খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২২ মে ২০২৫ | ৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

অন্তর্বর্তী ভিসির প্রতি অনাস্থা, পদত্যাগের আহবান কুয়েট শিক্ষক সমিতির

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০৪:১৯ পি.এম | ২১ মে ২০২৫


খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. মোঃ হযরত আলীর প্রতি অনাস্থা জানিয়ে দ্রুত তাকে পদত্যাগের আহŸান জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি। বুধবার দুপুর ২টা ৩০ মিনিটে কুয়েটের প্রশাসনিক ভবনের সভাকক্ষে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সভা শেষে ব্রিফিংয়ে এ দাবি জানায় শিক্ষক সমিতি। এছাড়া একজন যোগ্য উপাচার্য নিয়োগ দেওয়ার জন্যও সরকারের কাছে দাবি জানায় শিক্ষক সমিতি। তারা এসব দাবিতে আজ (বৃহস্পতিবার) বেলা ১১টায় ক্যাম্পাসে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেছে শিক্ষক সমিতি।
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোঃ ফারুক হোসেন শিক্ষক সমিতির পক্ষে জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি-বিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল না থাকা, ছাত্র-শিক্ষকদের দাবির প্রতি অবজ্ঞা এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবকের দায়িত্বে থেকে দাযীত্বশীল ভূমিকা পালন না করায় বর্তমান উপাচার্যের প্রতি অনাস্থা জানিয়েছেন শিক্ষকরা। এজন্য তাকে দ্রুত পদত্যাগ করতে হবে।
সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোঃ ফারুক হোসেন বলেন, ‘শিক্ষকদের ওপর হামলাকারী শিক্ষার্থীদের শাস্তির দাবিতে তারা ৪ মে থেকে ক্লাস বর্জন ও ১৮ মে থেকে প্রশাসনিক কাজ বর্জন করে আসছেন। কিন্তু তারপরও উপাচার্য তাদের দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ নেয়নি। এর মাধ্যমে উপাচার্য কুয়েটের স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রমের প্রক্রিয়া আটকে রেখেছেন। ক্যাম্পাসে সংকটময় পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, উপাচার্য দাপ্তরিক কাজের কথা বলে ১৯ মে ঢাকায় যান। শিক্ষকদের বলেছিলেন, পরদিন ফিরে আসবেন। কিন্তু এখনো তিনি ক্যাম্পাসে ফিরে আসেননি। তিনি কুয়েটের যে গাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন তা ফেরত পাঠিয়েছেন। তিন দিন ধরে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অবস্থান কর্মসূচি পালন করলেও কর্তপাত করেননি। তিনি সবার দাবির প্রতি অবজ্ঞা দেখিয়েছেন। উপাচার্য তার অনুপস্থিতিতে যাকে রুটিন ওয়ার্ক করার জন্য দায়িত্ব দিয়েছিলেন তিনি বুধবার দায়িত্ব পালন করতে পারবেন না বলে লিখিত ভাবে তাকে জানিয়ে দিয়েছেন।বর্তমানে কুয়েট অভিভাবক শূন্য। এ অবস্থায় পূর্ণাঙ্গ উপাচার্য নিয়োগ দিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষকরা বলেন, দাবি আদায়ের জন্য শিক্ষকদের রাস্তায় নামতে হবে, এটা খুবই দুঃখজনক। এর আগে দুপুর ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত শিক্ষকরা উপাচার্যের কক্ষ ও প্রশাসনিক ভবন চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন। শিক্ষার্থীদের এক গ্র“প এসে তাদের দাবির প্রতি একাত্মতা প্রকাশ করেন। তবে গত ৩ মাস ধরে আন্দোলন করা শিক্ষার্থীদের অপর গ্র“প আপাতত চুপচাপ রয়েছে। তারা কী করবে তা বুঝে উঠতে পারছে না।  
এরআগে, গত ১৮ ফেব্র“য়ারি কুয়েটে সংঘর্ষের ঘটনায় ২৫ ফেব্র“য়ারি বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে অচলাবস্থা চলছে। পরে শিক্ষার্থীদের এক দফা আন্দোলন ও আমরণ অনশনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৫ এপ্রিল উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে অপসারণ করে সরকার। গত ১ মে অন্তর্র্বতী উপাচার্য হিসেবে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ হযরত আলীকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ৪ মে থেকে ক্লাস শুরুর কথা থাকলেও এ্যাকাডেমিক কার্যক্রমে ফেরেননি শিক্ষকরা। ছাত্রদের হাতে শিক্ষক লাঞ্ছিতের বিচার না পাওয়া পর্যন্ত ক্লাসে ফিরবেন না বলে জানিয়েছে কুয়েট শিক্ষক সমিতি।
প্রসঙ্গত, ১৮ ফেব্র“য়ারি সংঘর্ষের পর থেকে কুয়েটে বন্ধ রয়েছে ক্লাস ও পরীক্ষা। এর ফলে বিপাকে পড়েছেন সাড়ে ৭ হাজার শিক্ষার্থী। এখনও শুরু হয়নি নতুন ব্যাচের ক্লাস।

্রিন্ট

আরও সংবদ