খুলনা | বৃহস্পতিবার | ৩১ জুলাই ২০২৫ | ১৬ শ্রাবণ ১৪৩২

গাজীপুরে একটি আসন বাড়ানো ও বাগেরহাটে কমানোর সুপারিশ

খবর প্রতিবেদন |
০৪:৪০ পি.এম | ৩০ জুলাই ২০২৫


ভোটার ও জনসংখ্যার ভিত্তিতে গাজীপুরে সংসদীয় একটি আসন বাড়ানো এবং বাগেরহাটে একটি আসন কমানোর সুপারিশ করেছে সীমানা নির্ধারণ কারিগরি কমিটি। আসনপ্রতি গড় জনসংখ্যা ৪ লাখ ২০ হাজার ধরে আসন কমানো ও বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে।

বুধবার (৩০ জুলাই) বিকেলে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আনোয়ারুল ইসলাম সরকার।

নির্বাচন কমিশনার জানান, সবচেয়ে বেশি যে আসনে ভোটার সেখানে একটি আসন বাড়ানোর জন্য বলেছে কারিগরি কমিটি। এছাড়া সবচেয়ে কম ভোটার যে আসনে, সেখান থেকে একটি আসন কমানোর বিষয়ে প্রস্তাব করেছে বিশেষায়িত কমিটি।

নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল বলেন, সীমানা পুনঃনির্ধারণ আইন ২০২১ এর ২১/৬ ধারায় বলা হয়েছে সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে প্রশাসনিক ব্যবস্থা ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং আদমশুমারি এ তিনটি বিষয়কে গুরুত্ব দিয়ে এই সীমানাটা নির্ধারণ করতে হবে। তবে আদমশুমারি ২০২২ অনুযায়ী কিছু বিষয় আছে একটু অসামঞ্জস্যপূর্ণ। আমাদের কাছে রয়েছে হালনাগাদ ভোটার সংখ্যা।

এছাড়া আমাদের ভোটার তালিকা ভিত্তিতে, ভোটার সংখ্যার ভিত্তিতে কমিটি এভারেজ আসনভিত্তিক ভোটার সংখ্যা নির্ধারণ করেছেন। সেটি হলো ৪ লাখ ২০ হাজার সামথিং, অর্থাৎ ৩০০ আসনের এবার ভোটার সংখ্যা হলো ৪ লাখ ২০ হাজার। তারা ভোটারের সংখ্যার ভিত্তিতে একটা গ্রেডিং করেছেন, সেটি হচ্ছে সবচেয়ে বেশি ভোটার কোন জেলায় এবং সবচেয়ে কম ভোটার কোন জেলায়। কারিগরি কমিটি ফাইন্ড আউট করেছেন, সবচেয়ে বেশি ভোটার যে জেলায় সেই জেলায় একটি আসন তারা বাড়ানোর প্রস্তাব করেছেন এবং সর্বনিম্ন ভোটার যে জেলায় সেই জেলায় একটি আসন কমানোর প্রস্তাব করেছেন।

তিনি বলেন, টেকনিক্যাল কমিটির তথ্য অনুযায়ী, সর্বোচ্চ ভোটার হচ্ছে গাজীপুর। আর বাগেরহাট জেলায় সবচেয়ে কম। মানে বিশেষায়িত কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী তারা ভোটার সংখ্যা এবং জনসংখ্যা এনালাইসিস করে তাদের প্রস্তাব হচ্ছে যে বাগেরহাট একটি আসন কমবে, গাজীপুরে জনসংখ্যা ও ভোটারের সংখ্যার ভিত্তিতে একটি আসন বৃদ্ধি পাবে।

ইসি আনোয়ারুল ইসলাম সরকার বলেন, আমরা ৬৪ জেলার গড় ভোটার সংখ্যা নির্ধারণ করছি। সেটি হচ্ছে ৪ লাখ ২০ হাজার ধরলে এটার ওপরে আছে কিছু, নিচে আছে কিছু। দেখা গেছে ৪ লাখ ২০ হাজার এর ওপরের যেই আসনগুলো বা জেলাগুলো সেগুলোতে যদি একটা আসন আমরা বাড়াই শুধুমাত্র গাজীপুর জেলায় এই এভারেজের ওপরে থাকে। আর বাকিগুলো এভারেজের নিচে চলে আসে। যার কারণে বাকিগুলোর বাড়ানোর যে প্রস্তাব সেটি তারা দেয়নি আর এভারেজের নিচে যে কয়টা আছে শুধুমাত্র দেখা গেছে, বাগেরহাটেরটা কমাই তাহলে মোটামুটিভাবে এভারেজের কাছাকাছি থাকে।

আনোয়ারুল ইসলাম সরকার জানান, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত। শিগগিরই গেজেট প্রকাশ করবে নির্বাচন কমিশন।

তিনি জানান, এ সংক্রান্ত দাবি-আপত্তি গ্রহণ করা হবে ১০ আগস্ট পর্যন্ত। পরে আসনভিত্তিক শুনানি শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

নির্বাচন কমিশনার বলেন, পঞ্চগড়, সিরাজগঞ্জ, ঢাকা, গাজীপুর, সিলেটসহ বিভিন্ন সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণে টেকনিক্যাল কমিটি ৪২টি আসনে ছোট-বড় সংশোধনের প্রস্তাব দিয়েছে। নির্বাচন কমিশন এসব প্রস্তাব বিবেচনায় নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সীমানা নির্ধারণ বিষয়ে তিনি বলেন, সীমানা পুনঃনির্ধারণের গেজেট প্রকাশের অনুমতি দিয়েছে ইসি। আগামীকালের মধ্যে প্রকাশ হবে।

তিনি বলেন, সীমানা নির্ধারণে ইসি ১৬ জুলাই ৯ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি করেছিল। তারা ভোটারের সংখ্যা অনুযায়ী গ্রেডিং করেছেন। ১, ২, ৩ আসন বিশিষ্ট জেলাকে ভাঙার সুযোগ নেই। এসব জেলার সীমানা বাড়ানো বা কমানোর বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হয়নি। ২৫০ এর কাছাকাছি জেলার সীমানা পুনঃনির্ধারণে আবেদন ছিল না। তাই এসব জায়গায় পরিবর্তন করা হয়নি।

নির্বাচন কমিশনার বলেন, সংবিধানের ১১৯-১২৪ ধারা অনুযায়ী জাতীয় নির্বাচনে সীমানা নির্ধারণ করার দায়িত্ব কমিশনের। এই সীমানা নির্ধারণে কিছু বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হয়। ঐকমত্য কমিশনের সুপারিশ নেওয়া হয়। একটা বিশেষজ্ঞ টিম গঠন করা হয়। নানা বিষয় গুরুত্ব দিয়ে সীমানা নির্ধারণ করা হয়। এছাড়া ২০২২ সালের জনশুমারির কিছু তথ্য নেওয়া হয়।

্রিন্ট

আরও সংবদ