খুলনা | শুক্রবার | ০৬ জুন ২০২৫ | ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

কুষ্টিয়ার সাবেক এমপি কামারুলের ৬ ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি |
০২:০৩ এ.এম | ০৫ জুন ২০২৫


কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর-ভেড়ামারা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামারুল আরেফিনের ছয়টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এসব হিসাবে ১ কোটি ৯৫ লাখ ১৬ হাজার ৬১৪ টাকা রয়েছে। একইসঙ্গে তাকে দেশত্যাগেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত।
বুধবার কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ ছুমিয়া খানম দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে এ আদেশ দেন। এসব তথ্য নিশ্চিত করেন কুষ্টিয়া দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নীল কমল পাল।
আদালত ও দুদক সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়া-২ (মিরপুর- ভেড়ামারা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামারুল আরেফিনের ব্যাংকে বিপুল অর্থ অর্জনের তথ্য পায় দুদক। তার ব্যাংকের টাকা হস্তান্তর বা হাতবদলের সম্ভাবনা রয়েছে। তাই সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তার নামের ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ চেয়ে আবেদন করে দুদক। আদালত শুনানি শেষে এই আবেদন মঞ্জুর করেন এবং তার ব্যাংক হিসাব ফ্রিজের আদেশ দেন।
আরও জানা গেছে, কামারুল আরেফিনের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। কামারুল আরেফিনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের হত্যা ও হত্যাচেষ্টা মামলা রয়েছে। তিনি পলাতক রয়েছেন।
কুষ্টিয়া দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক নীল কমল পাল বলেন, সাবেক সংসদ সদস্য ও মিরপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক কামারুল আরেফিনের ছয়টি ব্যাংক হিসাব ফ্রিজ করার আদেশ দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে কামারুলের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন আদালত। সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তার ব্যাংক হিসাবগুলো অবরুদ্ধ করার আবেদন করা হয়। শুনানি শেষে আদালত এই আবেদন মঞ্জুর করে আদেশ দেন।
প্রসঙ্গত, ছাত্র-জনতার আন্দোলনে গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর কামারুল আরেফিন অবৈধভাবে ভারতে পালিয়ে যান। এরপর তাকে কলকাতার মারকুইস স্ট্রিটের একটি ফার্মেসিতে দেখা গেছে। গত ১৩ অক্টোবর দিবাগত রাত থেকে এমন একটি ভিডিও ও বেশ কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। সে সময় সেজান মাহমুদ নামে কুষ্টিয়ার স্থানীয় এক যুবক বেশ কিছু ছবি ভিডিওসহ ফেসবুকে একটি পোস্ট দিয়ে লেখেন, ‘কুষ্টিয়া-২ আসনের সাবেক আওয়ামী লীগের এমপি কামারুল আরেফিন (ফাটাকেস্ট)। কলকাতায় আমার হোটেলের সামনে একটি ওষুধের দোকানে দেখা হলে আমি যখন ভিডিও করতে ছিলাম বুঝতে পেরে ওই এলাকা দ্রুত ত্যাগ করেন। বেচারাকে খুব অসহায় মনে হইতেছিল। একসময়ের খুব প্রভাবশালী নেতা যে হাসানুল হক ইনুকে ২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারি সংসদ নির্বাচনে হারিয়েছে।’
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সরকার পতনের পর কামারুল আরেফিন দৌলতপুর সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে তার কয়েকজন সহযোগীসহ ভারতে পালিয়ে যান। তিনি অনিয়ম-দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। দেশ-বিদেশে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন। তিনি কুষ্টিয়ায় টেন্ডারবাজি, মাদক ব্যবসায়, অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, নদীর জায়গায় মাছ চাষ ও চাঁদাবাজি নিয়ন্ত্রণ করতেন। অসংখ্য মানুষকে নির্যাতন-নিপীড়ন করেছেন। আমরা তাদের বিচার চাই। তাদের সব অপরাধ সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করা হোক। ইন্টারপোলের মাধ্যমে তাকে দেশে ফিরিয়ে এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তাদের অত্যাচারে অসংখ্য মানুষ ঘরছাড়া, অনেক মানুষ শান্তিতে ঘুমাতে পারেনি।

্রিন্ট

আরও সংবদ