খুলনা | শুক্রবার | ২০ জুন ২০২৫ | ৬ আষাঢ় ১৪৩২

যুদ্ধের প্রস্তুতি নিচ্ছে তুরস্ক # খামেনিকে হত্যা করাটাই এখন যুদ্ধের লক্ষ্য # ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসছেন ইউরোপীয় মন্ত্রীরা

ইরান-ইসরাইল যুদ্ধে পরাশক্তির অনুপ্রবেশ হলে বিশ্বযুদ্ধে রূপ নিতে পারে

খবর প্রতিবেদন |
০১:৩২ এ.এম | ২০ জুন ২০২৫


ইরান-ইসরাইলের যুদ্ধ নতুন মাত্রায় রূপ নিতে যাচ্ছে। ইসরাইলের সমর্থনে এবার বিশ্বের নাম্বার ওয়ান পরাশক্তি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যোগ দিতে যাচ্ছে। বৃহস্পতিবার ইরানে হামলার জন্য পরিকল্পনায় ইতোমধ্যেই অনুমতি দিয়ে রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সামরিক অভিযানে অংশগ্রহণের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেননি তিনি। মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগ এবং প্রতিরক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের বরাতে দেশটির সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজ এ খবর জানিয়েছে। পেন্টাগণের সূত্রগুলো বলেছে, প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানে হামলার জন্য অনুমোদন দিয়েছেন। সে মোতাবেক পেন্টাগণ সকল প্রস্তুতি নিচ্ছে। চূড়ান্ত সম্মতি পেলে হামলা করা হবে।
এদিকে ট্রাম্পের এই অনুমোদনকে সমর্থন করতে পারছে না, রিপাবলিক শিবিরের সমর্থকরা। তাদের ভাষ্য ট্রাম্প তার নির্বাচনী প্রতিশ্র“তি ভঙ্গ করতে যাচ্ছেন। তিনি দ্বিতীয় দফায় নির্বাচনের আগে বলেছিলেন আরেকটি বিশ্বযুদ্ধ না চাইলে আমাকে নির্বাচিত করুন। যে কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ মানুষ জো-বাইডেনের ফিলিস্তিন ও গাজা নীতির প্রতি মুখ ফিরিয়ে ট্রাম্পকে বেছে নেয়। রিপাবলিকান শিবির তথা আমেরিকার জণগন আরেকটি মধ্যপ্রাচ্য যুদ্ধে যুক্ত হতে চাচ্ছে না। তাদের উপলব্ধি ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধে আমেরিকার জন্য স্থায়ী কোনো সুফল বয়ে আনে নি। ওই যুদ্ধে প্রাথমিকভাবে আমেরিকা জিতলে পরে তার পরিণতি হয়েছে শোচনীয়। ইরাক ও আফগানিস্তানে তৎকালীন শাসক গোষ্ঠীর রেজিম পরিবর্তন হলেও তা চিল ক্ষণস্থায়ী। আফগানিস্তানে তালেবানদের হটিয়ে হামিদ কারজাইয়ের সরকার গঠিত হলেও ২০২১ সালের আগস্টে সেই তালেবান সরকার ফিরে আসে পূর্ণশক্তি নিয়ে। তখন মার্কিন সৈন্যরা অস্ত্র-গোলাবারুদ ও সরঞ্জাম রেখে বিমান যোগে আফগানিস্তান ত্যাগ করে। যা ছিল বিশ্বের এক নম্বর পরাশক্তির রাজনৈতিক পরাজয়। তেমনি, ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ করে খমেনির সরকারকে উৎখাত করে সাময়িক বিজয় হওয়া সম্ভব হলেও সে বিজয় স্থায়ী হবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে।
সামরিক বিশ্লেষকরা জানান, ইরাক যুদ্ধে আমেরিকার সঙ্গে ছিল সম্মিলিত ন্যাটো। তখন আমেরিকার পাশাপশি, ফ্রান্স, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, জার্মানিসহ বিশ্বের অনেক শক্তিধর দেশ ছিল এবং সেটি ছিল বহুজাতিক সামরিক ঐক্য। এবার সেটি প্রথম দিকে না থাকলেও পরে এক হতেও পারে। অপর দিকে বিশ্বের অপর দুই পরাশক্তি রাশিয়া ও চীন কোন দিকে যেতে পারে তারও কোনো সুনির্দিষ্ট আলামত দেখা যাচ্ছে না। কেননা গত পঞ্চাশ বছরে কোনো দেশের সঙ্গে চীন যুদ্ধ করেনি। তারা বিশ্বব্যাপী বাণিজ্যকে প্রাধান্য দিয়েছে। ট্রাম্প সরকার বাণিজ্য যুদ্ধ শুরু করেছে চীনের ওপর শুল্ক আরোপ করে। পরে সেই অসম বাণিজ্য শুল্ককে কিছুটা কমিয়ে চীন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতায় পৌঁছেছে। এছাড়া ইউক্রেনের সঙ্গে যুদ্ধে জড়িয়ে রাশিয়া তার অর্থনৈতিক ও সামরিক শক্তি খুঁইয়ে দুর্বল হয়ে পড়েছে। যার উদাহরণ দীর্ঘদিন ধরে সিরিয়ার আসাদ সরকারের অর্থ ও অস্ত্র দিয়ে সহায়তা করা রাশিয়া আসাদের পতনের সময়ে দূরে সরে যায় নিরবে।
