খুলনা | শুক্রবার | ০৬ জুন ২০২৫ | ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

ব্যবসা ছেড়ে আম চাষে সফল চিতলমারীর মহসিন

এস এস সাগর, চিতলমারী |
০৩:২৬ পি.এম | ০৪ জুন ২০২৫


ব্যবসায় মোটা অংকের মুলধন খাটিয়েছিলো মো. মহসিন শেখ (৩৩)। তরুণ এই উদ্যোক্তা দশ বছর ব্যবসার পিছনে নিরলস সময় ও শ্রম ব্যয় করেছেন। তবুও স্বপ্নের মোবাইল ফোন ব্যবসাটিকে দাঁড় করাতে পারিননি। নানা সংকটের কারণে শেষ পর্যন্ত বাগেরহাটের চিতলমারী সদর বাজারের মোবাইল ফোন ব্যবসাটি বন্ধ করে দেন। কিন্তু এখানেই দমে থাকেনি মহসিন। জীবন ও জীবিকা চালাতে সে কৃষিকে পেশা হিসেবে খুঁজে নেন।

উপজেলার শিবপুর গ্রামের শেখ মুনছুর আলী লিটনের কাছ থেকে সাড়ে ৩ একর চিংড়ি ঘের নগদ জমায় এবং ৩ একর আম বাগান বর্গা নেন। আধুনিক জীবন ধারায় অভ্যস্থ মহসিনের শুরু হয় সংগ্রামী জীবন। তিন বছর আগে শুরু করা মহসিন এখন ব্যবসা ছেড়ে আম চাষে সফল। তাঁর এ আম বাগান ইতোমধ্যে বাগেরহাটের জেলা প্রশাসক আহমেদ কামরুল হাসান, চিতলমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তাপস পাল, উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. সিফাত-আল-মারুফ ও প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ আহমেদ ইকবালসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তাগন পরিদর্শন করেছেন।

মহসিনের বাগানে মোট ১৬০ টি আম গাছ রয়েছে। বাগানে গোপাল ভোগ, গোবিন্দ ভোগ, হিম সাগর, হাড়িভাঙ্গা, থাইরডস্, ফজলি ও লতা জাতের আম আছে। আমের বর্গা ভাগ হিসেবে বাগানের মালিককে ৩ ভাগের ১ ভাগ আম দিতে হয়। বাকি ২ ভাগ মহসিনের। তিনি গাছের পাকা আম ছাড়া কখনো বিক্রি করেন না। উৎপাদিত ফলে কোন প্রকার ক্ষতিকর রাসয়নিক ব্যবহার করেন না। প্রতিকেজি আম বিক্রি করেন ৮০ টাকায়। ফোন দিলে কুরিয়ারে যতেœর সাথে আম সরবরাহ করেন। এ ভাবে আম বিক্রি করে মহসিন বছরে দেড় থেকে দুই লাখ টাকা লাভ করেন। এছাড়া আম বাগানের মধ্যে মহসিন সরিষা, মটরশুটি ও মরিচের চাষ করেন। তা বিক্রি করেও বেশ টাকা উপার্জন করেন। মহসিনের আম বাগানে ও মৎস্য ঘেরে হেদায়েত মোল্লা নামের এক ব্যাক্তি সারা বছর কাজ করেন। সাথে শ্রম দেন মহসিন নিজেই। আম চাষের পাশাপাশি ঘেরে মাছ, ঘেরের পাড়ে সবজি ও ঘেরের মধ্যে জমিতে ধান চাষও করেন মহমিন শেখ। তাইতো তিন বছর আগে ব্যবসা ছেড়ে দিশেহারা মহসিন আজ সফল আম চাষি।

বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার শিবপুর ব্যাপারী পাড়া গ্রামে বাস করা মো. মহসিনের বাবার নাম আব্দুল মজিদ শেখ। মা রেণু বেগম। চার ভাইয়ের মধ্যে মহসিন সকলের ছোট। মহসিন ও তার স্ত্রী মরিয়ম বেগম দুইজনই শিক্ষিত। তাদের একমাত্র সন্তান ফারদিন দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ে।

মো. মহসিন শেখ বলেন, মোবাইল ফোনের ব্যবসা দেড়ে অনেক কষ্টে ছিলাম। এখন আম চাষ ও কৃষি কাজ  করে খুব ভাল আছি। আগামী বছর আরও বেশী আম বিক্রি করতে পারবো। এখানে অনেক মানুষ দেখতে আসেন। আম নিয়ে যান, ফোন দিয়ে কুরিয়ার করতে বলেন।

চিতলমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. সিফাত-আল-মারুফ বলেন, মহসিনের আম বাগানে ডিসি স্যার (জেলা প্রসাশক) ইউএনও স্যারসহ আমরা বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তারা পরিদর্শন করেছি। কৃষি অফিস থেকে তাকে সার্বিক ভাবে পরামর্শ প্রদান করা হচ্ছে।

্রিন্ট

আরও সংবদ