খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২৯ মে ২০২৫ | ১৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ২৩ বাংলাভাষী নাগরিককে পুশইন করেছে বিএসএফ

নিজস্ব প্রতিবেদক, সাতক্ষীরা |
০২:০৯ এ.এম | ২৮ মে ২০২৫


সাতক্ষীরা সদর উপজেলার কুশখালী সীমান্ত দিয়ে নারী ও শিশুসহ ২৩ বাংলাভাষী নাগরিককে বাংলাদেশে পুশইন করেছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ। মঙ্গলবার ভোর রাতে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের বসিরহাট মুহাকমার স্বরূপনগর থানার খলিশা ও সাতক্ষীরার কুশখালী সীমান্ত দিয়ে তাদেরকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হয়। আটকদেরকে সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। পরে তাদের আত্মীয় স্বজনদের কাছে তুলে দেওয়া হবে।
বিজিবি ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, মঙ্গলবার ভোর রাত ৫টার দিকে বিএসএফ কৈজুরী ক্যাম্পের জওয়ানরা ভারতের খলিশা ও সাতক্ষীরার কুশখালী সীমান্ত দিয়ে নারী ও শিশুসহ ২৩ বাংলাভাষী নাগরিককে বাংলাদেশে ঠেলে  দেয়। পরে কুশখালী সীমান্তে টহলরত বিজিবি সদস্যরা তাদেরকে আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। সেখান থেকে সকালে তাদেরকে বিজিবি সদর দপ্তরে পাঠানো হয়। আটকদের মধ্যে ৭ জন পুরুষ, ৭ জন নারী ও ৯ জন শিশু রয়েছে। তাদের মধ্যে ২২ জনের বাড়ি কুড়িগ্রাম ও ১ জনের বাড়ি ঝালকাটিতে। বিকেলে তাদেরকে সদর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
আটককৃতরা হলেন, কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী উপজেলার চন্দ্রখানা গ্রামের জাবেদ আলী, জাবেদ আলীর স্ত্রী শিউলী বেগম, জাবেদের পুত্র সুমন হোসেন, নুর আলী ও সজীব, সুমন মিয়ার স্ত্রী খুশি বেগম, নুর আলমের স্ত্রী সম্পা খাতুন, একই জেলার ভুরুঙ্গামারী উপজেলার আঙারিয়া গ্রামের মোজাম্মেল হোসেনের পুত্র মোশাররফ হোসেন, মোশারফ হোসেন স্ত্রী লাইলি বেগম, মোশাররফের কন্যা মোর্শেদা খাতুন ও মিম খাতুন, মোশাররফের পুত্র লুৎফর রহমান লাবিব, একই জেলার মোক্তারকুটি গ্রামের মৃত আবু বকর সিদ্দিকের ছেলে আব্দুল মান্নাফ, আব্দুল মান্নাফের স্ত্রী আনজুয়ারা, কন্যা সুমাইয়া খাতুন, পুত্র আব্দুল­াহ, বড়ভিটা গ্রামের মমিন আলীর পুত্র মজিবর রহমান, মজিবর রহমানের স্ত্রী মোর্শেদা বেগম, চন্দ্রখানা গ্রামের তাজুল ইসলামের স্ত্রী স্বপ্না বেগম, তাজুল ইসলামের কন্যা শাফিরানা, দুলালী ও পুত্র শাকিল এবং ঝালকাঠি জেলার দারকী গ্রামের আব্দুল গফফারের পুত্র আব্দুল কাইয়ুম। 
জাবেদ আলী জানান, তারা হরিয়ানা রাজ্যে ইট ভাটায় কাজ করতেন। পুলিশ তাদেরকে ১৫ মে আটক করে নিয়ে আসে। পরে কুশখালী সীমান্ত এলাকায় একখানে ১০ দিন আটকে রেখে নির্যাতন চালিয়ে তাদেরকে বাংলাদেশে ঠেলে দেয় বিএসএস সদস্যরা। তাদের অনেকেই এখনো সেখানে আছেন।  
কুশখালী বিজিবি’র বিওপি কমান্ডার সুবেদার মেজবাহউদ্দিন জানান, কুশখালী সীমান্ত দিয়ে পুশব্যাককৃত ২৩ জন ব্যক্তিকে আটক করেছে বিজিবি। আটকের পর তাদেরকে সাতক্ষীরাস্থ বিজিবি ৩৩ ব্যাটালিয়নের সদর দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। সাতক্ষীরা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শামিনুল হক জানান, বিজিবি ২৩ জন বাংলাদেশী নাগরিককে সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।  বাংলাদেশী নাগরিক হিসেবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হচ্ছে না। তাদেরকে সাতক্ষীরা সদর থানা পুলিশের হেফাজতে রেখে আত্মীয়-স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হব
প্রসঙ্গত, গত ৯ মে সাতক্ষীরা সুন্দরবনের মধ্যে নদীপথ দিয়ে তিন ভারতীয় নাগরিকসহ ৭৮জনকে পুশ-ইন করে বিএসএফ। তাদেরকে সাতক্ষীরা রেঞ্জের আওতাধীন গহীন সুন্দরবনের মান্দারবাড়ীয়া চর এলাকায় নদী পথ দিয়ে বাংলাদেশে পুশ-ইন করে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফ। পরে পরিচয় যাচাই বাছাই শেষে স্ব-স্ব পরিবারের সদস্যদের কাছে তাদেরকে হস্তান্তর করা হয়।

্রিন্ট

আরও সংবদ