খুলনা | রবিবার | ০১ জুন ২০২৫ | ১৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

মোংলা বন্দরে জাহাজে ডাকাতির মালামাল উদ্ধার গ্রেফতার ৩, রহস্য উদঘাটন : জড়িত চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ নাবিকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০২:০২ এ.এম | ২৯ মে ২০২৫


মোংলা বন্দরে যান্ত্রিক ত্র“টির কারণে অবস্থান করা জাহাজে ডাকাতির ঘটনায় কোস্ট গার্ড অভিযান চালিয়ে ডাকাতি হওয়া মালামাল উদ্ধার করেছে। এ সময় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এ ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটন হয়েছে বলে কোস্ট গার্ড জানায়, নেপথ্যে রয়েছে জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ার, নাবিকসহ স্থানীয় একটি দু®কৃতিদল। বুধবার কোস্ট গার্ডের লেফটেন্যান্ট কমান্ডার অপারেশন কর্মকর্তা আবরার হাসান ও মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
কোস্ট গার্ডের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গত ২৬ মে (সোমবার) মধ্যরাত সাড়ে ৩ টায় মোংলা পোর্ট সংলগ্ন বেইস ক্রিক এলাকায় নোঙররত এমভি সেজুতি নামক বাংলাদেশি একটি জাহাজে ডাকাতির ঘটনা ঘটে। বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড উক্ত ঘটনার সংবাদ পাওয়া মাত্র তাৎক্ষণিক ভাবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করে। পরবর্তীতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গত ২৭ মে কোস্ট গার্ড বেইস মোংলা কর্তৃক একটি বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ডাকাতি হওয়া ইঞ্জিনের বিভিন্ন ধরনের স্পেয়ার পার্টস, ইঞ্জিনের বিভিন্ন সাইজের বিয়ারিং, ব্যাটারি, ব্যাটারি চার্জার ও অন্যান্য জাহাজের গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রাংশ উদ্ধার এবং ডাকাতির সাথে সংশ্লিষ্ট ৩ ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। 
জাহাজের কর্তৃপক্ষ, অফিসার, ক্রু ও আটককৃত ব্যক্তিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, এটি একটি পূর্বপরিকল্পিত সাজানো ডাকাতির ঘটনা। যেখানে জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারসহ অন্যান্য নাবিকবৃন্দ ও স্থানীয় দুষ্কৃতকারীরা প্রত্যক্ষ এবং পরোক্ষভাবে জড়িত। জাহাজের চিফ ইঞ্জিনিয়ারে তত্ত¡াবধানে স্থানীয় দুষ্কৃতকারীদের সঙ্গে মিলে এই ডাকাতির নাটক সাজিয়ে লুটকৃত মালামাল বিক্রির মাধ্যমে অর্থ ভাগাভাগির পরিকল্পনা করে।  দূর্ভাগ্যজনক হলেও এতো বড় ঘটনা সম্পর্কে সহায়তা চেয়ে জাহাজের মালিক পক্ষ ক্যাপ্টেন সাহিকুলকে ঘটনাস্থলে আসার অনুরোধ করা হলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।
আরও জানা যায়, জাহাজের অধিকাংশ নাবিক গত ৬/৭ মাস ধরে সঠিক ভাবে বেতন না পাওয়ার কারণে মালিক পক্ষের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ বিরাজ করছিল। যার কারণে আর্থিক ব্যবস্থার উদ্দেশ্যে ইতিপূর্বেও জাহাজ হতে বিভিন্ন গ্র“প ডাকাতের কাছে মেশিনারিজ পার্টস বিক্রি করা হয়েছিল।   
উদ্ধারকৃত মালামাল জাহাজ কর্তৃপক্ষের নিকট ও গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তরের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
জাহাজের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের এই ঘটনার সাথে জড়িত থাকার বিষয়টিসহ নাবিকদের বেতন ভাতা না দেয়া এবং গত ৬ মাস যাবত জাহাজটিকে এভাবে ফেলে রাখার বিষয়টিও আরো তদন্ত করার অবকাশ রয়েছে। সাজানো এই ডাকাতির ঘটনাটিকে ভিন্ন খাতে পরিচালনা করার উদ্দেশ্যে ভুল তথ্য দিয়ে সংবাদপত্রে বিভ্রান্তিমূলক খবর প্রকাশ করার বিষয়টিও তদন্ত করা প্রয়োজন রয়েছে বলে প্রতীয়মান।  
মিডিয়া কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কমান্ডার হারুন-অর-রশীদ বলেন, বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড দেশের জলসীমায় নিরাপত্তা, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং জানমালের সুরক্ষায় প্রতিশ্র“তিবদ্ধ। ভবিষ্যতে এরূপ কোনো ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটলে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড তা কঠোর ভাবে দমন করবে।
 

্রিন্ট

আরও সংবদ