খুলনা | শুক্রবার | ১৩ জুন ২০২৫ | ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের জন্য আব্বাসের শর্ত

বিদায় নিতে হবে গাজা নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনি গোষ্ঠীকে

খবর প্রতিবেদন |
০৪:৩৩ পি.এম | ১১ জুন ২০২৫


স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের জন্য কিছু শর্ত উত্থাপন করেছেন ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর অঞ্চলে ক্ষমতাসীন দল ফাতাহ-এর শীর্ষ নেতা এবং ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস। সেসব শর্তের মধ্যে প্রথমটি হলো গাজা উপত্যকা নিয়ন্ত্রণকারী গোষ্ঠীকে অবশ্যই অস্ত্র সমর্পণ করতে হবে।

এছাড়া যত দ্রুত সম্ভব গাজায় বন্দি ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি এবং গাজার শাসনক্ষমতা থেকে হামাসের বিদায়ের শর্তও দিয়েছেন ফিলিস্তিনের ৮৯ বছর বয়স্ক এই প্রেসিডেন্ট।

সম্প্রতি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁকে একটি চিঠি দিয়েছেন মাহমুদ আব্বাস। সেই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে এসব শর্ত। গতকাল মঙ্গলবার চিঠিটি প্রকাশ করেছে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবন ও কার্যালয় এলিসি প্যালেস।

জাতিসংঘের উদ্যোগে আগামী সপ্তাহে নিউ ইয়র্কে জাতিসংঘের সদর দপ্তরে একটি সম্মেলন শুরু হতে যাচ্ছে। সম্মেলনের প্রধান বিষয় স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠন। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ এবং সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স ও প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ বিন সালমান যৌথভাবে এই সম্মেলনের চেয়ারম্যানের দায়িত্বে থাকবেন। তার আগেই এ চিঠি দিলেন আব্বাস।

চিঠিতে মাহমুদ আব্বাস বলেছেন, হামাস আর গাজা শাসন করতে পারবে এবং তাদেরকে অবশ্যই ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের কাছে (পশ্চিম তীরে আসীন সরকার) যাবতীয় অস্ত্র ও সামরিক সক্ষমতা সমর্পণ করতে হবে।

এর পাশাপাশি গাজায় বন্দি ইসরায়েলি জিম্মিদের যত শিগগির সম্ভব মুক্তি দিতে হবে এবং হামাসকে গাজার শাসন ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হবে। আমরা মনে করি, স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র গঠনের জন্য এগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পূর্বশর্ত।

মাহমুদ আব্বাসকে এই চিঠির উত্তরও দিয়েছে ফ্রান্স। এক বিবৃতিতে এলিসি প্রাসাদ থেকে এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্টের এই বাস্তব এবং অভূতপূর্ব শর্তগুলোকে ফ্রান্স স্বাগত জানিয়েছে। ফ্রান্স মনে করে, দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের জন্য এসব শর্তপূরণ খুবই জরুরি।

এখানে উল্লেখ্য যে ফ্রান্স বরাবরই দ্বিরাষ্ট্র সমাধানের পক্ষে। কয়েক মাস আগে স্পেন, আয়ারল্যান্ড এবং ফ্রান্স— পশ্চিম ইউরোপের এই তিন রাষ্ট্র ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি প্রদানের প্রস্তুতি শুরু করেছিল। পরে অবশ্য স্পেন এবং আয়ারল্যান্ড ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিলেও ফ্রান্স পিছিয়ে আসতে বাধ্য হয়। এর প্রধান কারণ জাতিসংঘের সবচেয়ে ক্ষমতাধর সংস্থা নিরাপত্তা পরিষদে ফ্রান্সের স্থায়ী সদস্যপদ।

তবে ফিলিস্তিন যে জাতিসংঘে প্রবেশাধিকার পেয়েছে এবং গত এক যুগেরও বেশি সময় ধরে জাতিসংঘের পর্যবেক্ষক রাষ্ট্রের মর্যাদা ভোগ করছে— তা ফ্রান্সের ব্যাপক সমর্থন ও কূটনৈতিক তৎপরতা ছাড়া সম্ভব হতো না।

ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ক্ষমতাসীন ফাতাহ সরকার আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অঙ্গনে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষ নামে পরিচিত। আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত এই সরকারের সঙ্গে হামাসের সম্পর্ক চরম খারাপ।

গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনী গত দেড় বছর ধরে যে ভয়াবহ সামরিক অভিযান চালাচ্ছে, তার কড়া সমালাচক মাহমুদ আব্বাস। পাশাপাশি ২০২৩ সালে ইসরায়েলের ভূখণ্ডে যে হামলা চালিয়েছিল হামাস, সেটিরও কঠোর সমালোচক তিনি।

গত ২২ এপ্রিল হামাসকে লক্ষ্য করে এক অগ্নিঝরা বক্তব্য দিয়েছিলেন মাহমুদ আব্বাস। টেলিভিশনে সম্প্রচারিত সেই বক্তব্যে হামাসের উদ্দেশে বলেছিলেন, কুকুরের বাচ্চারা, সব জিম্মিকে এখুনি মুক্তি দাও।
সূত্র ; নিউইয়র্ক টাইমস

্রিন্ট

আরও সংবদ