খুলনা | সোমবার | ২৬ মে ২০২৫ | ১২ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

২০২৬ সালের ৩০ জুনের পর এক ঘণ্টাও থাকবেন না ড. ইউনূস

প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে যা বললো ইসলামী দলগুলো

খবর প্রতিবেদন |
০১:২৪ এ.এম | ২৬ মে ২০২৫


ড. মুহাম্মদ ইউনূস ২০২৬ সালের ৩০ জুনের পর এক ঘণ্টাও উনি ক্ষমতায় থাকবেন না বলে আশ্বস্ত করেছেন বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমীর মামুনুল হক। রোববার প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ পরবর্তী সংবাদ সম্মেলনে এই কথা জানান তিনি।
এ সময় মামুনুল হক বলেন, প্রধান উপদেষ্টা আমাদের আশ্বস্ত করেছেন আমরা সকলে যদি উনাকে সহযোগিতা করি তাহলে উনি দেশ ও জাতিকে একটা গন্তব্যে পৌঁছে দিয়ে উনার দায়িত্ব শেষ করবেন। পাশাপাশি দেশ ও আন্তর্জাতিক মহলের সকলের কাছে তিনি একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন উপহার দিতে চান। উনি আমাদেরকে কঠিনভাবে ব্যক্ত করেছেন ২০২৬ সালের ৩০ জুনের পর এক ঘণ্টাও উনি ক্ষমতায় থাকবেন না এর আগেই তিনি নির্বাচন শেষ করবেন। আমাদের পক্ষ থেকে আমরা তিনটি বিষয় গুরুত্বের সঙ্গে উপস্থাপন করেছি, প্রথমত আমরা বলেছি সংস্কারের বিষয়ে সরকারের পক্ষ থেকে আমরা এখনো কাক্সিক্ষত কোন লক্ষণ দেখতে পাইনি। এরকম অনিশ্চিত লক্ষ্যের দিকে হাঁটা ঠিক নয়। তাই উনাকে আমরা বলেছি সুনির্দিষ্ট ভাবে নির্দিষ্ট করুন যে কোন লক্ষণ সংস্কারগুলো আপনারা করছেন।
দ্বিতীয়ত আমরা বলেছি, শাপলা চত্বর থেকে শুরু করে জুলাই বিপ্লব পর্যন্ত যত হত্যাকাণ্ড হয়েছে সেখানে হাসিনাসহ তার প্রধান সহযোগীদের বিচার কার্যক্রম দৃশ্যমানভাবে অগ্রগতি হয় আমরা বলেছি উনিও আমাদের এ বিষয়ে আশ্বস্ত করেছেন। অতি দ্রুত আমরা এ বিষয়ে একটু সুসংবাদ পাব। আমরা আশা করছি অতি দ্রুত কার্যক্রমের ভেতর দুই একটা হলেও বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন হবে বা মানুষের সামনে দৃশ্যমান হবে।
করিডরের বিষয়ে উনি বলেছেন, দেশবিরোধী কোনো কার্যক্রম তার দ্বারা সংঘটিত হবে না উনি এ বিষয়ে তার ওপর বিশ্বাস রাখতে বলেছেন। যদি এমন কিছু হয়ে থাকে তাহলে সকল রাজনৈতিক দলের সাথে আলাপ-আলোচনা করেই তা করা হবে। পাশাপাশি আমরা এটাও বলেছি যে, একটা অনৈক্যের সৃষ্টি হয়েছে সেটা দূর করতে প্রধান উপদেষ্টা যেন রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ঘন ঘন আলোচনা করেন। এ বিষয়ে উনি আমাদের আশ্বস্ত করেছেন। আমরা মে মাসের পেয়ারমসচির মাধ্যমে একটি দুই মাসের আল্টিমেটাম দিয়েছিলাম শাপলা চত্বরের গণহত্যার বিষয়, এ বিষয়টা প্রধান উপদেষ্টা নিজের দায়িত্ব নিয়েছেন আশ্বস্ত করেছেন এ বিষয়ে উনি একটা বিহিত করে দেবেন।
