খুলনা | সোমবার | ২৬ মে ২০২৫ | ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

পাইকগাছার ফুলবাড়ি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির নির্বাচন স্থগিত : সমবায় কর্মকর্তা লাঞ্ছিত

পাইকগাছা প্রতিনিধি |
০২:০১ এ.এম | ২৫ মে ২০২৫


পাইকগাছার দেলুটির ফুলবাড়ি বাজার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির নির্বাচনে লাঞ্ছিত হয়েছেন উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির। শনিবার সকালে ভুল ব্যালটে নির্বাচনের কারণে অনাকাক্সিক্ষত এ ঘটনা ঘটে। ১১৩ জন ভোটার ভোট দেওয়ার পর ব্যালটে ভুল প্রতীকের বিষয়টি নজরে আসে সবার। পরে প্রার্থী ও তাদের কর্মী সমর্থকদের তোপের মুখে পড়েন নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ কর্মী সমর্থকরা উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা কে লাঞ্ছিত করে অবরুদ্ধ করে ফেললে আত্মরক্ষার্থে কর্মকর্তারা সমিতির বাথরুমে আশ্রয় নেয়। পরে ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে কর্মকর্তারদের দায়িত্বহীনতার ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় প্রার্থীরা। 
উলে­খ্য উপজেলার ঐতিহ্যবাহী সফল সমবায় সমিতির মধ্যে ফুলবাড়ি বাজার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি অন্যতম। উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নে ফুলবাড়ি বাজারে সমিতির কার্যালয় এবং কার্যক্রম পরিচালিত হলেও পাইকগাছা, বটিয়াঘাটা, দাকোপ ও ডুমুরিয়াসহ ৪টি উপজেলার দুই হাজারেরও বেশি সক্রিয় সদস্য রয়েছে অত্র সমিতিতে। সফল এবং সেরা সমবায় সমিতির মধ্যে এটি অন্যতম। এজন্য ফুলবাড়ি বাজার ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি সকলের কাছে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। 
শনিবার ছিল সমিতির ব্যবস্থাপনা পরিষদের ত্রি-বার্ষিক নির্বাচন। নির্বাচনে সভাপতি-সম্পাদকসহ ৬টি পদের বিপরীতে মোট ১৫ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করেন। পূর্ব নির্ধারিত সময় অনুযায়ী সকাল ১০টায় ভোট কার্যক্রম শুরু করা হয়। শুরু থেকেই স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে ভোটাররা ভোট দিতে থাকে। ঘন্টা দুয়েক পর ১১৩ জন ভোটার ভোট প্রদান করার পর চন্দন নামে এক সদস্য প্রার্থীর ব্যালটে তার নির্ধারিত প্রতীক না থাকায়  হৈচৈ পড়ে যায়। ওই প্রার্থীর এক সমর্থক ভোট দিয়ে বেরিয়ে এসে অবহিত করলে বিষয়টি সবার নজরে আসে। সদস্য পদে মোট ৮ জন প্রার্থী প্রতিদ্ব›িদ্বতা করে। যার মধ্যে চন্দন কান্তি সরদার একজন। চন্দনের নির্ধারিত প্রতীক টেবিল ফ্যান। অথচ ব্যালটে তার প্রতীক ছাপা হয়েছে টেলিফোন। বিষয় টি নিয়ে তুমুল হট্টগোল শুরু হলে নির্বাচন বন্ধ হয়ে যায়। এ সময় উত্তেজিত প্রার্থী ও কর্মী সমর্থকদের তোপের মুখে পড়েন নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। উদ্ভুত পরিস্থিতি সামাল দিতে হিমশিম খায় কর্মকর্তারা। এক পর্যায়ে বিক্ষুব্ধ কর্মী সমর্থকরা উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির কে লাঞ্ছিত করে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়ায় সাধারণ সদস্যদের তোপের মুখে আত্মরক্ষার্থে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তাসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা সমিতির বাথরুমে গিয়ে আশ্রয় নেয়। এসময় সমিতির কার্যালয়ের মধ্যে উপস্থিত উত্তেজিত কর্মী সমর্থকরা মারপিটে জড়িয়ে পড়ে। পরে স্থানীয় ভারপ্রাপ্ত ইউপি চেয়ারম্যান সুকুমার কবিরাজসহ অনেকেই ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি সামাল দেন। শেষ মেষ প্রার্থী ও কর্মী সমর্থকদের কাছে অনিচ্ছাকৃত  ভুলের জন্য ক্ষমা চেয়ে নির্বাচন স্থগিত ঘোষণা করে সমিতি ত্যাগ করেন উপজেলা সমবায় কর্মকর্তাসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা। এসময় থানা এবং ক্যাম্প পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিল। এদিকে উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা এ ধরনের ভুলের দায় এড়াতে পারে না এবং এ ভুলের জন্য সকল প্রার্থীরা আর্থিকসহ সামগ্রিক ভাবে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। ব্যালটের ভুলের কারণে নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে এবং পরবর্তী দ্রুত সময়ের মধ্যে পুনরায় তফসিল ঘোষণা করে নির্বাচন সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছেন উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা হুমায়ূন কবির। 

্রিন্ট

আরও সংবদ