খুলনা | রবিবার | ১০ অগাস্ট ২০২৫ | ২৬ শ্রাবণ ১৪৩২

খুলনা বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিস

ফিঙ্গার প্রিন্টে বদলে যাচ্ছে লিঙ্গসহ পরিচয়, ভোগান্তিতে আবেদনকারীরা!

এন আই রকি |
০১:১১ এ.এম | ০৮ অগাস্ট ২০২৫


জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার গোলনা গ্রামের পার্বতী বিশ^াসের মেয়ে আরাধ্য বিশ^াস। সাত বছরের শিশু কন্যাটির পাসপোর্টের জন্য আবেদনের করার পর ফিঙ্গার প্রিন্ট দিলেই তার লিঙ্গসহ পরিচয় পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে। কম্পিউটারের স্ক্রীনে আরাধ্য বিশ^াসের ফিঙ্গার দেওয়ার পর সওকত উল­¬াহ নামে একটি ছেলের ছবিসহ পরিচয় ভেসে আসছে। শুধু তাই নয়। একাধিকবার চেষ্টা করার পরও বিভিন্ন ছবি, নাম, ধর্ম ও লিঙ্গ পরিবর্তন দেখাচ্ছে আরাধ্য বিশ^াসের।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে অনেকবার চেষ্টা করেও পাসপোর্ট করতে না পেরে ফিরে গেছে। আগামী সোমবার ফের তার পরিবারকে পাসপোর্ট অফিসে আসতে বলা হয়েছে। নগরীর বয়রা এলাকায় বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের এমন নানাবিধ সমস্যা গত দুইদিন ধরে চলছে। যার ফলে দূর-দূরান্ত থেকে আসা পাসপোর্ট আবেদনকারীরা নানান ভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছে। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, সফটওয়্যার সমস্যার কারণে এমনটা হচ্ছে। কবে নাগাদ এর সমাধান হবে বলা মুশকিল। তবে অনেক আবেদনকারী হাতে মেহেদী মাখার পর ফিঙ্গার প্রিন্টের সমাধান হওয়ায় উচ্ছ¡াসও প্রকাশ করেছেন।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, আরাধ্য বিশ^াসের মত এ রকম অনেক আবেদনকারী পাসপোর্ট অফিসে ফিঙ্গার প্রিন্টের জটিলতায় ভুগছে। অনেকের দুই তিন বার ফিঙ্গার প্রিন্ট দেওয়ার পরও ডাটা না নেওয়ার কারণে ফিরে যেতে হচ্ছে পাসপোর্ট না করেই। আবার অনেকের চারটি আঙ্গুলের মধ্যে তিনটি আঙ্গুলের ফিঙ্গার প্রিন্ট নেওয়ার পর একটি আঙ্গুলের জন্যও অনেকেই পাসপোর্ট করতে পারছে না। বিষয়টি তদন্তের জন্য বেশ কয়েকজনের সাথে আলাপ হয়। অনেকের হাতে কাটা দাগ না থাকার কারণে ফিঙ্গার প্রিন্ট নিচ্ছে না। সেক্ষেত্রে তাদের মেডিকেল সার্টিফিকেট লাগছে। অনেক সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারির এনওসি থাকার পরও ফিঙ্গার না মেলার কারণে জামিনদার হিসেবে কাউকে কাউকে পাসপোর্ট করে দেওয়া হচ্ছে।
তেরখাদা উপজেলার জয়ন্ত সেনা এলাকার ইমরান হোসেনের ছেলে সাখাওয়াত মোল­¬া জানান, আমার বাবা বিদেশে থাকে। আমিও বিদেশে যাবো। তাই পাসপোর্ট করতে এসেছি। চারটি আঙ্গুলের মধ্যে তিনটি আঙ্গুলের ফিঙ্গার প্রিন্ট মিল থাকলেও একটির কারণে পাসপোর্ট হয়নি। অফিস থেকে আমাকে মেডিকেল সার্টিফিকেট আনতে বলেছে। তবে কি ধরনের মেডিকেল সার্টিফিকেট সেটা বলেনি। পাসপোর্ট অফিসের নতুন কয়েকজন কর্মচারীর ব্যবহার আশানুরূপ সন্তোষজনক নয়।
রূপসা উপজেলার বাগমারা এলাকার সুলতান শেখের ছেলে হাসান বলেন, আমরা অনেকেই এসেছি পাসপোর্ট করতে। সকাল থেকে সার্ভারের সমস্যার কারণে কাজ হচ্ছিল না। এরপর ফিঙ্গার প্রিন্ট নিচ্ছিল না। পরে আমরা কেনা মেহেদী চারটি আঙ্গুলের মাথায় মেখে ফিঙ্গার দিলে কাজ হয়েছে।  
খুলনা বিভাগীয় পাসপোর্ট অফিসের পরিচালক মোঃ আবু সাইদ জানান, ই-পাসপোর্ট করার সময় অনলাইনের একাধিক সাপোর্ট লাগে। বিশেষ করে মেশিন রিডাবল পাসপোর্ট (এমআরপি), জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি), জন্মনিবন্ধন (বিআরসি), ব্যাংক, রোহিঙ্গাসহ নানান ধরনের তথ্য অনলাইনের মাধ্যমে যাচাই করতে হয়। গত দুইদিন এনআইডি এবং রোহিঙ্গার সফটওয়্যারে সমস্যা হয়েছে। এটা সারাদেশেই। যার কারণে অনেকের সাময়িক সমস্যা হয়েছে। আমরা এই বিষয়ে হেড অফিসে কথা বলেছি। খুব দ্রুতই সমস্যার সমাধান হবে। এসব টেকনিক্যাল বিষয়গুলো আমাদের হাতে থাকে না।

্রিন্ট

আরও সংবদ