খুলনা | বুধবার | ১৬ জুলাই ২০২৫ | ১ শ্রাবণ ১৪৩২

ডুমুরিয়ায় ভারি বৃষ্টি : দ্রæত পানি নিষ্কাশনের দাবি

শঙ্কিত কৃষিজীবী, মিষ্টি কুমড়াসহ ১০ কোটি টাকার সবজি নষ্ট!

ডুমুরিয়া প্রতিনিধি |
০২:২২ এ.এম | ১৪ জুলাই ২০২৫


ডুমুরিয়ায় ৬ জুলাই থেকে শুরু হওয়া ১০ জুলাই পর্যন্ত ৪ দিনের টানা ভারি বৃষ্টিতে কুমড়াসহ বিভিন ধরণের শাক-সবজির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষেতে পানি জমে কাঁঠালতলা বাজার সংলগ্ন গোবিন্দকাটি পাটনপাড়া বিলের প্রায় ১০ একর জমির ফলন্ত মিষ্টি কুমড়া সম্পূর্ণ নষ্ট হয়েছে। সবমিলে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে উপজেলায় ১০ কোটি টাকার বেশি ফসলী জমির ক্ষতি হয়েছে। 
জানা যায়, উপজেলায় আটলিয়া ইউনিয়নের গোবিন্দকাটি, পাটনপাড়া, চাকুন্দিয়া, কুলবাড়িয়া, চুকনগর ও মঠবাড়িয়া এলাকা ফসল উৎপাদনের জন্য একটি উর্বর ভূমি। ভালো ফলনের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান রয়েছে এঅঞ্চলের মাটিতে। যার কারণে বছরে কয়েক কোটি টাকার বিভিন্ন ফসল উৎপাদন হয়ে থাকে। এই বিলাঞ্চলের পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা না থাকার কারণে পাটনপাড়াসহ একাধিক বিলের কৃষকের স্বপ্ন বিফলে যেতে বসেছে।
গত ৬ জুলাই বিকেল থেকে ১০ জুলাই সকাল পর্যন্ত বিরামহীন বৃষ্টি হয়ে গোবিন্দকাটি বিলের ১০ একরের বেশি জমির ফলন্ত মিষ্টি কুমড়া ক্ষেত সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। ক্ষেতের কুমড়া ও গাছ পচে গন্ধ বের হচ্ছে। চাকুন্দিয়া গ্রামের কৃষক স্বপন মলি­ক জানান, প্রচুর বর্ষার কারণে কুমড়া গাছের শিকড় নষ্ট হয়ে গেছে। আর বাঁচানো সম্ভব হচ্ছেনা। ফল ধরণের মুখে ক্ষেত নষ্ট হয়ে বড় ধরনের ক্ষতি হয়েছে তার। ৩২ হাজার টাকা হারিতে ৫০ শতক জমিতে মিষ্টি কুমড়ার চাষ করেন তিনি। জমি থেকে বছরে তিনটি ফসল উঠে থাকে। কিন্তু  বছরের শুরুতেই ফসল নষ্ট হয়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়েছে এ কৃষকের। প্রাকৃতিক দুর্যোগ এবং সৃষ্ট জলাবদ্ধতায় কৃষকের স্বপ্ন জমিতেই রয়ে যাচ্ছে। ভুক্তভোগী কৃষিজীবী সাধারণ মানুষ  দ্রæততম সময়ে পানি নিষ্কাশনের জোর দাবি জানিয়েছে।
উপজেলা কৃষি অফিস জানিয়েছে, অতিবৃষ্টির ফলে সৃষ্ট জলাবদ্ধতার কারণে শাক-সবজিসহ ২০৩ হেক্টর জমির বিভিন্ন ধরণের ফসল নষ্ট হয়েছে। আউশ ধান, আমন বীজ তলা, মরিচ, আদা, হলুদ, পেঁপে অফসিজন তরমুজ, পান, গ্রীষ্মকালীন টমেটো ও শিম ক্ষেতের ক্ষতি হয়েছে। সবমিলে ১০ কোটি টাকার বেশি ক্ষতি হয়েছে। 
উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ইনসাদ ইবনে আমিন জানান, অতিবৃষ্টির ফলে যেখান জলাবদ্ধতা তৈরি হয়েছে সেখানে সবজির ক্ষেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জলাবদ্ধতা স্থায়ীভাবে নিরসনে উপজেলা প্রশাসনসহ কৃষি বিভাগ নিবিড়ভাবে কাজ করে যাচ্ছে। তাছাড়া সামনে আরোও বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। যে কারণে পানি উন্নয়ন বোর্ড ও বিএডিসির কর্মকর্তাদেরকে বিষয়টি অবহিত করা হয়েছে। কৃষি ফসলি জমি রক্ষা করতে হলে বিলের মধ্যের বিভিন্ন খাল খনন এবং স্লুইসগেট গুলা সচল করে পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা করতে উদ্যোগী হতে হবে।
এবিষয়ে আটলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ হেলাল উদ্দিন বলেন, গোবিন্দকাটি এবং পাটনপাড়া বিলে কৃষি ফসল উৎপাদনের একটি উর্বর ভূমি। গত বছর নদী ভাঙনের কারণে ফসল তলিয়ে প্রায় ২ কোটি টাকার শুধু শিম সবজি নষ্ট হয়েছিলা। এবার অতিবৃষ্টির কারণে জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছে। পানি জমে মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। 
বিষয়টি উপজলা নির্বাহী অফিসারকে অবগত করা হয়েছে। তিনি আরোও বলেন কৃষকদের বাঁচাতে দ্রæত পানি নিষ্কাশনেরর লক্ষে ভদ্রা নদীর রক্ষা বাঁধে একটি মিনি স্লুইস গেট নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে। এটা চালু করতে পারলে আশাকরি এ বিলের জলাবদ্ধতা নিরসন হবে।  

্রিন্ট

আরও সংবদ