খুলনা | মঙ্গলবার | ১৫ জুলাই ২০২৫ | ৩১ আষাঢ় ১৪৩২

বৃষ্টিতে কৃষকের ক্ষতি সরকারি সহায়তা ও পদক্ষেপ জরুরি

|
১২:২৪ এ.এম | ১৪ জুলাই ২০২৫


ভারী বর্ষণ আর পাহাড়ি ঢলে দেশের ২১টি জেলা জলাবদ্ধতার শিকার হয়েছে। যার ফলে ৭২ হাজার ৭৬ হেক্টর জমির ফসল পানিতে ডুবে গেছে। আউশ, আমন বীজতলা, শাকসবজি, পাট, ফলবাগানসহ বিভিন্ন ফসল তলিয়ে যাওয়ায় কৃষকদের মাথায় হাত। ফলে আগামী কয়েক মাসে কৃষি উৎপাদন নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। উৎপাদন ব্যাহত হলে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখাও কঠিন হবে। কৃষককে বাঁচাতে, ভোক্তার স্বার্থে সর্বোপরি খাদ্যনিরাপত্তা নিশ্চিত রাখতে সরকারকে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
কৃষি মন্ত্রণালয় ও কৃষি স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে কুমিল­া, নোয়াখালী ও ফেনী জেলা। এসব জেলার কৃষকদের কাছে দ্রুত ছুটে যেতে হবে জেলা প্রশাসন, কৃষি বিভাগসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। ফেনী ও নোয়াখালীর পরিস্থিতি আলাদাভাবে বলতেই হয়। গত বছরেও স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার শিকার হয়েছিল এ দুই জেলা।
এখনো বন্যার সেই ক্ষত সারেনি। এবার আবারও একটা ধাক্কা খেতে হলো জেলা দু’টিকে। বৃষ্টি থেমে যাওয়ায় ফেনী ও নোয়াখালীর বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হয়েছে। মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্র থেকে ঘরে ফিরতে শুরু করেছে। তবে এখনো অনেক এলাকায় পানিবন্দী হয়ে আছে হাজারো মানুষ। অসংখ্য ঘরবাড়ি ভেঙেছে, গ্রামীণ সড়কগুলো এখনো জলমগ্ন। পুকুর ও হ্যাচারির খামারিরাও ব্যাপক ক্ষতির শিকার হয়েছেন।ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য যে টাকা সরকার থেকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।
উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এই দুই জেলার বন্যা ও জলাবদ্ধতা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। মুসাপুর রেগুলেটর, বামনী ক্লোজার ও ফেনীতে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ প্রকল্পের নকশা চূড়ান্ত করা এবং নোয়াখালীর খাল ও ড্রেনেজ অবমুক্ত করার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কথা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের অর্থায়নে ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত ও তীর প্রতিরক্ষা কাজের কথাও জানানো হয়েছে। আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, জুলাই মাসে এমন বৃষ্টি স্বাভাবিক। তাহলে কেন আমাদের বাঁধগুলো এই স্বাভাবিক বৃষ্টিতেই ভেঙে পড়ছে? কেন লাখো মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ছেন? ৭ হাজার ৩৪০ কোটি টাকার যে বাঁধ মেরামত প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, তা কেন বাস্তবায়িত হচ্ছে না? আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘসূত্রতা, রাজনৈতিক আনুকূল্যের অভাব বা ঠিকাদার-সংক্রান্ত ঝামেলা যা-ই হোক, সেসব জটিলতা দূর করে জনদুর্ভোগ দূর করুন।
অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও দুর্বল নিষ্কাশন ব্যবস্থার কারণে জেলার শহর এলাকায় জলাবদ্ধতা ঘটছে। মানুষ ত্রাণ বা চিড়া-গুড় নয়, চায় স্থায়ী সমাধান। দেশের পূর্বাঞ্চল এখন বন্যাপ্রবণ এলাকায় পরিণত হচ্ছে। সেখানকার কৃষি ও জনজীবন রক্ষায় বাড়তি মনোযোগ দরকার।

্রিন্ট

আরও সংবদ