খুলনা | বৃহস্পতিবার | ১৭ জুলাই ২০২৫ | ১ শ্রাবণ ১৪৩২

চোরাই তারের ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বে খুন হন মিটফোর্ডের সোহাগ: পুলিশ

খবর প্রতিবেদন |
০২:১৫ পি.এম | ১৬ জুলাই ২০২৫


ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বেই পুরান ঢাকার ভাঙারি ব্যবসায়ী কালাচাঁদ ওরফে সোহাগকে হত্যা করা হয় বলে জানিয়েছে পুলিশ। আজ ‎বুধবার (১৬ জুলাই) ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানানো হয়।

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) এস এন নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সোহাগ বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় স্থানীয় সাবেক কমিশনার পিল্লুর ছত্রচ্ছায়ায় চোরাই তারের ব্যবসা করতেন। ৫ আগস্টের পটপরিবর্তনের পর সোহাগ ভোল পাল্টে এদিকে আসেন। বিগত ১৭ বছর ধরে সোহাগ এই ব্যবসা করছেন। এরই মধ্যে আরেকটা গ্রুপ এই ব্যবসার সঙ্গে জড়িয়ে যায়। এতে দুই গ্রুপের মধ্যে একটা বিভেদ তৈরি হয়। মূলত ব্যবসায়িক দ্বন্দ্বের কারণেই হত্যাকাণ্ডটি ঘটে।’

সংবাদ সম্মেলনে ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী বলেন, সোহাগ হত্যার ঘটনায় একাধিকবার ইট মারা মো. রিজওয়ান উদ্দিন অভিকে পটুয়াখালী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ নিয়ে এই মামলায় আটজনকে গ্রেপ্তার করা হলো। গ্রেপ্তার আসামিদের কয়েকজন যুবদল ও ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। অবশ্য তাঁদের সংগঠন থেকে বহিষ্কার করার কথা জানানো হয়েছে।

গত ৯ জুলাই বিকেলে মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকের সামনে প্রকাশ্যে কংক্রিট বোল্ডার দিয়ে শরীর ও মাথা থেঁতলে হত্যা করা হয় ভাঙারি ও পুরোনো তারের ব্যবসায়ী যুবদলের কর্মী লালচাঁদ ওরফে মো. সোহাগকে। ওই ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে ব্যাপক সমালোচনা শুরু হয়।

এ হত্যা মামলায় নিহত সোহাগের বোন মঞ্জুয়ারা বেগম বাদী হয়ে ১৯ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

মামলার এজাহারে বাদী বলেছেন, সোহাগ দীর্ঘদিন ওই এলাকায় ব্যবসা করায় ব্যবসায়িক বিভিন্ন বিষয়সহ আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আসামিদের সঙ্গে তাঁর বিরোধ চলে আসছিল। এর জেরে তাঁরা সোহাগের গুদাম তালাবদ্ধ করে রেখেছিলেন। সেই সঙ্গে তাঁকে এলাকাছাড়া করতে নানা রকম ভয় দেখিয়ে আসছিলেন। এরপর গত বুধবার সন্ধ্যা পৌনে ৬টার দিকে তাঁরা পূর্বপরিকল্পিতভাবে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে সোহাগের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে ঢুকে তাঁকে টেনেহিঁচড়ে বের করেন। তাঁকে মারধর করতে করতে মিটফোর্ড হাসপাতালের ৩ নম্বর ফটকের ভেতরে নিয়ে যান।

একপর্যায়ে রড, লাঠি, সিমেন্টের ব্লক বা ইট দিয়ে আঘাত করেন। মারতে মারতে তাঁকে বিবস্ত্র করে ফেলেন। একপর্যায়ে সোহাগ নিস্তেজ হয়ে ড্রেনের পাশে লুটিয়ে পড়েন। তখন তাঁর নিথর দেহ টেনে হাসপাতালের সামনের রাস্তায় নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।

মামলার এজাহারভুক্ত আসামিরা হলেন মাহমুদুল হাসান মহিন, তারেক রহমান রবিন, টিটন গাজী, সারোয়ার হোসেন টিটু, মনির ওরফে ছোট মনির, আলমগীর, মনির ওরফে লম্বা মনির, মো. নান্নু, সজীব, রিয়াদ, রাজীব, সাবা করিম লাকী, কালু ওরফে স্বেচ্ছাসেবক কালু, রজব আলী পিন্টু, সিরাজুল ইসলাম, মিজান, অপু দাস, হিম্মত আলী ও আনিসুর রহমান হাওলাদার।

তাঁদের মধ্যে নান্নুসহ মাহমুদুল হাসান মহিন, তারেক রহমান রবিন, মনির ওরফে লম্বা মনির, আলমগীর, টিটন গাজী, রাজীব ব্যাপারী, সজীব ব্যাপারী ও মো. রিজওয়ান উদ্দিন অভিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

নিহত মো. সোহাগ কেরানীগঞ্জ মডেল থানার পূর্ব নামাবাড়ী গ্রামের ইউসুফ আলী হাওলাদারের ছেলে। তাঁর ১৪ বছরের মেয়ে ও ১১ বছরের ছেলে রয়েছে।

্রিন্ট

আরও সংবদ