তবে মর্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অতীত ইতিহাস ঘেটে দেখা যায় ৫০-এর দশকের তৎকালীন ইরানের নির্বাচিত সরকার তেল বাণিজ্য নিয়ে নিজস্ব পলিসি গড়ে তোলে। তখন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সহায়তায় রেজা শাহ পাহলভী রাজ্যাসনের পাশাপশি রাষ্ট্রের নির্বাহী ক্ষমতা দখল করেন এবং আমেরিকাকে তেল নিয়ন্ত্রণসহ সব কিছু দিয়ে দেন বিনা শর্তে। রেজা শাহ পাহলভী ছিলেন আমেরিকার পুতুল সরকার। ১৯৮৯ সালে ইমাম আয়াতুল­াহ রহুল­াহ খমেনির নেতৃত্বে ইসলামী বিপ্লবের মাধ্যমে রেজা শাহ পাহলভী সরকারের পতন হয়। রেজা শাহ পাহলভী শেষ পর্যন্ত পালিয়ে যান। তবে রেজা শাহ পাহলভীকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আশ্রয় দেয়নি। আকাশে বিমান উড়তে থাকে, কোথাও নামার অবস্থা ছিল না। শেষ পর্যন্ত আমেরিকার অনুরোধে মিশরে বিমান অবতরণ করে এবং রেজা শাহ সেখানে আশ্রয় নেন। মিশরের তৎকালীন সরকার ও কিছু জণগনের যুক্তি ছিল, রেজা শাহ পাহলভী মিশরের সাবেক রাজার মেয়েকে বিয়ে করেছিলেন। জামাই হিসেবে মিশর তাকে থাকতে দিয়েছে। তার পর থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তেল কুপের নিয়ন্ত্রণ হারায়। সেই তেল-গ্যাস এবং খনিজ সম্পদ পুনরায় দখর এবং তাদের আশ্রিত জায়রবাদী মিত্র ইসরাইলের পাশে এবার দাঁড়াতে যাচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তেল বাণিজ্য ও দখলদারিত্ব নেপথ্যে থাকলেও ইসরাইল পুরোপুরি এটাকে ধর্মযুদ্ধ হিসেবে বেছে নিয়েছে। যার প্রেক্ষাপট ইহুদিবাদী ইসরাইল সরকার ইতিপূর্বে তৈরি করেছে। গোটা মধ্যপ্রাচ্য এখন ইহুদিবাদী ইসরাইলের চোখ পড়েছে। তারা ইতি পূর্বে ফিলিস্তিনের গাজাকে ধুলিস্যাৎ করেছে। গোটা গাজা শহর এখন মাটির নিচে। প্রায় ২৫ লাখ মানুষ গৃহহারা। মারা গেছে ৫৫ হাজারেরও বেশি। পাশাপাশি লেবাননের হেজবুল­াহ গোষ্ঠীকে গত বছর নির্বিচারে বাহিনী প্রধান নসুরুল­াহসহ শীর্ষ নেতাদের হত্যা করে কোমর ভেঙ্গে দিয়েছে। এখন তারা আর কোনো ঝুঁকি নিতে চায় না। কেনন, ইরান সব সময়ই ইসরাইলের জন্য হুমকি। মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলো সম্পদশালী হলেও তারা সামরিক দিক থেকে দুর্বল। শুধুমাত্র ইরান ও তুরস্ক অস্ত্র উৎপাদনের ক্ষমতা রাখে। এর মধ্যে ইরানই আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে ক্ষেপনাস্ত্র ও ড্রোন তৈরি করে তাদের সক্ষমতা জানান দিচ্ছে। তাই ইরানকে দুর্বল করে ইসরাইল তার ইহুদিবাদী দখলদারিত্ব চিরস্থায়ী করতে চায়। ইসরাইল রাষ্ট্রটির চতুর পাশে ইসলাম ধর্মের অনুসারাী হলেও তারা একে অপরের শত্র“ হয়ে উঠেছে। আরব দেশগুলো এই বর্বরতম হামলার শুধু নিন্দা, ক্ষোভ আর উদ্বেগ প্রকাশ করে দায়িত্ব শেষ করছে। এর সঙ্গে রয়েছে সুন্নী ও শিয়া মতভেদ। আবার বিগত দিনে সৌদি আরবের সঙ্গে ইয়েমেনের হুতিদের সঙ্গে প্রক্সি যুদ্ধ করে ইরান এখন সৌদি আরবের কাছে প্রকৃত বন্ধু হয়ে উঠতে পারেনি। সা¤প্রতিক সময়ে কূটনৈতিক সম্পর্ক গড়ে উঠেলেও তার পরম বন্ধুর পর্যায়ে উপনীত হয়নি। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে সিরিয়ার আসাদ সরকারের সমর্থন দেওয়ায় সিরিয়ার মানুষও ইরানের পক্ষে নেই। সেখানে লাখ লাখ মানুষকে আসাদ সরকার গণহত্যা চালালেও ইরান সর্বদাই আসাদের পাশে ছিল। বর্তমানে আসাদ সরকার উৎক্ষাত হলেও সিরিয়ার মানুষের মনে ইরানের স্থান নেই। তার পাশে নেই কাতার, লিবিয়া, জর্ডান। ইরানের সমর্থিত লেবাননের সশস্ত্র হিজবুল­াহ গোষ্ঠীও এখন সর্বশান্ত। আর ফিলিস্তিনিরা হলো এ যুগের সবচেয়ে অসহায় একটি জনগোষ্ঠী। এই সুযোগটি বেছে নিয়েছে জায়নবাদী ইহুদি রাষ্ট্র ইসরাইল। আর পাশে পেয়েছে তাদের প্রধান মিত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
