খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২৯ মে ২০২৫ | ১৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

দেশের পুঁজিবাজারে সংকট চলমান রয়েছে : সিপিডি

জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ দেওয়ার সময় এসেছে

খবর প্রতিবেদন |
০১:২৬ এ.এম | ২৮ মে ২০২৫


অন্তর্র্বর্তী সরকারের নয় মাস, এখন নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ ঘোষণার সময় এসেছে বলে মন্তব্য করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অনিশ্চয়তা কাটানোর জন্য এটি প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। দেশের পুঁজিবাজারে সংকট চলমান রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন ফাহমিদা খাতুন।
মঙ্গলবার জাতীয় বাজেট সামেন রেখে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতির ওপর সিপিডির প্রতিবেদন উপস্থাপনের পর এক প্রশ্নের উত্তরে ফাহমিদা খাতুন এমন মত দেন। রাজধানীর ধানমন্ডিতে সিপিডির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ‘২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি’ শিরোনামে সংস্থার পর্যালোচনা উপস্থাপন করেন তিনি।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করে ফাহমিদা খাতুন বলেন, বিভিন্ন সময়ে অবহেলা ও বাজার কারসাজির কারণে এখানে বিনিয়োগকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। সেই সংকট চলমান রয়েছে। গত ১৬ বছরের পুঁজিবাজারে এর যে প্রকৃত মূল্য, তা ৩৭ দশমিক ৬ শতাংশ কমেছে। অন্তর্র্বর্তীকালীন সরকারের সময় বিভিন্ন খাতে সংস্কার করা হচ্ছে। পুঁজিবাজার সংস্কারে একটা টাস্কফোর্স করা হয়েছে। কিন্তু সেখানে খুব একটা অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।
তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজারে ৫টি চ্যালেঞ্জ আছে, তার মধ্যে রয়েছে-নিম্নমানের আইপিও, আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম, বিও এ্যাকাউন্টে স্বচ্ছতার অভাব, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের প্রশ্নবিদ্ধ আচরণ ও সেকেন্ডারি মার্কেটে কারসাজি। এই গুলোর উন্নতি করতে হবে। গত ৯ মাসে ডিএসইতে বিভিন্ন সূচকের ওঠানামা দেখতে পাচ্ছি। ধারাবাহিক ভাবে ডিএসই সূচক নিম্নমুখী থেকেছে। খুব দ্রুত তা ৬ হাজার পয়েন্ট অতিক্রম করেছে। অভ্যন্তরীণ লেনদেনে কারসাজি অব্যাহত রয়েছে। ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
সিপিডির নির্বাহী পরিচালক বলেন, দুর্বল নজরদারি, প্রযুক্তি ব্যবহার না করা, অপরাধ যারা করছে তাদের শাস্তির আওতায় না আনাসহ নানান কারণে পুঁজিবাজার শক্তিশালী হচ্ছে না।
ব্যাংকিং খাতে সুশাসন আনতে বাংলাদেশ ব্যাংকের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা ও বেসকারি ব্যাংকের পরিচালনা বোর্ডের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন ফাহমিদা খাতুন।
ফাহমিদা খাতুন বলেন, সরকার ২০২৫ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৬ সালের জুন মাসের মধ্যে নির্বাচনের কথা বলছে। এক্ষেত্রে যে বড় অনিশ্চয়তা আছে তাও নয়। তারপরও সুনির্দিষ্ট দিনক্ষণ ঠিক করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, অন্তর্র্বর্তী সরকার বেশ কিছু সংস্কার কার্যক্রমে হাত দিলেও সমন্বিতভাবে তা পরিচালিত হচ্ছে না। এমনকি সংস্কার কার্যক্রমেও বাধা আসছে।
সিপিডির সম্মাননীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, শুধু সংস্কার কার্যক্রম সম্পন্ন না হওয়ার কারণে বিনিয়োগে ধীরগতি দেখা যাচ্ছে-এমন ধারণা ঠিক নয়। জ্বালানি সংকট, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা বাড়াতে না পারা এবং স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে না পারাও বড় কারণ।
তিনি বলেন, সা¤প্রতিক সময়ে দেশের মানুষ উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে ব্যাপক চাপের মধ্যে আছেন। সরকারের কিছু উদ্যোগ মূল্যস্ফীতি খানিকটা কমালেও তা এখনও সহনীয় পর্যায়ে নামেনি।
সিপিডির প্রতিবেদনে বলা হয়, নতুন অর্থবছরে প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালীকরণ, পরিচালন কাঠামোর উন্নতি এবং নীতি বাস্তবায়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করার দিকে সরকারের দৃষ্টি দেওয়া উচিত। শুধুমাত্র দৃশ্যমান এবং সাহসী সংস্কারই আগামী বছরগুলোতে অর্থনীতিকে টেকসই করতে পারে, বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারে এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে পারে।
মিডিয়া ব্রিফিংয়ে সিপিডির সম্মানীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান, গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

্রিন্ট

আরও সংবদ