই কারণে শেখ হাসিনার সময়ে একটি অবৈধ ফ্যাসিবাদী শাসন ব্যবস্থা কায়েম হয়েছিল। সেই অবস্থা থেকে মুক্তির জন্য আমাদের শত সহস্র জীবন দিতে হয়েছে। জনতার রক্তের যে প্রত্যাশা বা আকাক্সক্ষা সেটিকে উর্ধ্বে তুলে ধরে ফ্যাসিবাদ বিরোধী জাতীয় ঐক্যকে শক্তিশালী করে সবার আগে বাংলাদেশ-এই নীতি আমাদের প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।
তিনি বলেন, জনগণের সমর্থন নিয়ে রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে সারাদেশে ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা ও বহুভাষিক শিক্ষার প্রচলন করতে চায় বিএনপি। “ভাষা শিখতে হবে, অবশ্যই দুইটি ভাষা শিখতে হবে। আমি নিজেও অন্য ভাষা শিখেছি। আগামীতে আমরা রাষ্ট্র ক্ষমতায় গেলে মাতৃভাষার পাশাপাশি অন্তত দুইটি ভাষা শিক্ষা দেওয়ার ব্যাপারে উদ্যোগ নেব।”
বিএনপির হাত ধরে অতীতে দেশের সব সংস্কার হয়েছে উলে­খ করে তিনি বলেন, “বিএনপি’র হাত ধরেই দেশে বহু সংস্কার হয়েছে। স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা করেছিলেন আমাদের নেতা জিয়াউর রহমান। তিনি বহুদলীয় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। ৯০ পরবর্তী সংসদীয় সরকার ও তত্ত¡াবধায়ক সরকারের প্রবর্তন বিএনপি’র মাধ্যমেই হয়েছে। তারেক রহমানের নেতৃত্বেই পুনরায় গণতন্ত্র ফিরে আসবে।” তিনি বলেন, “স্বৈরাচারের পতনের আগে ২০২৩ সালে আমরা রাষ্ট্র সংস্কারের জন্য ৩১ দফার ঘোষণা দিয়েছিলাম। 
আ’লীগ দেশকের সব সেক্টর ধ্বংস করেছে উলে­খ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, “গত ১৫ বছর আওয়ামী লীগ চোরতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। তারা দেশকে ধ্বংস করে পালিয়ে গেছে। এই ধ্বংস স্তূপ থেকে বাংলাদেশকে পুনরুজ্জীবিত করতে বিএনপি’র ৩১ দফার রূপরেখা জনগণের সামনে তুলে ধরেছে।” তিনি আওয়ামী লীগের ‘অপরাজনীতির’ বিরুদ্ধে ‘ভালো রাজনীতি’ প্রতিষ্ঠার আহŸান জানিয়ে বলেন, “আওয়ামী লীগের ইতিহাস অপরাজনীতির ইতিহাস। আমাদেরকে এই অপরাজনীতির বিরুদ্ধে ভালো রাজনীতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাহলে আওয়ামী বাকশাল আর কখনো দাঁড়াতে পারবে না।”
বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের উপদেষ্টা মাহদী আমিনের উপস্থাপনায় সেমিনারে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি’র চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ, বিডিজবস’র প্রতিষ্ঠাতা ফাহিম মাশরুর, রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও ডিডব্লিউ একাডেমি’র প্রভাষক ড. মারুফ মলি­ক, চিন্তক ও সম্পাদক রেজাউল করিম রনি, এএম জেড হাসপাতালের চিকিৎসক ডাঃ সায়েম মোহাম্মদ, ইউনিভার্সিটি অফ সেন্ট্রাল ফ্লোরিডার অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম খন্দকার, শিখো’র প্রতিষ্ঠাতা শাহীর চৌধুরী, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. শামীমা সুলতানা, ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অফ সিঙ্গাপুরের সহযোগী অধ্যাপক ড. তৌফিক জোয়ার্দার প্রমুখ। 
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় বিএনপি’র ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল, তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বাবী হেলাল, বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আবদুল মোনায়েম মুন্না, স্বেচ্ছাসেবক দলের কেন্দ্রীয় সভাপতি এসএম জিলানী, যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ নূরুল ইসলাম নয়ন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, যুবদলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক বিল­াল হোসেন তারেকসহ স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।
সেমিনারে আলোচকরা শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মসংস্থান বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্য উপস্থাপন করেন। তারা বলেন, কর্মসংস্থানের নিজেদের যোগ্য হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। মাতৃভাষার পাশাপাশি আরো ২/৩টি বিদেশী ভাষা শিখতে হবে। ইন্টারনেট ব্যয় হ্রাস, প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে। 

্রিন্ট

আরও সংবদ