খুলনা | শুক্রবার | ১৮ জুলাই ২০২৫ | ৩ শ্রাবণ ১৪৩২

বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি’র প্রতি হানাহানি এড়িয়ে চলার আহবান

২২৩ আসনে প্রার্থী ঘোষণা খেলাফত মজলিসের

খবর প্রতিবেদন |
০২:২০ এ.এম | ১৮ জুলাই ২০২৫


আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রথম ধাপে ২২৩টি আসনে মনোনীত প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস। বৃহস্পতিবার দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলটির আমীর মাওলানা মামুনুল হক প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করেন। 
এ সময় তিনি মনোনীত প্রার্থীদের নিজ নিজ আসনে প্রচারণা চালানোর আহŸান জানান। মামুনুল হক সংসদের উচ্চ কক্ষে পূর্ণ পিআর এবং নিম্নকক্ষে আংশিক পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচনের দাবি জানিয়ে বলেন, ২০০১ ও ২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী দল ২২০টি আসন পেলেও তাদের প্রাপ্ত ভোটের অনুপাত ছিল মাত্র ৩০ শতাংশ। এর অর্থ হলো-বিদ্যমান পদ্ধতিতে অর্ধেকেরও কম ভোটারের প্রতিনিধিত্ব হয় জাতীয় সংসদে। তিনি অভিযোগ করেন, এতে করে সংখ্যালঘিষ্ঠ ভোটের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হয়, যা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার জন্য শুভ নয়। পিআর পদ্ধতির দুর্বলতা তুলে ধরে তিনি বলেন, এর সবচেয়ে বড় দুর্বল দিক হলো সরকার এবং সংসদের মধ্যে ভারসাম্য থাকে না। ভোটাররা ভোট দিয়ে কাকে নির্বাচিত করছেন, তার পরিচয়ও জানতে পারেন না। এসব দুর্বলতা দূর করতে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ‘মিক্সড পিআর পদ্ধতি’র প্রস্তাব করেছে। এই পদ্ধতির মাধ্যমে জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ সদস্য যেমন জাতীয় সংসদে প্রতিনিধিত্ব করবেন, তেমনি সকল ভোটারের প্রতিনিধিত্বও নিশ্চিত হবে। তিনি বিশ্বাস করেন, এতে করে বর্তমান নির্বাচন ব্যবস্থার ‘শুভঙ্করের ফাঁক’ দূর হবে। 
তিনি আরও ব্যাখ্যা করেন, যদি সংসদে উচ্চকক্ষ গঠিত হয়, তাহলে সেটি পূর্ণ পিআর পদ্ধতিতেই গঠিত হবে। নিম্ন কক্ষে ৩০০ আসনে প্রার্থীরা সরাসরি নির্বাচিত হবেন, যেখানে সর্বোচ্চ ভোটপ্রাপ্ত ব্যক্তি বিজয়ী হবেন। এরপর হিসাব করা হবে যে, যে দল যে পরিমাণ ভোট পাবে, সে অনুপাতে তারা সংসদ সদস্য পেয়েছে কিনা। যদি না পেয়ে থাকে, তাহলে তারা সংসদের সংরক্ষিত বিশেষ আসনে তাদের প্রাপ্ত ভোটের অনুপাতে আসন পাবে। ৩০০ আসন এবং সংরক্ষিত আসন মিলিয়ে যে দল সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে, তারাই সরকার গঠন করবে। সংবাদ সম্মেলনে মাওলানা মামুনুল হক  গোপালগঞ্জে এনসিপি’র পথসভার ওপর আওয়ামী সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র হামলার তীব্র নিন্দা জানান। তিনি বলেন, নিজেদের মধ্যে রাজনৈতিক হানাহানি দেশের জন্য কল্যাণকর হবে না।
এ সময় তিনি বিএনপি, জামায়াত ও এনসিপি’র প্রতি হানাহানি এড়িয়ে চলার আহŸান জানান। তিনি আরও উলে­খ করেন, অনেক রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ পরস্পরের বিরুদ্ধে অশালীন বক্তব্য দিচ্ছেন, যা রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে বিনষ্ট করছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আমাদের মধ্যে মতবিরোধ থাকবে, কিন্তু সেটি যেন মারমুখী না হয়। এগুলো চলতে থাকলে নির্বাচনী ব্যবস্থা হুমকির মুখে পড়বে। 
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা আতাউল­াহ আমীন ও মাওলানা তোফাজ্জল হোসাইন মিয়াজি, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা এনামুল হক মূসা, মাওলানা আবুল হাসানাত জালালী, মাওলানা ফয়সাল আহমদ, বায়তুলমাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা হারুনুর রশীদ, অফিস সম্পাদক মাওলানা রুহুল আমীন খান প্রমুখ।
খুলনা বিভাগে প্রার্থী যারা : মেহেরপুর-১ মাওলানা হুসাইন আহমদ, মেহেরপুর-২ মুফতি আবু হুরায়রা, কুষ্টিয়া-১ মোঃ আসাদুজ্জামান, কুষ্টিয়া-২ হাফেজ মাওলানা আরিফুজ্জামান, কুষ্টিয়া-৩, মাওলানা আব্দুল লতীফ খান কুষ্টিয়া-৪, ফজলে নুর ডিকো, চুয়াডাঙ্গা-২ মুহাম্মাদ জুবায়ের খান, ঝিনাইদহ-১ মুহাম্মাদ আসাদুজ্জামান, ঝিনাইদহ-২ মাওলানা মিজানুর রহমান, ঝিনাইদহ-৩ মাওলানা আলমগীর হোসেন, ঝিনাইদহ-৪ মাওলানা ওসমান গণি, যশোর-১ মাওলানা নাজির উদ্দীন, যশোর-২, মাওলানা রুহুল কুদ্দুস, যশোর-৩, মাওলানা রমিজ উদ্দিন, যশোর-৪ মাওলানা মাছুম বিল­াহ, যশোর-৫ মুফতি মহিউল ইসলাম, যশোর-৬ হাফেজ মাওলানা রাকিবুজ্জামান, নড়াইল-১, মাওলানা আব্দুর রহমান, নড়াইল-২ হাফেজ মাওলানা মুহসিনুদ্দীন, খুলনা-১ মুফতি ফিরোজুল ইসলাম, খুলনা-২ মুফতি শরীফ সাইদুর রহমান, খুলনা-৪ মাওলানা মজিবুর রহমান, খুলনা-৫ মুফতি আব্দুল কাইয়ূম জমাদ্দার, খুলনা-৬, মাওলানা মনিরুল ইসলাম, সাতক্ষীরা-২, মুফতি হাবিবুল­াহ, সাতক্ষীরা-৩, হাফেজ মাওলানা আশরাফুজ্জামান, সাতক্ষীরা-৪, মুহাদ্দিস মোস্তফা কামাল।

্রিন্ট

আরও সংবদ