খুলনা | রবিবার | ১৭ অগাস্ট ২০২৫ | ২ ভাদ্র ১৪৩২

পাকিস্তানে ভারী বর্ষণ ও বন্যায় একদিনে ঝরে গেল ১৬০ প্রাণ

খবর প্রতিবেদন |
০১:৩৫ এ.এম | ১৬ অগাস্ট ২০২৫


পাকিস্তানের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে ২৪ ঘণ্টায় প্রবল বৃষ্টি ও আকস্মিক বন্যায় ১৬০ জনের বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছে দেশটির সরকার। বন্যায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশ। সেখানের ঘরবাড়ি, সড়ক ও কৃষি জমির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া দুর্ঘটনা কবলিত এলাকায় একটি উদ্ধারকারী হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে যানটিতে থাকা সকলেই প্রাণ হারিয়েছেন বলেও জানানো হয়েছে। এ খবর দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
এতে বলা হয়, বিপর্যস্ত এলাকায় উদ্ধার তৎপরতার সময় একটি সামরিক হেলিকপ্টার দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। খারাপ আবহাওয়ার কারণে হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হয় এবং এতে থাকা পাঁচজন ক্রু সদস্য সকলেই প্রাণ হারান। স্থানীয় প্রশাসন ও সেনাবাহিনী যৌথভাবে উদ্ধার কাজ চালাচ্ছে। বহু এলাকা এখনও জলমগ্ন এবং যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। বন্যাকবলিত অঞ্চলে খাবার, বিশুদ্ধ পানি এবং চিকিৎসাসেবা ঘাটতির মুখে পড়েছে।
দেশটির আবহাওয়া বিভাগ জানিয়েছে, আগামী কয়েকদিনেও ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকতে পারে, যার ফলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে। সাধারণ মানুষকে সতর্ক থাকতে এবং উঁচু জায়গায় সরে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বার্তা সংস্থা এপির খবরে জানা যায়, ২৬ জুন থেকে দেশটিতে বৃষ্টিপাতজনিত ঘটনায় মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৩৬০-এ দাঁড়িয়েছে, যার মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু।
গিলগিট-বালতিস্তানের মুখপাত্র ফাইজুল­াহ ফারাক জানান, ঘাজার জেলায় বৃহস্পতিবার আকস্মিক বন্যায় ১০ জন নিহত হয়েছেন। খাইবার পাখতুনখোয়ার বাজিকুর জেলায় ১৬ জনের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। উত্তর-পশ্চিমের বাত্তাগ্রাম জেলায় ১০ জন নিহত ও ১৮ জন নিখোঁজ রয়েছেন। পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে আরও ৭ জনের মৃত্যু হয়েছে।
খাইবার পাখতুনখোয়ার মানসেরা জেলায় আকস্মিক বন্যা ও ভূমিধসে আটকা পড়া প্রায় ১ হাজার ৩০০ পর্যটককে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চেষ্টায় উদ্ধার করেছে স্থানীয় কর্তৃপক্ষ। জুলাই থেকে গিলগিট-বালতিস্তানে একাধিকবার আকস্মিক বন্যা হয়েছে, যা করাকোরাম হাইওয়েতে ভূমিধস সৃষ্টি করে পাকিস্তান-চীন সড়ক যোগাযোগ ব্যাহত করেছে।
এদিকে, আজাদ জম্মু ও কাশ্মীরের নাসিরাবাদে মেঘভাঙা বৃষ্টিতে একই পরিবারের ছয়জনের মৃত্যু হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় নদীর পানি উপচে পড়ায় গৃহহীন হয়েছে বহু পরিবার, ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ঘরবাড়ি, বিদ্যালয় ও কৃষি জমি। পর্যটকবাহী একটি গাড়ি স্রোতে ভেসে গেলেও সবাই জীবিত উদ্ধার হয়েছেন।  
গিলগিট-বালতিস্তান ও এজেকে সরকার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলোতে জরুরি অবস্থা জারি করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষকে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে সর্বোচ্চ প্রস্তুত থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোর বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে এবং ১৫ ও ১৬ আগস্ট এজেকের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট আসিফ আলি জারদারি প্রাণহানি ও ক্ষয়ক্ষতির ঘটনায় শোক প্রকাশ করে দ্রুত উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন।

্রিন্ট

আরও সংবদ