খুলনা | সোমবার | ১৬ জুন ২০২৫ | ২ আষাঢ় ১৪৩২

ঈদে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যু বেড়েছে, শীর্ষে মোটরসাইকেল

খবর প্রতিবেদন |
০১:০৪ পি.এম | ১৬ জুন ২০২৫


চলতি বছরের পবিত্র ঈদুল আজহা ঘিরে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনা, প্রাণহানি ও আহতের সংখ্যা গত বছরের তুলনায় উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে। বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি জানিয়েছে, এবার দুর্ঘটনার হার বেড়েছে ২২.৬৫ শতাংশ, মৃত্যুর সংখ্যা বেড়েছে ১৬.০৭ শতাংশ এবং আহতের সংখ্যা বেড়েছে ৫৫.১১ শতাংশ।

সোমবার (১৬ জুন) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়। যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী জানান, ১৫ দিনের ঈদ যাত্রায় সারাদেশে ৪১৫টি সড়ক, রেল ও নৌ দুর্ঘটনায় ৪২৭ জন নিহত ও ১১৯৪ জন আহত হয়েছেন।

তিনি জানান, সড়কে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা হয়েছে। মোট ৩৭৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে ৩৯০ জনের, আহত হয়েছেন ১১৮২ জন। রেলপথে ২৫টি দুর্ঘটনায় ২৫ জন নিহত ও ১২ জন আহত হয়েছেন। আর নৌপথে ১১টি ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১২ জন, নিখোঁজ রয়েছেন ৬ জন।

গত বছরের ঈদুল আজহার সময় ৩০৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৩৬ জনের মৃত্যু হয়েছিল। এবছর তা আরও ভয়াবহ আকার নিয়েছে বলে মন্তব্য করেন মোজাম্মেল হক।

এবারের সড়ক দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি জড়িত ছিল মোটরসাইকেল। মোট ১৩৪টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন ১৪৭ জন, আহত হয়েছেন ১৪৮ জন। এককভাবে মোট দুর্ঘটনার ৩৫.৩৫ শতাংশ ছিল মোটরসাইকেল সংশ্লিষ্ট।

নিহতদের মধ্যে ৬১ জন চালক, ৫০ জন পরিবহন শ্রমিক, ৫৮ জন পথচারী, ৪০ জন নারী, ৩০ জন শিশু, ৩২ জন শিক্ষার্থী ছাড়াও চিকিৎসক, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য, শিক্ষক ও রাজনীতিক ছিলেন।

দুর্ঘটনায় সবচেয়ে বেশি জড়িত যেসব যান
মোটরসাইকেল: ২৬.৫৪ শতাংশ, ট্রাক ও কাভার্ডভ্যান: ১৯.১১ শতাংশ, বাস: ১৮.৫৮ শতাংশ, ব্যাটারিচালিত রিকশা: ১৩.৬২ শতাংশ, কার ও মাইক্রোবাস: ৭.৪৩ শতাংশ, নছিমন-করিমন: ৭.৬১ শতাংশ ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা: ৭.০৭ শতাংশ।

দুর্ঘটনার ধরন বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে— ৪০.৬৩ শতাংশ দুর্ঘটনা হয়েছে পথচারীকে চাপা দিয়ে, ২৮.২৩ শতাংশ মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২০.০৫ শতাংশ যানবাহন খাদে পড়ে, ১০.২৯ শতাংশ দুর্ঘটনার কারণ অনির্ধারিত ও ০.৭৯ শতাংশ দুর্ঘটনা ট্রেন ও গাড়ির সংঘর্ষে।

দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে জাতীয় মহাসড়ক: ৩৭.২০ শতাংশ, আঞ্চলিক মহাসড়ক: ২৮.২৩ শতাংশ, ফিডার রোড: ২৮.৪৯ শতাংশ, ঢাকা মহানগরী: ৪.৪৮ শতাংশ, চট্টগ্রাম মহানগরী ও রেলক্রসিং এলাকা: ০.৭৯ শতাংশ করে।

এ সংকট থেকে উত্তরণে যাত্রী কল্যাণ সমিতি বেশ কিছু সুপারিশ দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে— মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত যানবাহনের নিয়ন্ত্রণ, মহাসড়কে আলো ও ফুটপাতের ব্যবস্থা, ফিটনেস যাচাইয়ে ডিজিটাল পদ্ধতি, বাস চালকদের জন্য নির্দিষ্ট বেতন ও কর্মঘণ্টা, রাস্তায় চাঁদাবাজি বন্ধ, পথচারীদের পারাপারে আধুনিক ব্যবস্থা, উন্নত মানের সড়ক নির্মাণ ও সংরক্ষণ, রোড সেইফটি অডিট চালু, মেয়াদোত্তীর্ণ ও অযোগ্য যানবাহন স্ক্র্যাপ, ঈদের আগে সরকারি ছুটি বাড়ানো এবং ড্রাইভিং প্রশিক্ষণে ভ্যাট ও আয়কর মওকুফ করা।

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বুয়েটের অধ্যাপক আরমানা সাবিহা হক, সংগঠনের অর্থ সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল, প্রচার সম্পাদক মোহাম্মদ আলাউদ্দিন মাসুদ এবং নির্বাহী সদস্য অধ্যক্ষ রফিকা আফরোজ, মনজুর হোসেন ইশা ও জিএম মোস্তাফিজুর রহমান। 

্রিন্ট

আরও সংবদ