খুলনা | সোমবার | ৩০ জুন ২০২৫ | ১৬ আষাঢ় ১৪৩২

অবশেষে পাকিস্তানের হাতে যুদ্ধবিমান হারানোর কথা স্বীকার করল ভারত

খবর প্রতিবেদন |
০১:৩৩ পি.এম | ৩০ জুন ২০২৫


প্রথমবারের মতো ভারতের একজন প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা স্বীকার করেছেন যে পাকিস্তানের সঙ্গে সাম্প্রতিক বড় আকারের সংঘর্ষে পালটি হামলায় ভারতের যুদ্ধবিমান ভূপাতিত হয়েছে।

দ্য ওয়ায়ারের খবরে বলা হয়েছে, এই ক্ষতির জন্য ভারতের সামরিক ব্যর্থতাকে নয়, বরং দিল্লির ‘রাজনৈতিক সীমাবদ্ধতাকে’ দায়ী করা হয়েছে। খবর জিও নিউজের।

ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তায় এক সেমিনারে বক্তব্য দিতে গিয়ে ভারতের নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেন শিব কুমার নিশ্চিত করেন, গত ৭ মে পাকিস্তান এয়ারফোর্সের (পিএএফ) সঙ্গে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর সবচেয়ে বড় আকাশযুদ্ধে ভারতীয় জেট ভূপাতিত হয়েছিল।

‘হ্যাঁ, আমরা কিছু বিমান হারিয়েছি,’ দ্য ওয়ায়ারের বরাত দিয়ে কুমারের স্বীকারোক্তি প্রকাশ করা হয়েছে।

জাকার্তায় ভারতীয় দূতাবাস থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী রাজনৈতিক নেতৃত্বের অধীনে কাজ করে, যা আমাদের প্রতিবেশী কিছু দেশের মতো নয়।

তবে, কুমার সঠিক কতগুলো বিমান হারিয়েছে তা জানাননি, শুধু বলেছেন, ‘যত বলা হচ্ছে, ততটা নয়।’

তিনি বলেন, ভারতের বেসামরিক রাজনৈতিক নেতৃত্ব পাকিস্তানের সামরিক স্থাপনা টার্গেট না করার নির্দেশনা দিয়েছিল, যা পাকিস্তানের জন্য একটি ‘অপারেশনাল সুবিধা’ তৈরি করে।

ভারতে এই বিরল স্বীকারোক্তি রাজনৈতিক আলোড়ন তৈরি করেছে। তবে কুমার বলেছেন, ‘আমি একমত নই যে আমরা এতগুলো বিমান হারিয়েছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘এই ক্ষতির পর আমরা আমাদের কৌশল পরিবর্তন করি এবং পাকিস্তানের সামরিক স্থাপনাগুলোকে লক্ষ্য করি।

প্রথমে আমরা তাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দমিয়ে দিই, তারপর সহজেই ব্রাহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে আমাদের আক্রমণ কার্যকর করি।’

দ্য ওয়ায়ারের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কুমার জানিয়েছেন, মোদি সরকারের কড়া নির্দেশনার কারণে ভারতীয় যুদ্ধবিমানগুলো পাকিস্তানের সামরিক স্থাপনা বা এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম টার্গেট করতে পারেনি।

এর আগে সিঙ্গাপুরে ব্লুমবার্গকে দেওয়া এক বিবৃতিতে ভারতের চিফ অব ডিফেন্স স্টাফ জেনারেল অনিল চৌহান বলেন, ‘কতগুলো বিমান হারিয়েছি সেটাই বড় বিষয় নয়, বরং কেন হারিয়েছি, সেটাই আসল বিষয়।’

পাকিস্তান এয়ারফোর্স (পিএএফ) এর আগে জানায়, ৭ মে রাতে হওয়া সংঘর্ষে তারা ছয়টি ভারতীয় যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে।

ওই সংঘর্ষের আগে ভারত পাকিস্তানের সিয়ালকোট, বাহাওয়ালপুর এবং আজাদ কাশ্মীরসহ ছয়টি স্থানে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়।

যেসব বিমান ভূপাতিত হয়েছে, তার মধ্যে তিনটি ফ্রান্সের তৈরি রাফালে জেটও ছিল, যা ভারতের আকাশ প্রতিরক্ষার বড় সংযোজন হিসেবে বিবেচিত হতো।

এই সংঘাতের আগে ভারতীয় অধিকৃত জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে এক হামলায় ২৬ জন পর্যটক নিহত হন। ভারত এর জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে, যদিও পাকিস্তান তা ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রত্যাখ্যান করে।

ওই ঘটনা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে সবচেয়ে বড় সামরিক উত্তেজনা তৈরি করে।

ভারতের বিরোধী দল কংগ্রেস মোদি সরকারের সমালোচনা করে বলেছে, ‘অপারেশন সিদুঁর’ চলাকালে কত বিমান হারিয়েছে তা জনগণকে না জানিয়ে সরকার জাতিকে বিভ্রান্ত করেছে।

দুই পারমাণবিক শক্তিধর প্রতিবেশীর মধ্যে এই যুদ্ধ সাম্প্রতিক সময়ের অন্যতম বড় সামরিক উত্তেজনা হিসেবে অঞ্চলজুড়ে উদ্বেগ বাড়িয়েছে।

্রিন্ট

আরও সংবদ