খুলনা | শনিবার | ১২ জুলাই ২০২৫ | ২৮ আষাঢ় ১৪৩২

রাজধানীতে ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্যে পাথর মেরে হত্যায় তোলপাড়, গ্রেফতার ৪, দু’জন রিমান্ডে

খবর প্রতিবেদন |
০১:৫১ এ.এম | ১২ জুলাই ২০২৫


রাজধানীর পুরান ঢাকায় মিটফোর্ড হাসপাতালের সামনে লাল চাঁদ ওরফে মোঃ সোহাগ (৩৯) নামের এক ব্যবসায়ীকে ব্যবসায়ীকে পিটিয়ে হত্যার ঘটনায় দুই আসামির রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শুক্রবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত মাহমুদুল হাসান মহিনকে পাঁচ দিন ও তারেক রহমান রবিনকে দুই দিন রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 
এর আগে শুক্রবার ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশন্স বিভাগ থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয় বুধবার (৯ জুলাই) সন্ধ্যায় রাজধানীর স্যার সলিমুল­াহ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের তিন নম্বর গেটের সামনে পাকা রাস্তার ওপর একদল লোক লাল চাঁদ ওরফে সোহাগ নামে এক ব্যক্তিকে এলোপাতাড়িভাবে আঘাত করে ও কুপিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করে। ঘটনার সংবাদ পাওয়ার পর কোতোয়ালি থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে যায় এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পরবর্তীতে পুলিশ নিহতের লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন প্রস্তুত করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য তা হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। এ ঘটনায় নিহতের বড় বোন বাদী হয়ে কোতোয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এতে আরও বলা হয়েছে, পুলিশ ঘটনাস্থলের সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করে এবং রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা এজাহার নামীয় আসামি মাহমুদুল হাসান মহিন (৪১) ও তারেক রহমান রবিনসহ (২২) চার জনকে গ্রেফতার করে। এ সময় তারেক রহমান রবিনের হেফাজত থেকে একটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার করা হয়।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে জানা যায়, ব্যবসায়িক দ্ব›দ্ব এবং পূর্ব শত্র“তার জের ধরে এই ঘটনা সংঘটিত হয়। ঘটনার প্রকৃত কারণ অনুসন্ধানে এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্যান্যদের গ্রেফতারে পুলিশী অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে র‌্যাব আরও দু’জনকে গ্রেফতার করেছে। এ নিয়ে মোট চারজনকে গ্রেফতার করা হলো। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
স্থানীয়রা বলছেন, ব্যবসার নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আরেকটি ব্যবসায়ী চক্রের সঙ্গে তার বিরোধ চলছিল। এর জের ধরে মঙ্গলবার রাতের গুলি এবং বৃহস্পতিবারের হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
নিহত লাল চাঁদ ওরফে মোঃ সোহাগ রাজধানীর ৩০ নং ওয়ার্ড যুবদল কর্মী বলে জানা গেছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, সোহাগ হত্যায় জড়িতদের মধ্যে ছিলেন টিটু, মনির, অপু দাস, মঈন ও পলাশসহ তাদের সহযোগীরা।
তবে নিহতের বন্ধু মামুন দাবি করেছে, দুই তিন মাস ধরে মঈন প্রতি মাসে চাঁদা দাবি করত সোহাগের কাছে। সোহাগ টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে কিছুদিন আগে দোকানের সামনে এসে তাকে ‘দেখে নেয়ার হুমকি দিয়ে চলে যায়। বুধবার সন্ধ্যায় সোহাগকে একা পেয়ে মঈনসহ ৪-৫ জন মিলে পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করে নির্মমভাবে হত্যা করে। নির্যাতনের সময় তারা তার পরনের পোশাকও খুলে ফেলে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। আমরা কেউ ভয়ে এগিয়ে যেতে পারিনি। কারণ মঈন যুবদলের চকবাজার থানার সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী। তার বিরুদ্ধে মিটফোর্ড হাসপাতালের ফুটপাত ও কেমিক্যাল ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে চাঁদা তোলার অভিযোগ রয়েছে। এমনকি হাসপাতালের তৃতীয় শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগেও মোটা অঙ্কের ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
এদিকে পাথর নিক্ষেপ করে প্রকাশ্যে সোহাগকে হত্যা করার ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাইরাল হয়েছে। ফেসবুকে অনেকেই এর নিন্দা জানিয়েছেন।

্রিন্ট

আরও সংবদ