ইরানে হামলার পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছেন ট্রাম্প : ইরানে হামলার জন্য পরিকল্পনায় ইতোমধ্যেই অনুমতি দিয়ে রেখেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে ইসরায়েলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে সামরিক অভিযানে অংশগ্রহণের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দেননি তিনি। মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগ এবং প্রতিরক্ষা বিভাগের কর্মকর্তাদের বরাতে দেশটির সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজ এ খবর জানিয়েছে।
ওই কর্মকর্তারা বলেছেন, মঙ্গলবার (১৭ জুন) ইরানে হামলার পরিকল্পনা অনুমোদন করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তবে হামলার জন্য এখনও সবুজ সংকেত দেননি তিনি। ওই কর্মকর্তাদের দাবি, ইরান তাদের পারমাণবিক কার্যক্রম পুরোপুরি পরিত্যাগ করতে সম্মত হয় কিনা, সেটা দেখার জন্য হামলার সিদ্ধান্তে বিলম্ব করছে হোয়াইট হাউজ।
মার্কিন সংবাদমাধ্যম দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল সর্বপ্রথম এই খবর প্রচার করে। এই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় হোয়াইট হাউজের তরফ থেকে কোনও মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
বুধবার সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইরানে হামলার বিষয়ে সোজাসাপ্টা কোনও উত্তর দেননি ট্রাম্প। তিনি বলেন, আমি শেষ মুহূর্তে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চাই। কারণ যুদ্ধে চোখের পলকে পরিস্থিতি পাল্টে যেতে পারে। আমি হামলা করতেও পারি, আবার নাও করতে পারি। কেউ জানে না, আমি কী করব। 
‘যুদ্ধের প্রস্তুতি’ নিচ্ছে তুরস্ক: ইরান-ইসরায়েল চলমান সংঘাত ঘিরে মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে। এমন প্রেক্ষাপটে ‘সম্ভাব্য যুদ্ধ পরিস্থিতি’ মোকাবেলায় প্রস্তুতি নিতে শুরু করেছে তুরস্ক। একই সঙ্গে দেশটি ইরানের সঙ্গে থাকা সীমান্তে নিরাপত্তা জোরদার করেছে।
এক গোপন সূত্রের বরাতে এক প্রতিবেদনে এতথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্স। গণমাধ্যমটি বলছে, তুরস্কের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় বর্তমানে ইরান-ইসরায়েল সংঘাতের বিস্তার ঠেকাতে এবং দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একাধিক স্তরে প্রস্তুতি নিচ্ছে।
সূত্রটি জানায়, তুরস্ক-ইরান সীমান্তে অতিরিক্ত নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে এবং সীমান্ত নজরদারি প্রযুক্তির ব্যবহারও বাড়ানো হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত ইরান থেকে তুরস্কে শরণার্থীদের ‘অস্বাভাবিক’ প্রবাহ লক্ষ্য করা যায়নি।
বিশ্লেষকরা মনে করছেন, সংঘাত দীর্ঘস্থায়ী হলে তুরস্কে শরণার্থী প্রবেশের সম্ভাবনা বাড়তে পারে, যা আঙ্কারার জন্য বড় একটি মানবিক ও নিরাপত্তাজনিত চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াতে পারে। 
তুরস্ক এখন পর্যন্ত ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ নিয়ে সরাসরি কোনো পক্ষ নেয়নি। তবে আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা রক্ষায় সক্রিয়ভাবে ক‚টনৈতিক পর্যায়ে কাজ করছে বলে জানিয়েছে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
