খুলনা | মঙ্গলবার | ০১ জুলাই ২০২৫ | ১৭ আষাঢ় ১৪৩২

প্রাথমিক ও মাধ্যমিকে নিম্নমানের বই দায়ীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনুন

|
১২:০৫ এ.এম | ০১ জুলাই ২০২৫


জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) বিভিন্ন কাজে দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ নতুন নয়। বস্তুত এনসিটিবি কর্তৃক বিনামূল্যের পাঠ্যবই মুদ্রণ ও বিতরণসহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন কাজে দুর্নীতি বিগত সরকারের আমলে অনেকটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছিল। বেশ কয়েক বছর আগে প্রকাশিত টিআইবি’র এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, প্রাথমিক থেকে মাধ্যমিক পর্যন্ত বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তকের পাণ্ডুলিপি তৈরি, ছাপা ও বিতরণ পর্যায়ে বিভিন্ন ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়। ওই প্রতিবেদনে আরও উলে­খ করা হয়েছিল, এনসিটিবির কর্মকর্তারাও এসব অনিয়মের সঙ্গে জড়িত। এ প্রেক্ষাপটে এ বছর এনসিটিবি কর্তৃক বিনামূল্যের পাঠ্যবই মুদ্রণ ও বিতরণসহ সংশ্লিষ্ট সব কাজে দুর্নীতি ও অনিয়মের ঠেকাতে বিশেষ পদক্ষেপ নেওয়া হবে, এটাই ছিল প্রত্যাশিত। দুঃখজনক হলো, এ বছরও এনসিটিবি কর্তৃক প্রকাশিত পাঠ্যবইয়ের মুদ্রণ ও বিতরণসহ বিভিন্ন কাজে দুর্নীতি-অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল যুগান্তরে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরে বিনামূল্যের পাঠ্যবই ছাপাতে এবারও ব্যাপক দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে বেশির ভাগ মুদ্রণ প্রতিষ্ঠান। দরপত্র না মেনে নিম্নমানের বই ছাপানোর কারণে এনসিটিবি প্রাথমিক স্তরে ৪৮ ও মাধ্যমিক স্তরের ২৯টি মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানকে চিঠি দেয়। গত সপ্তাহে ওই চিঠি হাতে পাওয়ার ১৪ দিনের মধ্যে দরপত্র অনুযায়ী মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানগুলোকে আবার বই প্রতিস্থাপন করার নির্দেশ দিয়েছিল প্রতিষ্ঠানটি। এর বাইরে বেশকটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে; যারা শিক্ষার্থীদের নিম্নমানের বই দিয়েও ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়েছে। অন্যদিকে অনিয়মে অভিযুক্ত কিছু মুদ্রণ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বই প্রতিস্থাপন না করে ভুয়া ছাড়পত্র দেখিয়ে বিল উঠিয়ে নেওয়ারও অভিযোগ উঠেছে
জানা যায়, চলতি শিক্ষাবর্ষে মাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রায় ৩০ কোটি বই ছাপানো হয়েছে। সেসব বইয়ের মান যাচাই করতে পোস্ট ল্যান্ডিং ইনস্পেকশনের (পিএলআই) এজেন্ট হিসাবে একটি প্রতিষ্ঠানকে নিয়োগ দেয় এনসিটিবি। এ এজেন্সির সারা দেশ থেকে বইয়ের নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাব টেস্টের পর প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা থাকলেও তাদের প্রতিবেদনে প্রকৃত চিত্র উঠে আসেনি বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রাথমিকের বইয়ের মান যাচাইয়ের ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। কেন এমন ঘটনা ঘটল, দ্রুত তা খতিয়ে দেখতে হবে। ত্র“টিযুক্ত ও নিম্নমানের পাঠ্যবই শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দিয়ে এনসিটিবি বছরের পর বছর যে অমার্জনীয় অপরাধ করে চলেছে, এ বিষয়ে আমরা বারবার উদ্বেগ প্রকাশ করলেও কেন সরষের ভেতরের ভূত তাড়ানো সম্ভব হচ্ছে না, এটা এক বড় বিস্ময়। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে যেভাবেই হোক মানসম্মত ও ত্র“টিমুক্ত পাঠ্যবই তুলে দিতে হবে। যাদের কারণে এনসিটিবি কর্তৃপক্ষ এ লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হচ্ছে, তাদের সবাইকে আইনের আওতায় আনা হবে, দেশবাসী এটাই দেখতে চায়।

্রিন্ট

আরও সংবদ