খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২৯ মে ২০২৫ | ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

যশোরে তিন বেসরকারি হাসপাতালে ভ্রাম্যমাণ আদালতের জরিমানা

নিজস্ব প্রতিবেদক, যশোর |
১২:৩০ এ.এম | ২৮ মে ২০২৫


যশোরের পপুলার মেডিকেল সার্ভিসেস, দেশ ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও আরিয়ান ডায়াগনস্টিক সেন্টারে অভিযান চালিয়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। মঙ্গলবার দুপুরে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাহির দায়ান আমিনের নেতৃত্বে একটি টিম এ অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় ওই তিন প্রতিষ্ঠানে নানা অসঙ্গতি ও অনিয়মের কারণে এক লাখ ১৫ হাজার টাকা জরিমানা করে তা আদায় করা হয়।
সূত্র জানায়, এদিন দুপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালত শহরের ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের পপুলার মেডিকেল সার্ভিসেস এ্যান্ড হসপিটালে যান। সেখানে গিয়ে দেখতে পান, চাকচিক্যপূর্ণ এক্সরে রুম, অথচ সেখানে যশোর এম এম কলেজের সমাজবিজ্ঞানের ছাত্র এক্সরে করছে। এ সংক্রান্ত তার কোনো সনদ না থাকলেও তিনি এ পেশায় নিয়মিত কাজ করছেন। শুধু তাই নয়, দু’জন মহিলা ল্যাব টেকনিশিয়ান কর্মরত রয়েছেন, তাদেরও কোনো সনদ নেই। ভ্রাম্যমাণ আদালতের এ সংক্রান্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে তারা ব্যর্থ হন। এর বাইরেও কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োগে নানা অনিয়মের বিষয় উঠে আসে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কাছে। প্রতিষ্ঠানটি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকলেও বড় ধরনের অসঙ্গতি উঠে আসে। এসব অপরাধে প্রতিষ্ঠান মালিকদের একজন হাসিবুর রহমানের কাছ থেকে ৪০ হাজার টাকা জরিমানা করে তা আদায় করা হয়। পরে ওই টিম যান যশোর জেনারেল হাসপাতালের ২য় গেটের সামনে দেশ ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। সেখানে গিয়ে দেখা যায় ক্লিনিকটির আরও খারাপ অবস্থা। রিসিপশনিস্ট নেই, তিনি রয়েছেন রেস্টে। একই ভাবে নেই ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার ও নার্সও। কিছু সময় পর হুড়মুড় করে কেউ কেউ চলে আসেন প্রতিষ্ঠানে। খাতা-কলমে ছয়জন নার্স থাকলেও একজনও নেই সেখানে। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালতের টিম অপারেশন থিয়েটার পরিদর্শন করে দেখতে পান জরাজীর্ণ অবস্থা। অপারেশনে ব্যবহৃত সরঞ্জামগুলোর হাল বেহাল। মানা হচ্ছে না কোন নিয়মনীতি। নেই বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। একই রকম অবস্থা দেখা যায় প্যাথলজি ও স্যাম্পল রুমেও। এছাড়া প্রতিষ্ঠানের ওয়ার্ডগুলো দেখা যায় গুমোট প্রকৃতির। সেখানে রয়েছে অক্সিজেনের মারাত্মক ঘাটতি। দেখা যায়, একপাশে রয়েছে ময়লা আবর্জনার স্তূপ, অপর পাশে শুয়ে আছে নবজাতক মা ও শিশু। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নেই বললেই চলে। নেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র। বাধ্যতামূলক ভাবে থাকতে হবে এমন কাগজপত্রও দেখাতে ব্যর্থ হয় প্রতিষ্ঠানের মালিক রাজু আহম্মেদ। এসব কারণে ভ্রাম্যমাণ আদালত প্রতিষ্ঠান মালিকের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।
এর আগে, ওই টিম যায় যশোর শহরের নওয়াপাড়া রোডের আরিয়ান ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। সেখানে গিয়ে দেখা যায়, প্রতিষ্ঠান শুরুর আগেই কার্যক্রম পরিচালনা করা হচ্ছে। তাদের নেই কোনো অনুমোদন, অথচ রোগীর আসা-যাওয়া চলছে দেদারসে। এ সময় সতর্ক করে প্রতিষ্ঠান মালিক আনিচুর রহমানের কাছ থেকে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
ভ্রাম্যমাণ আদালতে আরও উপস্থিত ছিলেন এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট রেজওয়ান সরদার, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট মাকামে মাহমুদা মীম, এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ডারিয়া নওশিন লুবনা ও যশোর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার রওশন আরা লিজাসহ থানা পুলিশের সদস্যরা।

 

্রিন্ট

আরও সংবদ