খামেনিকে হত্যা করাটাই এখন যুদ্ধের লক্ষ্য : ইসরায়েলের যুদ্ধনীতির অন্যতম লক্ষ্য এখন ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল­াহ আলী খামেনিকে ‘খতম’ করা। বৃহস্পতিবার ইসরায়েলের দক্ষিণাঞ্চলের বিরসেভা শহরের ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় সরোকা হাসপাতাল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার প্রতিক্রিয়ায় এই কথা বলেন ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ। 
তিনি বলেন, খামেনির মতো মানুষ সবসময় এজেন্টদের মাধ্যমে ইসরায়েলকে ধ্বংস করতে চেয়েছে। যে ব্যক্তি আমাদের ওপরে সরাসরি হামলার নির্দেশ দেয়, সে যেন বেঁচে না থাকে- এটাই হওয়া উচিত। এই মানুষটিকে থামানো ও শেষ করা এখন আমাদের সামরিক অভিযানের অংশ।
অন্যদিকে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে বলেন, আমরা এখনই খামেনিকে হত্যা করছি না... কিন্তু আমাদের ধৈর্য ফুরিয়ে আসছে। এর আগে তিনি বলেছিলেন, আমরা খামেনিকে বাদ দিয়ে শান্তি চাই না, কিন্তু সময় ঘনিয়ে আসছে।
জেনেভায় আজ ইরানের সঙ্গে আলোচনায় বসছেন ইউরোপীয় মন্ত্রীরা : সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় আজ শুক্রবার (২০ জুন) ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনায় বসতে যাচ্ছেন জার্মানি, ফ্রান্স ও ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা। জার্মান ক‚টনৈতিক সূত্র ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন।
সূত্রটি জানায়, প্রথমে ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ ক‚টনীতিক কাজা কালাসের সঙ্গে জার্মানির জেনেভা স্থায়ী মিশনে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এরপর ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে যৌথ বৈঠক করবেন তারা। 
ইউরোপীয় এই উদ্যোগ এমন এক সময়ে এসেছে, যখন মধ্যপ্রাচ্যে ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে সংঘাত ঘনীভূত হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। গত সপ্তাহে ইসরায়েল তাদের প্রধান প্রতিদ্ব›দ্বী ইরানের ওপর ব্যাপক সামরিক হামলা চালিয়েছে। জবাবে ইরানও ইসরায়েলি লক্ষ্যবস্তুতে ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে।
জার্মান সূত্র জানিয়েছে, ইরান ও ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে এই আলোচনার লক্ষ্য হচ্ছে-ইরান নিশ্চিত ভাবে তার পারমাণবিক কর্মসূচি শুধু বেসামরিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করবে — সেই প্রতিশ্র“তি আদায় করা। আলোচনাটি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমন্বয় করেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে বলেও জানিয়েছে সূত্রটি। 
সূত্র আরও জানিয়েছে, এই আলোচনা শেষ হওয়ার পর বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে একটি কাঠামোবদ্ধ সংলাপ শুরু হবে।
এদিকে, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিশ র্মেজ ইসরায়েলের হামলার পক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। এ সপ্তাহে তিনি তেহরানকে সতর্ক করে বলেন, ইরান যদি উত্তেজনা প্রশমনে না আসে, তাহলে আরও বড় ধ্বংসের মুখোমুখি হতে পারে।
অন্যদিকে জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী ইয়োহান ভাডেফুল বুধবার ইরানের নেতাদের প্রতি আহŸান জানিয়ে বলেন, পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে নিশ্চয়তা দেওয়ার একটি সমাধানে আসার এখনও সময় আছে। আলোচনার টেবিলে আসতে কখনোই দেরি হয়ে যায় না।

্রিন্ট

আরও সংবদ