খুলনা | শনিবার | ১৪ জুন ২০২৫ | ৩০ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২

‘টার্নিং পয়েন্ট’র বৈঠক জনপ্রত্যাশা পূরণ হোক

|
১২:১৪ এ.এম | ১৩ জুন ২০২৫


গত বছরের জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশের রাজনীতিসহ সব ক্ষেত্রে যে ইতিবাচক পরিবর্তনের প্রত্যাশা জনমনে বিরাজ করছে, তা যেন কিছুতেই হতাশায় পরিণত না হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে অন্তর্বর্তী সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলোসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে। এ পরিবর্তনের লক্ষে ইতোমধ্যে যেসব উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে, সেগুলোকে কিছুতেই ব্যর্থ হতে দেওয়া চলবে না।
দেশের রাজনীতিসচেতন সব মানুষের দৃষ্টি এখন লন্ডন বৈঠকের দিকে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস চার দিনের সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যে অবস্থান করছেন। আগামী শুক্রবার (১৩ জুন) লন্ডনে তার এবং বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যে বৈঠক হতে যাচ্ছে। এ বৈঠককে ঘিরে মানুষের কৌতূহল ও প্রত্যাশা অনেক। বৈঠকে জাতীয় নির্বাচনের দিনক্ষণ, সংস্কার, জুলাই সনদ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয়ে কী কথা হয়, কী বোঝাপড়া হয়, তা দেখার জন্য উৎসুক হয়ে আছে দেশবাসী। কাজেই দেশের রাজনীতির ভবিষ্যতের জন্য বৈঠকটি যে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। বস্তুত এমন এক সময় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে, যখন রাজনীতিতে এক ধরনের অস্বস্তি ও গুমোট পরিস্থিতি বিরাজ করছে। আমরা জানি, নির্বাচনের সময়সীমা নির্ধারণ ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকার এবং দেশের অন্যতম বৃহৎ রাজনৈতিক দল বিএনপি’র মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। এ পরিস্থিতির সুযোগ নেওয়ার জন্য তৎপর হয়ে উঠেছে ষড়যন্ত্রকারীরা। সব কিছু মিলিয়ে দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে নানা শঙ্কা ও সংশয়ের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে দেশবাসী। এ পরিস্থিতিতে ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের মধ্যে আসন্ন বৈঠককে একটি সুসংবাদের বার্তাবাহী হিসাবে দেখছেন অনেকে। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ বৈঠককে রীতিমতো টার্নিং পয়েন্ট আখ্যা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, এ বৈঠকের মধ্য দিয়ে নতুন এক দিগন্তের সূচনা হতে পারে। সমাধান হতে পারে বিদ্যমান অনেক সমস্যার। আমরাও মনে করি, প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তারেক রহমানের সাক্ষাৎ ফলপ্রসূ হলে নির্বাচনের সম্ভাব্য সময়, গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার এবং জুলাই সনদসহ আরও অনেক বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ও বিএনপি’র মধ্যে সৃষ্ট দূরত্ব বা মতবিরোধ কমে আসতে পারে, যা দেশের রাজনীতির জন্য বয়ে আনবে সুবাতাস। আরও স্পষ্টভাবে বলা যায়, এ বৈঠক দেশের চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে পারে এবং একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ প্রস্তুত করতে সহায়ক হতে পারে। অন্যদিকে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন, এ বৈঠকের আলোচনা নেতিবাচক হলে সংস্কার ও নির্বাচনের ওপর এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, যা পরিস্থিতি আরও সংকটের দিকে নিয়ে যেতে পারে।
আমরা মনে করি, মতপার্থক্য যে বিষয়ে এবং যত বড়ই হোক, আলোচনার মাধ্যমে তার সমাধান সম্ভব। বিদ্যমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে এ মুহূর্তে দেশে যে অস্বস্তিকর অবস্থা বিরাজ করছে, তার অবসান অত্যন্ত জরুরি। জনগণ চায় দেশে স্বস্তি ফিরে আসুক, ক্ষমতার হস্তান্তর হোক শান্তিপূর্ণভাবে। সবার উপরে স্থান পাক দেশ ও জনগণের স্বার্থ। আমাদের বিশ্বাস, শুক্রবারের বৈঠকে এ জনপ্রত্যাশারই প্রতিফলন ঘটবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