খুলনা | মঙ্গলবার | ২৪ জুন ২০২৫ | ১০ আষাঢ় ১৪৩২

আগামী নির্বাচনে ইসলামী দলগুলোর একটি ভোটবাক্স থাকবে : গোলাম পরওয়ার

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০২:২৪ এ.এম | ২১ জুন ২০২৫


জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র রক্ষায় আগামী নির্বাচনে দেশপ্রেমিক শক্তিকে বিজয়ী করতে হবে। কোনো বিদেশি প্রভুর কথায় আর দেশ চলবে না। নিজেরাই নিজেদের শক্তি নিয়ে দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবো ইনশাআল­াহ। দেশের ইসলামী দলগুলোর মাঝে এক ধরনের সমঝোতা হয়েছে। আগামী নির্বাচনে ইসলামী দলগুলোর একটি ভোটবাক্স থাকবে।  
শুক্রবার দুপুরে খুলনা মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে নগরীর সোনাডাঙ্গাস্থ আল ফারুক মিলনায়তনে থানা মজলিসে শুরা/কর্মপরিষদ সদস্য ও টিম সদস্যদের নিয়ে শিক্ষাশিবিরে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ফ্যাসিস্ট আ’লীগ সরকার দিলি­র প্রেসক্রিপশনে বার বার ক্ষমতায় এসে দেশের আলেম-উলামাদের ওপর জেল-জুলুম, নির্যাতন করেছে। জামায়াতের নেতা-কর্মীদের প্রতিটি আসনে আগামী নির্বাচনে শক্ত প্রতিদ্ব›িদ্বতা গড়ে তুলতে প্রতিটি বাড়ি, পাড়া ও মহল­ায় মহল­ায় কাজ করার নির্দেশ দেন তিনি। আগামী নির্বাচনে ভোটের মাধ্যমে দেশে ইসলামী বিপ্লব করতে নেতা-কর্মীদের প্রস্তুত থাকতেও বলেন। 
তিনি বলেন, জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনে অর্জিত বিজয় হাতছাড়া হয়ে যাবে, যদি এ দেশের ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তি ঐক্যবদ্ধ না হয়। নতুন বাংলাদেশের প্রত্যাশা ন্যায় ও ইনসাফভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করা। সে লক্ষ্যেই জামায়াতে ইসলামী কাজ করছে।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) যে আদর্শের মাধ্যমে তার সাথীদেরকে উন্নত নৈতিকতায় সমৃদ্ধ করে একটি সোনার রাষ্ট্র তৈরি করেছিলেন। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীও সেই আদর্শকে ধারণ করে এদেশে একদল মানুষকে সোনার মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে আলহামদুলিল­াহ। আজ এদেশের জনগণ নিজেদের ভাগ্যের পরিবর্তনে সত্যিকার নৈতিকতা সম্পন্ন মানুষদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে দেখতে চায়। তারা জামায়াতে ইসলামীর নেতৃত্বকে গ্রহণ করতে ব্যাকুল হয়ে আছে। দেশে যদি নিরপেক্ষ, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় তাহলে দেশের অধিকাংশ মানুষের প্রত্যাশার প্রতিফলন ঘটবে ইনশাআল­াহ।
তিনি জামায়াতে ইসলামীর নেতা-কর্মীদের গণমুখী কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে সমাজের মানুষের সেবা অব্যাহত রাখার আহŸান জানান। তিনি বলেন, আন্দোলনকে গতিশীল করতে শুধু গণসংযোগের মধ্যে থাকলে হবে না বা শুধু বই-পুস্তক পড়ে লিডারশিপ অর্জন করা সম্ভব নয়। লিডারশিপ অর্জন করতে হলে মাঠে-ময়দানে লড়াই-সংগ্রাম করতে হবে। সকল স্তরের মানুষের সাথে কথা বলা এবং যোগ্য লোক তৈরি করা। প্রত্যেকটি কাজ পরিকল্পনার আলোকে ধারাবাহিকভাবে করতে হবে। দাওয়াতি কাজের মাধ্যমে বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিয়ে জনমতকে ইসলামের অনুক‚লে আনতে হবে। ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও শ্রমজীবী সংগঠনের সাথে সু-সম্পর্ক তৈরি করা প্রত্যেক নেতৃবৃন্দের মৌলিক কাজ। 