নারী সংস্কার কমিশনের বিষয়েও আমরা আমাদের উদ্বেগের কথা জানিয়েছি। এ ব্যাপারে আমরা এখন পর্যন্ত আশ্বস্ত যে বিতর্কিত কোন ইসলামী আইন তারা বাংলাদেশে কার্যকর করবে না।
জমিয়তে ওলামায়ে ইসলামের মহাসচিব মনজুরুল ইসলাম আফেন্দী বলেন, আমরা প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নির্বাচন বিষয়ক খোলামেলা কথা বলেছে। প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি অনেক আশা ভরসা নিয়ে যাতে আপনাকে এখানে বসিয়েছে। আপনি সকল চক্রান্ত রুখে দিয়ে একটি জাতীয় নির্বাচন আয়োজন করবেন। আপনি কোন রকম ধৈর্য হারা হবে না আমরা সার্বিক সহযোগিতা করার আশ্বস্ত করছি।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি রেজাউল করিম (চরমোনাই পীর) বলেন, আমরা দেশ ও জনগণের প্রয়োজনে আপনাকে নিয়ে এসেছিলাম একটা সুন্দর দেশ গড়ার জন্য। আপনার উপর যে বিভিন্ন রকমের মানসিক নির্যাতন চলছে তা আমরা অনুভব করছি। আপনাকে যে সহজ ভাবে কাজ করতে দেওয়া হচ্ছে না তাও বুঝতে পারছে। আমরা উনাকে বলেছি আপনি যদি পরাজিত হন তাহলে আমরাও পরাজিত হবে। তবে মাঝপথে আপনি আমাদের ছেড়ে চলে যাবেন এটা কোনো ভাবেই হতে পারে না এটা আপনি মাথায় আনবেন না।
পাশাপাশি আমরা আমাদের পক্ষ থেকে বলেছি, যদি প্রয়োজনীয় সংস্থার না হয় তাহলে যে সামনে যে জাতীয় নির্বাচন হবে সেখানে কালো টাকাসহ বেশি শক্তির কারণে নির্বাচনটা প্রভাবিত হবে। ফলে আগের যে কলঙ্কিত নির্বাচনের ইতিহাস সেটা ফিরে আসবে। এটা পুনরায় হোক তা আমরা চাই না। যে কারণে আমরা বলছি সংস্কার হোক। আমরা বলেছি যদি স্থানীয় নির্বাচন আগে হয় সেখানে যেন কালো টাকা এবং পেশি শক্তির প্রভাব না থাকে সেই বিষয়ে আপনারা দৃষ্টি রাখেন।
হেফাজতে ইসলামের মহাসচিব সাজিদুর রহমান বলেন, আমাদের পক্ষ থেকে দিকনির্দেশনা ছিল আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকলে ফ্যাসিবাদ আমাদের কিছুই করতে পারবে না। দ্বিতীয় কথা হচ্ছে বিপদ আসলে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হয় ধৈর্য ধরতে হয়। পাশাপাশি আমরা অবাক হয়েছি যে স্বৈরাচার সরকার হেফাজতের আন্দোলনের সময় হেফাজতের উপর হামলা করে তাদের নামেই মামলা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গত নয় মাসেও এসব মামলা প্রত্যাহার হয়নি। তাই আমরা প্রধান উপদেষ্টা কে বলেছে আগামী ছয় মাসের মধ্যে যেন এই মামলা গুলো প্রত্যাহার করা হয়। পাশাপাশি আমরা প্রধান উপদেষ্টা কে বলেছি কোরআন সুন্নাহর বাইরে কোন প্রস্তাবনা বাংলাদেশে পাশ হবে না।
নারী সংস্কার কমিশন থেকেও নারীদের বিষয়ে যে দাবি জানানো হয়েছে তার পক্ষে লোক সংখ্যা অনেক কম হবে কিন্তু এর বিপরীতে বাংলাদেশের সাধারণ নারীর সংখ্যা অনেক বেশি। তাদের বিষয়টিও নারী সংস্কার কমিশনের বিবেচনায় আনতে হবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