খুলনা | সোমবার | ২৬ মে ২০২৫ | ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

আগামী বছরের ৩০ জুনের পর দায়িত্বে থাকবেন না ড. ইউনূস

‘আ’লীগকে নিষিদ্ধ করার পর আরেকটা যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে’

খবর প্রতিবেদন |
০১:২১ এ.এম | ২৬ মে ২০২৫


আগামী বছরের ৩০ জুনের পর আর একদিনও প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে দায়িত্ব পালন করতে চান না ড. ইউনূস বলে জানিয়েছেন তার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। রোববার সন্ধ্যায় রাজধানীর যমুনা সরকারি বাসভবনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে দ্বিতীয় দিনের  বৈঠক শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
প্রেস সচিব বলেন, প্রধান উপদেষ্টা স্পষ্ট করেছেন, ৩০ জুনের পর তিনি আর ক্ষমতায় থাকবেন না।
সব রাজনৈতিক দল এই সময়সীমার মধ্যে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের বিষয়ে একমত পোষণ করেছে বলে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, পার্টির লিডাররা প্রফেসর ইউনূসকে সমর্থন জানিয়েছেন। আমরা যে সংস্কার করছি, আমরা যে বিচার কাজ শুরু করেছি, নির্বাচনের কার্যক্রম শুরু করেছি, সেটাতে তারা সম্পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছেন।
এদিনের বৈঠকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, আমার বাংলাদেশ (এবি) পার্টি, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম, খেলাফত মজলিস, গণ অধিকার পরিষদ, নেজামে ইসলামী পার্টি ও হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ নেতারা অংশ নেন। তারা সংস্কার, নির্বাচন ও স্বৈরতন্ত্রের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের করণীয় নিয়ে পরামর্শ দেন।
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব আরও বলেন, “সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠকের পরে সরকার তার অবস্থান স্পষ্ট করবে।” তিনি জানান, সরকার সর্বদলীয় ঐক্যের বিষয়ে রাজনৈতিক দলের বক্তব্য শুনে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।
প্রধান উপদেষ্টাকে উদ্ধৃত করে প্রেস সচিব বলেন, ‘তিনি বলেছেন যে, আমরা বড় যুদ্ধাবস্থার ভেতরে আছি। আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ হওয়ার পরে ডিস্টাবিলাইজ করার জন্য যত রকম ভাবে পারে চেষ্টা করছে। এটা থেকে আমাদের রক্ষা করতে হবে’।
তিনি বলেন, তারা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না। বিভাজন থেকে আমাদের উদ্ধার পেতে হবে। ঐকমত্য থাকতে হবে। আত্মমর্যাদাপূর্ণ জাতি হিসেবে আমরা যতটুকু দাঁড়াতে পেরেছি, এটা যেন সামনের দিকে যায়।
শফিকুল আলম বলেন, সবাই একসঙ্গে বসাতে তিনি বলেছেন যে তিনি মনে সাহস পেয়েছেন। প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন করতে না পারলে আমি অপরাধী অনুভব করব। মহাসুযোগ পেয়েছি অভ্যুত্থানের কারণে ধ্বংস হয়ে যাওয়া দেশকে টেনে আনার। আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার সঙ্গে সঙ্গে আরেকটা যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে দেশের ভেতরে ও বাইরে; যাতে আমরা এগোতে না পারি। যাতে সবকিছু কলাপস হয়ে যায়। আবার যাতে গোলামিতে ফেরত যাই।’ 
‘প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেছেন, যারা এই কনসপারেসি করছে, তাদের ইন্টেনশন হচ্ছে আমরা যেন আবার গোলামিতে ফেরত যাই। আমি যতদিন আছি দেশের কোনো অনিষ্ট হবে এমন কোনো কাজ হবে না নিশ্চিত থাকেন।’ 
নির্বাচন প্রসঙ্গে প্রেস সচিব আরও বলেন, ‘প্রধান উপদেষ্টা বারবার বলেছেন যে জুন ৩০ এর পর নির্বাচন যাবে না। জুন মাসের ৩০ তারিখ পর্যন্ত এর মধ্যে নির্বাচন। যখন সময় আসবে তিনি রোডম্যাপ বা শিডিউল ঘোষণা করবেন। প্রফেসর ইউনূস জানিয়েছেন তিনি জুন মাসের ৩০ তারিখের পর একদিনও থাকবেন না।
এক প্রশ্নের জবাবে শফিকুল আলম বলেন, ‘আমাদের সরকারের তিনটা কাজ। একটা সংস্কার, আরেকটা বিচার, আরেকটা নির্বাচন। আমরা যখন পূর্ণ সংস্কার করতে পারব, দেখবেন ইলেকশনের বিষয়েও আমরা মানুষের আস্থা পাব।’
এর আগে শনিবার সন্ধ্যায় বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপির প্রতিনিধিদের সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠক শেষে তিনি জানান, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে এবং এই সময়সীমার বাইরে যাবে না।

্রিন্ট

আরও সংবদ