খুলনা | রবিবার | ২৫ মে ২০২৫ | ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সংকট ঘনীভূত, জাতীয় সরকার গঠনে দৌড়-ঝাঁপ!

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ক্রমেই দূরত্ব বাড়ছে ড. ইউনূসের

খবর প্রতিবেদন |
০১:২৬ এ.এম | ২৪ মে ২০২৫


অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর ক্রমেই দূরত্ব বাড়ছে। তবে এনসিপির সঙ্গে সম্পর্কের কমতি নেই। সকাল-বিকেল দেখা হচ্ছে। দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, গত চারদিন একটানা চেষ্টা করেও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে বিএনপি সাক্ষাৎ পেতে ব্যর্থ হয়েছে। জামায়াতে ইসলামীর তরফেও বারবার সর্বদলীয় বৈঠক আহŸানের তাগিদ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু কোনো অনুরোধেই তিনি সাড়া দেননি।  
ওদিকে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে দূরত্ব কমছে। ইতোমধ্যেই দু’দফা বৈঠকের খবর রয়েছে। ‘২০২৬-এর ফেব্র“য়ারির মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের ব্যাপারে দু’দলের মধ্যে কথাবার্তা চলছে। 
নির্ভরযোগ্য সূত্রগুলো বলছে, প্রফেসর ইউনূসকে ঘিরে রেখেছে একটি অশুভ চক্র। এই চক্রে রয়েছে সাতজন। ভেতরে চার, বাইরে তিন। এই চক্রটি চায়না নির্বাচনের দিকে দেশ এগিয়ে যাক। তাদের মতলব অন্য। তারা প্রফেসর ইউনূসকে জনবিচ্ছিন্ন করতে চায়। সর্বশেষ খবরে জানা যায়, সংকট ঘনীভূত হচ্ছে। আর এই সংকট উত্তরণে কোনো উদ্যোগ নেই বরং উল্লেখিত চক্রটি  নানা খেলায় মত্ত রয়েছে। তারাই বলছে, প্রফেসর ইউনূস পদত্যাগ করতে যাচ্ছেন। আমরা তাকে পদত্যাগ থেকে বিরত রেখেছি। তারাই এখন জরুরি অবস্থা জারি হচ্ছে এমন খবর রটাচ্ছে। বাস্তবের সঙ্গে এর কোনো মিল নেই।  
বৃহস্পতিবার প্রফেসর ইউনূসের সঙ্গে ঐকমত্য কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান ড. আলী রীয়াজের বৈঠক হয়েছে। ঠিক কী বিষয়ে আলোচনা হয়েছে তা এখন পর্যন্ত জানা সম্ভব হয়নি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, সেনাপ্রধানের বক্তব্য এবং সর্বশেষ রাজনৈতিক পরিস্থিতি তারা পর্যালোচনা করেছেন। এছাড়া ওইদিনই অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। প্রায় চার ঘণ্টা চলে এই বৈঠক। এতে প্রধান উপদেষ্টা কতিপয় উপদেষ্টার ভূমিকায় হতাশা ব্যক্ত করেন।  
রাজনৈতিক পণ্ডিতরা বলছেন, প্রফেসর ইউনূস পদত্যাগ করলেই সব সংকটের সমাধান হয়ে যাবে এটা মনে করার কারণ নেই। বরং সংকট আরো তীব্র হবে। প্রফেসর ইউনূস যদি সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত না নেন, তাহলে খেলা তার হাতছাড়া হয়ে যেতে পারে। ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে বিপ্লবের মূল চেতনা।
অসমর্থিত সূত্রে জানা গেছে, পরিস্থিতি মোকাবিলায় একটি জাতীয় সরকার গঠনের দৌড়-ঝাঁপ শুরু হয়েছে।  
প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণ- অভ্যুত্থানে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে যান। পরে ৮ আগস্ট নোবেল জয়ী অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে প্রধান উপদেষ্টা করে অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকার গঠিত হয়। এরপর থেকে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে দুষ্কৃতকারীরা একের পর এক ষড়যন্ত্র করতে থাকে। 
গত কয়েকদিন ধরে দেশের রাজনীতিতে উত্তাপ বইছে। গুঞ্জন শোনা যাচ্ছে যে কোনো সময় সামরিক শাসন জারি হতে পারে। পদত্যাগ করতে পারেন অধ্যাপক ইউনূস।
প্রধান উপদেষ্টার পদত্যাগের গুঞ্জন গত দু’দিনে জোরালো ছিল। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বৃহস্পতিবার রাতে ড. ইউনূসের সঙ্গে দেখা করার পর জানান, ‘স্যার বলছেন, আমি যদি কাজ করতে না পারি, যে জায়গা থেকে তোমরা আমাকে আনছিলে একটা গণ–অভ্যুত্থানের পর। দেশের পরিবর্তন, সংস্কার। কিন্তু যেই পরিস্থিতি যেভাবে আন্দোলন বা যেভাবে আমাকে জিম্মি করা হচ্ছে। আমি তো এভাবে কাজ করতে পারব না।’
তবে শুক্রবার দুপুরে প্রধান উপদেষ্টার আইসিটি বিষয়ক বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব নিজের ফেসবুক পেজে এক পোস্টে জানান, অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস পদত্যাগ করবেন না। তার ক্ষমতা প্রয়োজন নেই। কিন্তু বাংলাদেশের জন্য ড. ইউনূসের প্রয়োজন আছে। 
সূত্র: মানবজমিন অনলাইন।

্রিন্ট

আরও সংবদ