খুলনা | রবিবার | ০৬ জুলাই ২০২৫ | ২২ আষাঢ় ১৪৩২

শ্যামনগরে প্যান্ডামিক ফিসারিজ মৎস্য প্রজেক্টটি দখলের পাঁয়তারা

শ্যামনগর প্রতিনিধি |
১১:৩৯ পি.এম | ০৫ জুলাই ২০২৫


সাতক্ষীরার শ্যামনগরের মুন্সিগঞ্জের হরিনগরস্থ প্যান্ডামিক ফিসারিজ লিঃ-এর ১ হাজার ২ শত বিঘার মৎস্য প্রকল্পটি অবৈধভাবে দখলের পাঁয়তারার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পান্ডামিক ফিসারিজ নামীয় প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজার উত্তর কদমতলা গ্রামের লুৎফর রহমানের পুত্র আব্দুল­াহ আল কাইয়ুম শ্যামনগর থানায় সাধারণ ডায়েরী করেছেন ( নং: ৮৫, তাং- ০২/০৭/২০২৫)।
লীজ ডিড সূত্রে প্রকল্পের মালিক ও পরিচালনাকারী প্যান্ডামিক ফিসারিজ লিমিটেড এই প্রতিষ্ঠানটি জয়েন্ট স্টক কোম্পানী কর্তৃক রেজিস্ট্রিকৃত ও বিধিগতভাবে সরকার অনুমোদিত। প্রতিষ্ঠানটি তিন শতাধিক মালিকের কাছ থেকে তাদের জমি ৩১ জুলাই ২০২০ হতে ৩০ জুলাই ২০৩৫ পর্যন্ত ১৫ বছরের লীজ নিয়ে ৫ বছর নিরাপদে ও ঝামেলামুক্তভাবে করতে ছিল। দেশের পট পরিবর্তনের স্থানীয় প্রভাবশালী কিছু ব্যক্তি প্রজেক্টটিতে ৩ কোটি টাকা দাবি করলে টাকা না দেয়ায় জাল-জালিয়াতি ক্রমে অবৈধ কাগজ তৈরি করে মাছ লুটপাট এবং প্রকল্প দখলের অপচেষ্টা করছে। এদিকে স্থানীয়রা জানান, প্যান্ডামিক ফিসারিজের লীজ ৩০ জুলাই ২০৩৫ পর্যন্ত। অথচ ১ জুলাই ২০২৫ হতে ৫ বছরের মৎস্য ঘের জলকরের লীজ চুক্তিপত্র কালিগঞ্জের বন্দকাটি গ্রামের মরহুম আব্দুস সাত্তারের পুত্র এএমএম সালাহ উদ্দীন ও  সাতক্ষীরার আবুল কাশেম এর পুত্র মোঃ তাহমিদ সাহেদ (চয়ন) চুক্তিপত্র করার চেষ্টা করছেন তা অবৈধ। 
স্থানীয়রা আরোও জানান, মোঃ তাহমিদ সাহেদ (চয়ন) হলেন সাতক্ষীরা জেলা বিএনপি’র যুগ্ম-আহবায়ক ও সাতক্ষীরা সাবেক পৌর মেয়র তাজকিন আহমেদ ( চিশতী)-এর ভাই। তার ভাইয়ের রাজনৈতিক প্রভাবের প্রেক্ষিতে রাজনৈতিক পরিচয়ের দৌহাই দিয়ে চয়ন মৎস্য প্রজেক্ট টি অবৈধভাবে দখল নিতে অপচেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে । যে কোন মুহূর্তে মাছ লুটপাট করে প্রজেক্ট অবৈধভাবে দখল হলে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষসহ জানমালের ব্যাপক ক্ষতি হতে হওয়ার আশু সম্ভবনা রয়েছে। প্যান্ডামিক ফিসারিজ লিঃ জমির মালিকদের থেকে ১৫ বছর মেয়াদী লীজ নিয়ে পতিত অবস্থায় ২০২০ সাল হতে প্রকল্পটি ঝামেলা মুক্ত ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে পরিচালনা করে আসছেন। প্রজেক্ট ম্যানেজার আবদুল­া আল কাইয়ুম আরো জানান, স¤প্রতি একই এলাকার  আবুল কাশেম, ফারুক হোসেন, শাওন হোসেন, মফিজ মোড়ল, শাহবাজ আলী ও আলমগীর হোসেনসহ কয়েকজন অবৈধভাবে জোর পূর্বক প্রজেক্টটি দখলের অপচেষ্টা করছেন। আবুল কাশেমের নেতৃত্বে এ সকল ব্যক্তিবর্গ এবং তাদের লোকজন জমির মালিকদের কাছে যেয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে তাদেরকে প্রলোভন, ভয়ভীতি ও প্যান্ডামিক ফিসারিজ লিঃ এর সাথে ১৫ বছর মেয়াদী চুক্তির অপব্যাখ্যা দিয়ে বিভিন্ন কাগজে স্বাক্ষর নেওয়ার অপচেষ্টায় লিপ্তর অভিযোগে বিষয়টি নজরে আসে। তিনি আরো জানান যে, তাদের অবৈধ কর্মকান্ড ও মৎস প্রকল্পটি জোর পূর্বক দখলের অপচেষ্টা রোধের জন্য থানা, জেলাএসপি ও সেনা ক্যাম্পে অভিযোগ করা হয়েছে। কিন্ত তারা বেপরোয়া।  প্রজেক্টে বর্তমানে প্রায় ১৫ কোটি টাকার রুই, কাতলা সহ চিংড়ী মাছ রয়েছে। 
আবুল কাশেম  তাদের উপর আনীত অভিযোগ গুলো অস্বীকার করে জানান, প্রজেক্ট প্রতিষ্ঠাতা মেসার্স শাওন ফিস কর্তৃপক্ষ ২০১৯ সালের জমির হারীর টাকা পরিশোধে ব্যর্থ হওয়ায় ডিডের শর্ত ভঙ্গ করায় ঐ লীজ ডিড বাতিল হলে সমস্ত অস্থাবর সম্পত্তি জমির মালিকগণ নিয়ে নিয়েছিল। 
স্থানীয়রা জানান, তখন জমির মালিকগণ তাদের জমির শ্রেণি পরিবর্তন হওয়ায় এবং হারীর টাকা না পেয়ে প্রজেক্টটি পতিত অবস্থায় থাকলে তারা দিশেহারা হয়ে পড়ে। তখন তাদের দৈন্যদশা দূরীভুত করতে প্যান্ডামিক ফিসারিজ লিমিটেড কর্তৃপক্ষ তাদের পাশে দাঁড়ায় এবং ১৫ বছরের জন্য জমির ডিড প্রদান করেন। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য প্যান্ডামিক ফিসারিজ লিঃ এর মালিকপক্ষ যথাযথ রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ সহ কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে।

্রিন্ট

আরও সংবদ