খুলনা | বৃহস্পতিবার | ১৭ জুলাই ২০২৫ | ২ শ্রাবণ ১৪৩২

টেস্টেও স্টপ ক্লকের প্রচলন শুরু আইসিসির, পরিবর্তন এলো ডিআরএস নিয়মে

ক্রীড়া প্রতিবেদক |
০৬:০০ পি.এম | ২৬ জুন ২০২৫


আইসিসি সম্প্রতি পুরুষদের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের খেলার নিয়মে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছে। এর মধ্যে রয়েছে বাউন্ডারি আইনের হালনাগাদ সংস্করণ, ওয়ানডেতে ৩৫তম ওভার থেকে একটি বল ব্যবহারের সিদ্ধান্তসহ আরও বেশ কিছু নতুন নিয়ম। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ২০২৫-২৭ চক্রে কিছু নিয়ম ইতোমধ্যে কার্যকর হলেও, সাদা বলের ক্রিকেটে এই পরিবর্তনগুলো চালু হবে ২ জুলাই থেকে।

সাদা বলের ক্রিকেটে এক বছর আগে চালু হওয়া স্টপ ক্লক এবার আসছে টেস্ট ক্রিকেটেও। ধীরগতির ওভাররেট দীর্ঘদিন ধরেই টেস্টের বড় সমস্যা। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, প্রতি ওভারের পর পরবর্তী ওভার শুরু করতে ফিল্ডিং দলকে এক মিনিটের মধ্যে প্রস্তুত থাকতে হবে। দুইবার সতর্কবার্তার পরও নিয়ম ভাঙলে বোলিং দলকে পাঁচ রান জরিমানা গুনতে হবে। প্রতি ৮০ ওভারে সতর্কতা রিসেট হবে। এই নিয়ম ইতোমধ্যে ২০২৫-২৭ টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে চালু হয়ে গেছে।

এছাড়া বলে থুতু ব্যবহার আগেই নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। তবে নতুন নিয়মে বল লাগলে সঙ্গে সঙ্গে বদলানোর বাধ্যবাধকতা তুলে দেওয়া হয়েছে। কেউ ইচ্ছে করে থুতু লাগিয়ে বল বদল করাতে চাইলে সেটা ঠেকাতেই এই সিদ্ধান্ত। বলের অবস্থা যদি দৃশ্যমানভাবে ভিন্ন হয়, খুব ভিজে গেলে বা অতিরিক্ত চকচকে দেখালে তবেই আম্পায়াররা বল বদল করবেন। তবে থুতু লাগিয়ে বল হঠাৎ সুইং বা স্পিন করলে, আম্পায়ার যদি বলেন বলের অবস্থা বদলায়নি, তাহলে বল বদলানো যাবে না। ব্যাটিং দল পাবে পাঁচ রান।

ধরা যাক, ব্যাটারকে কট বিহাইন্ড দিয়ে আউট দেওয়া হয়েছে। ব্যাটার রিভিউ চেয়ে জানায় বল প্যাডে লেগেছে। তাহলে আগে ক্যাচের সিদ্ধান্ত বদলে যাবে। এরপর যদি আম্পায়ার বল ট্র্যাকিং দিয়ে এলবিডব্লিউ দেখেন, আগের নিয়মে ‘আউট’ না হয়ে ‘নট আউট’ থাকত, যদি আম্পায়ার কল হতো। কিন্তু নতুন নিয়মে বল ট্র্যাকিংয়ের গ্রাফিকে ‘মূল সিদ্ধান্ত’ হিসেবে থাকবে ‘আউট’। তাহলে যদি এলবিডব্লিউতে আম্পায়ার কল হয়, সেটিও আউট ধরা হবে।

আগে যদি একই বলে এলবিডব্লিউ ও রান আউট- দুই রিভিউ থাকত, তাহলে টিভি আম্পায়ার আগে আম্পায়ারের রিভিউ নিতেন। এখন থেকে হবে ঘটনাক্রম অনুযায়ী। অর্থাৎ প্রথমে যা ঘটেছে, সেটাই আগে দেখা হবে। উদাহরণ: আগে এলবিডব্লিউ, পরে রান আউট- তাহলে আগে এলবিডব্লিউ দেখা হবে। ব্যাটার আউট হলে রান আউট আর দেখা হবে না, কারণ তখন বল ডেড ধরা হবে।

আগে নো বল হয়ে গেলে ক্যাচ নেওয়া হয়েছে কিনা- তা আর দেখা হতো না। কিন্তু এখন থেকে নো বল হলেও ক্যাচটা ক্লিন কিনা- তা দেখবেন থার্ড আম্পায়ার। যদি ক্যাচটা ক্লিন হয়, তাহলে ব্যাটিং দল শুধু এক রান পাবে। আর ক্যাচটা না ধরা হলে ব্যাটাররা যত রান নিয়েছেন, ততটাই যোগ হবে।

ব্যাটার ইচ্ছা করে রান নেওয়ার সময় পুরো রান না করলে (মানে গ্রাউন্ডে ঢোকেননি) সেটিকে ধরা হবে ‘ডেলিবারেট শর্ট রান’। এই অবস্থায় আম্পায়ার ফিল্ডিং দলকে জিজ্ঞেস করবেন, তারা কাকে স্ট্রাইক-এ রাখতে চায়। পাশাপাশি ব্যাটিং দলকে পাঁচ রান জরিমানা দেওয়া হবে। তবে যদি আম্পায়ার মনে করেন ব্যাটার রানটা নিতেই চেয়েছিলেন, শুধু গ্রাউন্ডে পৌঁছাতে পারেননি- তাহলে সেটি ডেলিবারেট শর্ট রান ধরা হবে না।

কারো যদি বাইরে থেকে আসা ইনজুরি হয় (যেমন মাথায় আঘাত), তাহলে তাকে পুরোপুরি বদলি করার সুযোগ থাকবে। তবে বদলি খেলোয়াড় হতে হবে ‘লাইক ফর লাইক’- অর্থাৎ একই ধরনের খেলোয়াড়। কনকাশনের ক্ষেত্রেও যেমন হয়। হ্যামস্ট্রিং বা হালকা চোটে এই নিয়ম প্রযোজ্য নয়। এটি থাকবে পরীক্ষামূলক পর্যায়ে, এবং সদস্য দেশগুলো চাইলে তাদের ঘরোয়া ফার্স্ট ক্লাসে এটি চালু করতে পারবে।

এই নিয়মগুলো ২ জুলাই থেকে কার্যকর হবে সাদা বলের ক্রিকেটে। টেস্টে কিছু নিয়ম ইতোমধ্যে চালু হয়েছে। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ক্রিকেটকে আরও সুশৃঙ্খল ও ফেয়ার করে তুলতেই এসব পরিবর্তন আনছে আইসিসি।

্রিন্ট

আরও সংবদ