খুলনা | শুক্রবার | ১১ জুলাই ২০২৫ | ২৭ আষাঢ় ১৪৩২

নির্বাচনের প্রস্তুতির নির্দেশ, প্রধান উপদেষ্টাকে ধন্যবাদ ফখরুলের

খবর প্রতিবেদন |
০৫:০৫ পি.এম | ১০ জুলাই ২০২৫


নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশনা দেওয়ায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। এই নির্দেশনা দ্রুত বাস্তবায়ন করে ‘নির্বাচনের পরিবেশ’ তৈরি করতে তিনি নির্বাচন কমিশনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (১০ জুলাই) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনা সভায় বিএনপি মহাসচিব এই আহ্বান জানান।

বুধবার প্রধান উপদেষ্টা সংশ্লিষ্টদের নিয়ে দীর্ঘ বৈঠক করেন। সেখানে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজনে ডিসেম্বরের মধ্যে প্রস্তুতি সম্পন্ন করার নির্দেশনা দেন।

এ প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমি আজকে প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসকে ধন্যবাদ দিতে চাই এই ফোরাম থেকে যে, তিনি নির্দেশ দিয়েছেন ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের সব কাজ গুছিয়ে রাখার জন্য নির্বাচন কমিশনকে… এটা অত্যন্ত ইতিবাচক ব্যাপার । আমরা আশা করব যে, নির্বাচন কমিশন এই কাজ (নির্বাচনের প্রস্তুতি) খুব দ্রুততার সঙ্গে শেষ করে তারা একটা নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করবেন। আমরা দাবি করছি যেন এই নির্বাচন অবাধ, নিরপেক্ষ এবং সকলের কাছে গ্রহনযোগ্য হয় সেই ধরনের গ্রহণযোগ নির্বাচন নির্বাচন কমিশন উপহার দিতে পারে এবং সেইভাবে যেন তার কাজ করেন।’

‘নির্বাচন হবে কি হবে না’ রাজনৈতিক অঙ্গনে এমন গুঞ্জনের জবাব দিয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, আমি খুব আশাবাদী মানুষ। এখানে মান্না ভাই (মাহমুদুর রহমান মান্না) জানতে চেয়েছেন নির্বাচন হবে কি হবে না। অনেকে বলেছেন যে, হবে না। কেন? নির্বাচন তো এদেশের মানুষ চায়, নির্বাচনের জন্য তো এদেশের মানুষ প্রাণ দিয়েছে। কারণ মানুষ একটা নির্বাচিত প্রতিনিধিত্ব চায় পার্লামেন্টের মধ্য দিয়ে। এ জিনিসগুলো নিয়ে আমি মনে করি কোনো সমস্যা নেই। সমস্যা হলো যে, যত দ্রুত সম্ভব আমরা সংস্কারের কাজগুলো করে আমরা নির্বাচিত সরকারের দিকে যাই, গণতন্ত্র উত্তরণের পথে যাই।

জাতীয় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজের যৌথ উদ্যোগে জুলাই ‘ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে সাংবাদিকদের ভূমিকা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।

অনুষ্ঠানে ফ্যাসিবাদবিরোধীসহ জুলাই আন্দোলনে শহীদ ৬৪ জন সাংবাদিকদের ওপর শোক প্রস্তাব উত্থাপন করেন ডিইউজের সহসভাপতি রাশেদুল হক।

অনুষ্ঠানে বিএফইউজের প্রয়াত সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর পরিবার এবং জুলাই অভ্যুত্থানে শহীদ ছয় সাংবাদিকের পরিবারের হাতে সন্মাননা প্রদান করেন বিএনপি মহাসচিব।

অনুষ্ঠানের শুরুতে বিএনপি মহাসচিব জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার, নাগরিক ঐক্যে সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্নাকে নিয়ে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলন ও জুলাই ছাত্র-জনতা আন্দোলনের একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন।

‘সংসদ নির্বাচন কেন চাই’
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘আমরা সংসদ নির্বাচন করতে চাই। কেন? নির্বাচন যদি সংসদের না হয় তাহলে দেশে একটা অন্ধকারী শক্তি আবার ক্ষমতায় আসবে। অতএব আমাদের সর্বাত্মকভাবে চেষ্টা করতে হবে যাতে নির্বাচন হয়। আমি মনে করি, নির্বাচন একটা হবে সেই নির্বাচন সবাইকে করতে হবে। যারা মনে করছে যে, এভাবে নির্বাচন করা যাবে না তারাও দেখবেন এভাবে যদি নির্বাচন না করি তাহলে যেই অবস্থা আসবে, যেই ভাব তৈরি হবে সেইভাবে ভাবের মধ্যে রাজনীতিই করতে পারবেন না। এই কারণে সবাই যুক্তির কাছে আসতে হবে।’

মান্না বলেন, ‘গণতন্ত্র মানে খালি মেজরিটি মাইনোরিটি না, গণতন্ত্র মানে সঠিকতা বেঠিকতা, গণতন্ত্র মানে সত্য-মিথ্যা, গণতন্ত্র মানে ভুল-নির্ভুল এবং তার বিপরীতে সঠিক একটা পথ বের করা। সেই চেষ্টা আমরা সবাই মিলেই করছি। যেগুলো এখন আমরা একমত হতে পারব না… রেখে দেবো। আগামী দিন যারা ক্ষমতায় আসবে তারা সেই বিষয়গুলো যদি পছন্দ করেন তাহলে চেষ্টা করবেন। কারো কারো মনে হচ্ছে যে, ভাই এখনই মানে নাই তখন তো মানবেই না। যদি কোনো কারণে টু-থার্ড মেজরিটি পেয়ে যায় তাহলে তাদের সঙ্গে কথাই বলা যাবে না…টু-থার্ড মেজরিটিতে সব কিছু বদলাবে। কথাটা উঠে গেলো বলে বলেই ফেলি, আমি মনে মনে ব্যক্তিতভাবে কোনো দলই আগামী নির্বাচনে টু-থার্ড পাওয়া উচিত নয়। আমি জানি এখানে যারা আছেন তাদের অধিকাংশ একটা দলের ভক্ত। কিন্তু কোনো দলের ভক্ত হওয়ার … এখন কাজ গণতন্ত্রের পক্ষে যাওয়ার।’

ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহীদুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক খুরশীদ আলমের সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য অধ্যাপক এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আবদুস সালাম, জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, বিএফইউজের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ওবায়দুর রহমান শাহীন, মহাসচিব কাদের গণি চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি হাসান হাফিজ, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক আবদুল হাই শিকদার, সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ইলিয়াস খান, একে এম মহসিন, ইরফানুল হক জাহিদ, সাঈদ খান, দিদারুল আলম প্রমুখ।

্রিন্ট

আরও সংবদ