খুলনা | রবিবার | ১০ অগাস্ট ২০২৫ | ২৬ শ্রাবণ ১৪৩২

নগরীতে বিএনপি’র সমাবেশে আহমেদ আযম খান

নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র হলে ৭১’র মতো জবাব পাবেন

খবর বিজ্ঞপ্তি |
০২:৩৪ এ.এম | ০৭ অগাস্ট ২০২৫


বিএনপি’র ভাইস-চেয়ারম্যান এড. আহমেদ আযম খান সকল রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনের আসার আহŸান জানিয়ে বলেছেন, নির্বাচন ঘোষণার পর কেউ কেউ বলেন-পিআর না হলে নাকি নির্বাচন হতে দেবেন না। সাড়ে ১১ কোটি ভোটার পিআর চেনে না। যারা বলেন-তারা মুক্তিযুদ্ধের সময়ও মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছিলেন। আমরা কী দেশ স্বাধীন করি নাই। আমরা তাদের উদ্দেশ্যে বলবো-নিয়মতান্ত্রিক রাজনীতিতে আসুন, জনগণ ভোট দিলে ক্ষমতায় যাবেন, ভোট না দিলে বিরোধী দলে বসবেন। অযথা দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করবেন না। যদি নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র করেন ৭১’র মতো জবাব পাবেন। আগামী নির্বাচন আমি-ডামির হবে না, দিনের ভোট রাতে হবে না। নির্বাচন ছাড়া এদেশে সমৃদ্ধ গণতন্ত্র ও অর্থনীতি আসবে না।
গতকাল বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টায় শিববাড়ি মোড় জিয়াহল চত্বরে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপি আয়োজিত  বিজয় মিছিল পূর্ব সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আহমেদ আযম খান আরো বলেন, বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান দীর্ঘ ১০ বছর নিরসর ভাবে কাজ করেছেন। তিনি যেমন দলকে ঐক্যবদ্ধ করেছেন, তেমনি এদেশের ফ্যাসিবাদী বিরোধীদের ঐক্যবদ্ধ করে তুলতে পেরেছিলেন। তার নেতৃত্বে সম্মিলিতভাবে এদেশের ছাত্র-শ্রমিক-জনতা সম্মিলিতভাবে জুলাই-আগস্ট অভ্যুত্থান ফ্যাসিবাদী শাসনকে থামিয়ে দিতে পেরেছে। তারেক রহমানই ছিলেন গণঅভ্যুত্থানের মহানায়ক। তার নেতৃত্বে আজ আমরা ফ্যাসিস্ট মুক্ত হতে পেরেছি। এই মুক্ত বাংলাদেশে প্রথম এদেশে গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও মানবাধিকার এবং মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা। আর এ কারণেই বিএনপি যৌক্তিক সংষ্কার শেষে একটি অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানিয়ে আসছি। গত তিনটি নির্বাচনে জনগণ ভোট দিতে পারেনি। এবার জনগণ ভোট চায়, জনগণের ভোটের সরকার চায়। গণতন্ত্র চায়, জনগণের ক্ষমতায়ন চায়, সমৃদ্ধ অর্থনীতি চায়। বিশ্বের বুকে সমৃদ্ধ বাংলাদেশ চায়। যখনই নির্বাচনের কথা উঠলেই ২/১টি রাজনৈতিক দল তারা নানা টালবাহানার কথা বলে। কেউ বলে সংস্কার শেষ করতে হবে। কেউ বলে বিচার শেষ করতে হবে। কেউ বলে এখনও আইন-শৃঙ্খলা নির্বাচনের পরিবেশ নেই। আবার কেউ বলে পিআর ছাড়া নির্বাচন হবে না। তারা পিছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় আসতে চায়। একেক জন একেক কথা বলেন। প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছেন, বিএনপি তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। যারা আমাদের মা-বোনের ইজ্জত হরণ করেছে; মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছে ও ধর্মব্যব্যবসায়ীরা পিআর পদ্ধতি চাইছে। জনগণ সকল ক্ষমতার উৎস। লড়াই কিন্তু শেষ হয়নি। পতিতরা দিল­¬ীতে বসে ষড়যন্ত্র করে আসতে চায়, কিন্তু জনগণ হতে দেবে না। 
