খুলনা | রবিবার | ২৯ জুন ২০২৫ | ১৫ আষাঢ় ১৪৩২

ঘটনার পর ৩৬ ঘন্টা অতিবাহিত

উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়নি মোংলার পশুর চ্যানেলে ডুবে যাওয়া কার্গো জাহাজ

মোংলা প্রতিনিধি |
০১:৩৪ এ.এম | ২৯ জুন ২০২৫


ঘটনার ৩৬ ঘন্টা অতিবাহিত হলেও এখন উদ্ধার তৎপরতা শুরু হয়নি মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলের ত্রি-মোহনায় ডুবে যাওয়া কার্গো জাহাজ “এমভি মিজান-১”। শুক্রবার রাতে মোংলা থানায় সাধারণ ডায়রী করতে গেলে পুলিশ তা না নিলেও দাকোপ থানায় জিডি করেছে জাহাজের মাস্টার মোঃ বেল্লাল হোসেন। অন্য লাইটারের সংঘর্ষে কার্গো জাহাজ ডুবিতে প্রায় ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিক ধারণ করেছে পণ্য আমদানীকারক ও জাহাজ মাস্টারসহ মালিক পক্ষ। এ সময় জাহাজে থাকা ১০ নাবিক সাঁতার কেটে জীবিত উদ্ধার হলেও তাদের মূল্যবান মালামাল কিছুই রক্ষা করতে পারেনি। তবে কার্গো ডুবিতে বন্দরের মূল চ্যানেলের তেমন ক্ষতি না হলেও কার্গো ও লাইটার জাহাজের দুই মালিক পক্ষকে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার জন্য তাগিদ দিয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষ।
পন্য বোঝাই ডুবন্ত কার্গো জাহাজের মাস্টার মোঃ বেল্লাল হোসেন জানান ভারতের কলকাতার ভেন্ডেল থেকে ৯১৪ মেট্রিক টন ফ্লাইঅ্যাশ (সিমেন্ট তৈরির কাঁচামাল) বোঝাই করে ঢাকার মেঘনা ব্রিজের পাশে হোলসিম সিমেন্টস ফ্যাক্টরিতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন তারা। পথি মধ্যে মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেল ও ঘষিয়াখালী ত্রি-মোহনায় যাত্রা বিরতি ও খাদ্য সামগ্রী কেনার জন্য অবস্থার করছিলেন। সকালে হঠাৎ করে বিপরীত দিক থেকে আসা অন্য একটি খালী বড় লাইটার জাহাজ “এমভি কে আলম গুলশান-২” এর কার্গোটির সাথে সংঘর্ষ হয় এবং তাদের জাহাজের ওপর উঠিয়ে দেয়। এতে পন্য বোঝাই কার্গো জাহাজ মিজান-১” এর তলা ফেটে মুহূর্তের মধ্যে ডুবে যায়। এ সময় মাস্টারসহ জাহাজে থাকা ১০ নাবিক অন্য নৌযানের সহায়তায় সাতার কেটে কিনারে উঠতে সক্ষম হন। কার্গো জাহাজে থাকা নাবিকরা প্রানে বেঁচে গেলেও তাদের নগদ টাকা ও মুল্যবান মালামাল কিছুই রক্ষা করতে পারেনি। তারা এখন মোংলা বন্দরের একটি আবাসিক হোটেলে অবস্থান করছে।
মাস্টার আরো জানান কার্গো ডুবির পর অন্যান্য নাবিকদের নিয়ে প্রথমে মোংলা থানায় সাধারণ ডায়রি করতে যাওয়া হয়। তবে পশুর চ্যানেলটি দুই থানার মধ্যবর্তী হওয়ায় মোংলা থানার ওসি মোঃ আনিসুর রহমান জিডি নিতে রাজি হননী। পরবর্তীতে পার্শ্ববর্তী দাকোপ থানায় রাতে জিডি করা হয়েছে। কার্গো ডুবিতে ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে ধারনা জাহাজ মাস্টার বেল্লাল হোসেনের। তবে এ ঘটনায় এখনও কোন মামলা করা হয়নি। কারণ কার্গো ও লাইটার জাহাজের দুই মালিক পক্ষ একে অপারের সাথে যোগাযোগ হচ্ছে, পণ্য আমদানিকারকদের সাথে সমঝোতা হওয়ার সম্ভাবনা আছে বলেও জানান তিনি। আর ডুবন্ত কার্গো জাহাজটি তলা ফেটে দুই ভাগ হয়ে পুরোপুরি ডুবে রয়েছে এবং জাহাজের থাকা ফ্লাইএ্যাস অধিকাংশই নদীতে ভেসে গেছে। 
এদিকে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের উপ-পরিচালক মোঃ মাকরুজ্জামান বলেন মোংলা পশুর নদী ঘষিয়াখালী ত্রি-মোহনায় কার্গো জাহাজ ডুবির ঘটনায় বন্দরের হারবার বিভাগের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শনসহ ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে হারবার বিভাগের সদস্য সেখানে অবস্তান করছে। এছাড়া ডুবন্ত কার্গো জাহাজটির দুর্ঘটনা কবলিত স্থান চিহ্নিত করার জন্য মার্কিং করে রাখা হয়েছে। সাপ্তাহিক ছুটিতে বন্দরের অফিস বন্ধ থাকায় মৌখিক ভাবে দুই মালিক পক্ষকে ডুবন্ত কার্গোটি দ্রুত উত্তোলনের জন্য তাগিদ দেয়া হয়েছে। রোববার বন্দরের পক্ষ থেকে অফিসিয়াল ভাবে পশুর চ্যানেল থেকে ডুবন্ত কার্গো জাহাজটি উত্তোলন করে চ্যানেল ঝুঁকি মুক্ত রাখার জন্য মালিক পক্ষকে চিঠির মাধ্যমে জানিয়ে দেয়া হবে। তাদেরকে ১৫ দিনের সময় বেধে দেয়া হবে, যদি ডুবন্ত কার্গো জাহাজটি উঠাতে ব্যর্থ হয় তা হলে বন্দরের নিজেস্ব সম্পদ হিসেবে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের নির্দেশনায় বন্দরই ব্যবস্থা নেবে বলে জানায় তিনি। এছাড়া, ডুবন্ত কার্গোটি মেইন চ্যানেল থেকে অনেকটা দূরে ডুবে আছে। বন্দরে পণ্য বোঝাই জাহাজ আগমন নির্গামনের মূল চ্যানেল সুরক্ষিত রয়েছে। পণ্যবাহী জাহাজ বা অন্যান্য নৌযান চলাচল স্বাভাবিক-মূল চ্যানেল সম্পূর্ণ ঝুঁকি মুক্ত। 

্রিন্ট

আরও সংবদ