খুলনা | মঙ্গলবার | ২০ মে ২০২৫ | ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

খুবির শিক্ষককে লাঞ্ছনাকারী শিক্ষার্থী নোমানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে ব্যাখ্যা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের

খবর বিজ্ঞপ্তি |
০২:১১ এ.এম | ১৮ মে ২০২৫


গত ২ মে (শুক্রবার) সন্ধ্যায় উপাচার্যের বাসভবন সংলগ্ন এলাকায় একটি অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে। যে ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ডিসিপ্লিনের স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থী মোবারক হোসেন নোমান কর্তৃক সহকারী ছাত্র বিষয়ক পরিচালক হাসান মাহমুদ মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মাটিয়ে লুটিয়ে পড়েন এবং জ্ঞান হারান। তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টার এবং পরবর্তীতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। এ ঘটনায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা গভীর রাতে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। যা স্থানীয় পত্রিকাসহ দেশের গণমাধ্যমগুলোতে প্রকাশিত হয়। এটি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে একটি নজিরবিহীন ন্যাক্কারজনক ঘটনা। যা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থসংশ্লিষ্ট সকলকে মর্মাহত করেছে। 
এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ৩ মে (শনিবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহŸান করা হয়। সিন্ডিকেট সভায় বিস্তারিত আলোচনার পর উক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে তাৎক্ষণিক প্রাপ্ত তথ্য ও উপাত্তের ভিত্তিতে তার ছাত্রত্ব ও স্নাতক ডিগ্রির সনদপত্র সাময়িকভাবে স্থগিত করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। একই সাথে সিন্ডিকেট কর্তৃক একটি উচ্চতর ক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। উক্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে এ বিষয়ে পরবর্তী চ‚ড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে। পাশাপাশি শিক্ষককে শারীরিক ভাবে আঘাত করার ঘটনায় যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে সিন্ডিকেটে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দেশের প্রচলিত আইনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়। যা বর্তমানে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও আদালতের মাধ্যমে চলমান রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দ্ব্যর্থহীনভাবে এই বার্তা দিতে চায়, কোনো বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী কিংবা কোনো গোষ্ঠীর প্রতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন অনুরাগ বা বিরাগ পোষণ করে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও সাবেক শিক্ষার্থী এবং স্বার্থসংশ্লিষ্ট সকলের মধ্যকার দীর্ঘদিনের সু-সম্পর্ক ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বদ্ধপরিকর।
কিন্তু অত্যন্ত দুঃখের সাথে লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, বিষয়টি নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারিত হচ্ছে। যা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক ও শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশের অন্তরায়। 
শনিবার বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে উক্ত শিক্ষার্থী নোমানের রিমান্ড সংক্রান্ত বিষয়ে একটি অসত্য তথ্য ছড়িয়ে পড়ে। প্রকৃতপক্ষে রিমান্ড আবেদন করার কোনো ক্ষমতা বিশ্ববিদ্যালয় রাখে না। এটি আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাজের একটি প্রক্রিয়া, যা তারা স্বাধীনভাবে পরিচালনা করছে। বিশ্ববিদ্যালয় এতে কোনো হস্তক্ষেপ করেনি এবং ভবিষ্যতেও করবে না। 
এখানে আরও উলে­খ্য যে, মানবিক কারণে একজন শিক্ষার্থী বিবেচনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ইতোমধ্যেই আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কাছে উক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় দণ্ডবিধির ৩০৭ ধারা প্রয়োগ না করার জন্য লিখিতভাবে অনুরোধ করেছে। 
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন মনে করে, বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান ও প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গৌরব। তাদের ইতিবাচক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল হয়। তারা অতীতে যেমন বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশে ছিল এবং আগামীতেও থাকবে বলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আশা করে। তাই, অনাকাক্সিক্ষত এ ঘটনা সম্পর্কে কোনো ধরনের বিভ্রান্তি ব্যতিরেকে বস্তুনিষ্ঠ ও গঠনমূলক মতামত প্রকাশের জন্য সকলের প্রতি আহŸান জানানো যাচ্ছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো শিক্ষার্থী কিংবা গণমাধ্যমকর্মীদের এ বিষয়ে কোনো কিছু জানার প্রয়োজন হলে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সার্বিক সহযোগিতা করবে। 
 

্রিন্ট

আরও সংবদ