তিনি আরো বলেন, ৯০’র গণঅভ্যুত্থান ও ৯৬ সালেও তত্ত¡াবধায়ক সরকার তিন মাসের মধ্য নির্বাচন দিয়েছিল। কিন্তু এবার আমরা সময় দিয়েছি। যাকে মৌলিক সংস্কার শেষ করতে পারে। ইতিমধ্যে ঐকমত্য কমিশন ঘোষণা চ‚ড়ান্ত করছে। বিএনপি এতে সহমত প্রকাশ করেছে। যা আগামী দিনের গণতন্ত্র, স্বচ্ছ সংসদ কার্যকর করবে। 
মহানগর বিএনপি’র সভাপতি এড. শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান বক্তা ছিলেন বিএনপি’র জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য বিষয়ক সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি বলেন, ছাত্র-জনতার সম্মিলিত আন্দোলনে এক বছর আগে এদেশ থেকে মাফিয়া সরকারকে উচ্ছেদ ছিল আমাদের প্রথম বিজয়। আর নির্বাচন ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিএনপি’র আরেকটি বিজয় অর্জিত হয়েছে। এখন আমাদের জনগণের কাছে যেতে হবে। তাদের কাছে দলের বার্তা পৌঁছে দিতে হবে। আমরা নির্বাচনী ট্রেনে যাত্রা শুরু করেছি। এ যাত্রা অব্যাহত রাখতে হবে। আগামীদিনে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেলেও খুলনা শিল্পনগরীর ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে হবে। জনগণ যে প্রত্যাশা নিয়ে বিএনপি’র উপর ভরসা রেখেছে সেই আস্থা ও বিশ্বাসের মূল্যায়ন করতে হবে। বিএনপি নেতা হেলাল ফ্যাসিবাদ বিরোধী ঐক্যের মতো সকল ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার জন্য নেতা-কর্মীদের প্রতি আহŸান জানান।
সমাবেশে বক্তৃতা করেন ও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপি’র আহŸায়ক মনিরুজ্জামান মন্টু, মহানগর বিএনপি’র সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন, জেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব আবু হোসেন বাবু, সিনিয়র যুগ্ম-আহŸায়ক এড. মোমরেজুল ইসলাম, রেহেনা আক্তার, সৈয়দা নার্গিস আলী, ইঞ্জিনিয়ার নুর ইসলাম বাচ্চু, মজিবর রহমান, ফরিদ আহমেদ মোল¬া, আসলাম পারভেজ ও এজাজুর রহমান শামীম প্রমুখ।
সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন নগর বিএনপি’র সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ সাদী, চৌধুরী হাসানুর রশিদ মিরাজ ও মাসুদ পারভেজ বাবু। সমাবেশের শুরুতে পবিত্র কোরআন তেলওয়াত করেন সদর থানা বিএনপি’র সভাপতি কে এম হুমায়ুন কবীর।
বিএনপি নেতারা খুলনার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, খুলনা খুনের নগরীতে পরিণত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হচ্ছে। অবিলম্বে খুন, চুরি, ছিনতাই, মাদক বন্ধ করতে হবে। সমাবেশ শেষে একটি বিজয় মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি শিববাড়ি মোড় থেকে শুরু হয়ে যশোর রোড ও ফেরিঘাট হয়ে খানজাহান আলী রোড ধরে রয়্যাল মোড়ে গিয়ে শেষ হয়। জাতীয়, দলীয় পতাকা ও রঙ বে-রঙের প্লাকাট, ব্যানার নিয়ে  মিছিলে বিপুল সংখ্যক নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষ অংশগ্রহণ করেন। মিছিলের আগের শহিদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন ও বেলুন উড়িয়ে মিছিলের উদ্বোধন করেন নেতৃবৃন্দ।

্রিন্ট

আরও সংবদ