জামায়াত নেতৃবৃন্দের উদ্দেশ্যে সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ইসলামী আন্দোলন সম্পর্কে আমাদের সঠিক জ্ঞান থাকতে হবে। ইসলামী আন্দোলনের দায়িত্বশীলদের ব্যবহারিক জীবন অন্যের কাছে অনুকরণীয় হতে হবে। সমাজের মানুষের কাছে জামায়াতে ইসলামীর একজন দায়িত্বশীল হিসেবে আচার-ব্যবহার মাধুর্যপূর্ণ হতে হবে। অনাচার পাপাচারে ভরা জাহেলী জনগোষ্ঠীর সামনে প্রিয় রাসুল (সাঃ) চারিত্রিক মাধুর্যতা দিয়ে তাদের মন জয় করতে সক্ষম হয়েছিলেন। ইসলামী আন্দোলনের দায়িত্বশীলদেরকেও তেমন চারিত্রিক গুণাবলীর অধিকারী হতে হবে। একটি প্রতিষ্ঠিত জাহেলিয়াতকে উৎখাত করে এই জমিনে মহান আল­াহ তায়ালার দ্বীনকে বিজয়ী করার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। আমাদের কাজ হচ্ছে নিজের জান-মালের কোরবারি পেশ করে ইসলামী আন্দোলনের সত্যিকার কর্মী হওয়া। প্রতিষ্ঠিত জাহেলিয়াতের বিরুদ্ধে আমরা সংগ্রাম করছি। এ কাজ সহজ নয়, সকল যুগেই ইসলামী আন্দোলনের বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী প্রতিপক্ষ ছিল একথা সত্য। বাংলাদেশেও জামায়াতে ইসলামী কোনো ফাঁকা মাঠে গোল দেওয়ার চিন্তা করে না। রাজনৈতিক পরিসরে এখানেও আমাদের শক্ত প্রতিপক্ষ রয়েছে। 
জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমির অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি এড. শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলালের পরিচালনায় শিক্ষাশিবিরে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সেক্রেটারি ও খুলনা অঞ্চলের পরিচালক মুহাদ্দিস আব্দুল খালেক, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চল সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, খুলনা অঞ্চল টিম সদস্য মাস্টার শফিকুল আলম ও মুহাদ্দিস রবিউল বাশার।  
অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খুলনা মহানগরী জামায়াতের নায়েবে আমির অধ্যাপক নজিবুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি এড. মুহাম্মদ শাহ আলম, প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম,  আজিজুল ইসলাম ফারাজৗ, অফিস সেক্রেটারি মীম মিরাজ হোসাইন, কর্মপরিষদ সদস্য মুকাররম বিল­াহ আনসারী, ইঞ্জিনিয়ার মোল­া আলমগীর, অধ্যাপক ইকবাল হোসেন, মাওলানা শাহারুল ইসলাম, মাওলানা শেখ মোঃ অলিউল­াহ, খুলনা সদর থানা আমীর এস এম হাফিজুর রহমান, সোনাডাঙ্গা থানা আমীর জি এম শহীদুল ইসলাম, খালিশপুর থানা আমির মাওলানা আব্দুল­াহ আল মামুন, দৌলতপুর থানা আমির মাওলানা মুশাররফ আনসারী, আড়ংঘাটা থানা আমির মাওলানা নিয়াজ আনসারী, লবণচরা থানা আমির মোঃ মোজাফ্ফর হোসেন, হরিণটানা থানা আমির মাওলানা আব্দুল গফুর প্রমুখ।  

্রিন্ট

আরও সংবদ