খুলনা | মঙ্গলবার | ১৭ জুন ২০২৫ | ৩ আষাঢ় ১৪৩২

দেশে এখন নির্বাচনী হাওয়া পরিচ্ছন্ন নির্বাচনের প্রত্যাশা

|
১২:১৯ এ.এম | ১৭ জুন ২০২৫


ফেব্র“য়ারির প্রথমার্ধে নির্বাচন অনুষ্ঠানের যে ঘোষণা এসেছে, বেশির ভাগ রাজনৈতিক দল, ব্যবসায়ী মহল ও বিভিন্ন নাগরিক সংগঠন তাকে স্বাগত জানিয়েছে। সেই হিসেবে নির্বাচন কমিশনের হাতে সময় খুবই কম। তাদের ডিসেম্বরের প্রথমে তফসিল ঘোষণা করতে হবে। এর আগে জাতীয় সংসদের আসনগুলোর সীমানা নির্ধারণ, দল নিবন্ধন, আরপিও সংস্কার করতে হলে সে বিষয়ে অধ্যাদেশ জারি, পর্যবেক্ষক নীতিমালা, অন্যান্য নির্বাচনী বিধি-বিধানের প্রয়োজনীয় সংস্কারসহ আরো কিছু জরুরি কাজ করতে হবে। অন্যদিকে এরই মধ্যে সারা দেশেই সম্ভাব্য প্রার্থী বা মনোনয়নপ্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ শুরু হয়ে গেছে। ফলে এখন থেকে দেশব্যাপী নির্বাচনী হাওয়া ক্রমেই জোরদার হতে থাকবে।
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন নিয়ে এক ধরনের অনিশ্চয়তা ও উত্তেজনা তৈরি হয়েছিল। গত শুক্রবার লন্ডনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের মধ্যকার বৈঠকে তার একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান পাওয়া গেছে।
যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ফেব্র“য়ারি মাসের প্রথমার্ধে অর্থাৎ রোজা শুরুর আগেই নির্বাচন হতে পারে। এতে দেশের মানুষ স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছে। তবে কয়েকটি রাজনৈতিক দল এ নিয়ে তাদের অসন্তোষও প্রকাশ করেছে। জামায়াতে ইসলামী মনে করে, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে বৈঠকের পর যৌথ বিবৃতি দেওয়া বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতির ব্যত্যয়। এর ফলে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নিরপেক্ষতা ক্ষুন্ন হয়েছে। শনিবার দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের বৈঠক শেষে এক বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়। জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘লন্ডনে বসে একটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সরকারের মিটিং দেশবাসীর স্বার্থ ও গণ-আকাক্সক্ষার সঙ্গে প্রতারণা।’
গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, নির্বাচনের সময় নিয়ে এক ধরনের সমঝোতার পর দেশজুড়ে নির্বাচনী তৎপরতা জোরদার হয়েছে। সম্ভাব্য প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় জনসংযোগ বাড়িয়েছেন। শোভাযাত্রাও হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তৎপর অনেকে। কয়েকটি দলের শীর্ষ নেতারা কেন্দ্রীয় পর্যায়ে ভিন্ন কথা বললেও তাঁদের স্থানীয় নেতারা নির্বাচনী প্রচারে পিছিয়ে নেই। দল থেকে, বিশেষ করে বিএনপি থেকে কারা প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পাবেন, তা নিয়েও কৌতূহলের অন্ত নেই। ছোট দলগুলো বড় কোনো দলের সঙ্গে জোট গঠনেরও অপেক্ষায় রয়েছে।
নির্বাচন বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সুষ্ঠু নির্বাচন করাটাই এখন অন্তর্বর্তী সরকার ও নির্বাচন কমিশনের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। নির্বাচন কমিশনকে ওই সময়ে নির্বাচন করার জন্য প্রয়োজনীয় কাজগুলো দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে। নির্বাচনব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের সদস্য ও নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সাবেক অতিরিক্ত সচিব জেসমিন টুলি বলেন, ‘এখন নির্বাচন কমিশনকে ওই সময়ে নির্বাচন করতে প্রয়োজনীয় কাজগুলো সম্পন্ন করার জন্য একটি রোডম্যাপ প্রস্তুত করতে হবে। নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার জন্য এখনো প্রায় ছয় মাস সময় রয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমার ধারণা, সব দল এখন নির্বাচনমুখী। কয়েকটি দল তাদের প্রার্থীও চূড়ান্ত করে রেখেছে।’
দীর্ঘ বঞ্চনার পর দেশের মানুষ এখন তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য উন্মুখ হয়ে আছে। আমরা আশা করি, ফেব্র“য়ারির প্রথমার্ধে দেশের মানুষ একটি পরিচ্ছন্ন নির্বাচন দেখতে পাবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