খুলনা | সোমবার | ১৮ অগাস্ট ২০২৫ | ৩ ভাদ্র ১৪৩২

সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের চেষ্টা করলে ব্যবস্থা: স্বরাষ্ট্র সচিব

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০৫:২৮ পি.এম | ১৬ অগাস্ট ২০২৫


বাংলাদেশ একটি অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র, এখানে সব ধর্মের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করে। এই সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা কেউ করলে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি।

আজ শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে যশোর মুন্সি মেহেরুল্লাহ ময়দানে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ আয়োজিত শ্রীকৃষ্ণের জন্মাষ্টমীর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপংকর দাস রতনের সভাপতিত্বে আলোচনা অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত ও  যশোর রামকৃষ্ণ মিশন আশ্রমের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ জ্ঞানপ্রকাশানন্দ মহারাজ ওরফে মিন্টু মহারাজ।

সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন জেলা প্রশাসক আজাহারুল ইসলাম, পুলিশ সুপার রওনক জাহান, জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু, জেলা জামায়াতের আমির অধ্যাপক গোলাম রসুল, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন, এনসিপি নেতা খালিদ সাইফুল্লাহ, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা রাশেদ খানসহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের পূজা উদযাপন পরিষদের নেতারা। সভার শুরুতে সভাপতি দীপংকর দাস রতন স্বাগত বক্তৃতা করেন।

স্বরাষ্ট্র সচিব নাসিমুল গনি বলেন, এই দেশ সকল ধর্মের, সকল মানুষের। এই দেশ একটি সম্পূর্ণ অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র। এখানে সাম্প্রদায়িকতার কোনো স্থান নেই। কোনো ধর্মই অন্যায়, অত্যাচার বা নির্যাতনকে সমর্থন করে না। সকল ধর্মের মূল কথা হলো শান্তি। বাংলাদেশে সকল ধর্মের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে বসবাস করে। বাংলাদেশ পৃথিবীর অন্যতম অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র। এই রাষ্ট্রের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ইতিহাস যুগ যুগান্তরের। যুগ যুগ ধরে এই দেশে ইসলাম ও অন্যান্য সকল ধর্মের মানুষ মিলেমিশে বসবাস করছে। কিন্তু একটি মহল সুপরিকল্পিতভাবে সেই শান্তি ও সহাবস্থান নষ্ট করতে চক্রান্ত করেছে। যার ইতিহাস গত ১৭ বছরে আমরা লক্ষ্য করেছি। কিন্তু বর্তমানে পরিবর্তিত বাংলাদেশে সে রকম কিছু করার চেষ্টা করা হলে জনগণকে সাথে নিয়ে তা প্রতিরোধ করতে সরকার বদ্ধপরিকর। যিনি বা যারা পরিকল্পিতভাবেই সমাজে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করছেন বা উস্কানিমূলক বক্তব্য দিয়ে সমাজে বিশৃঙ্খল পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করছেন, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে, সে যে ধর্মেরই লোকই হোক না কেন।

প্রধান অতিথি বলেন, আগামীতে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। কারোর কথায় কান না দিয়ে আপনারা শাখা সিঁদুর পরে উৎসবের আমেজে ভোটকেন্দ্রে যাবেন, আপনাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন- এটা আমাদের প্রত্যাশা। মনে রাখবেন, এই দেশে আপনাদের বাপ-দাদা জন্মেছিলেন। আপনার সন্তানরাও এই দেশে জন্মেছে। এই দেশে আমরা সকলেই মিলে মিশে বসবাস করছি।

বক্তৃতায় অনিন্দ্য ইসলাম অমিত বলেন, প্রতিটি ধর্মের মূল শিক্ষা অন্যের ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করা। আমাদের সকলের লক্ষ্য হওয়া উচিত মানুষ হওয়া, আমাদের সকলকে মানুষ হতে হবে। আমরা অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়তে চাই। দেশের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতার জায়গা থেকে আমরা সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছি। মনে রাখবেন, এই দেশে আমার যতটুকু অধিকার আছে সেই রকম আপনারও ততটুকুই অধিকার আছে।

অমিত বলেন, বাংলাদেশ একটি সম্পূর্ণ অসাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র। আমরা যশোরের মানুষ দীর্ঘদিন মিলেমিশে বসবাস করতাম। কিন্তু গত ১৭ বছরে একটি পতিত স্বৈরাচারী রাজনৈতিক পক্ষ সেই সামাজিক সম্প্রীতি নষ্ট করে দিয়েছিল। আমাদের বাসাবাড়িতে বার বার বোমা হামলা চালিয়ে নারী ও শিশুদের আহত করেছিল। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আমরা তাদের কিছুই বলিনি। কিন্তু সেই পতিত স্বৈরাচারীরা যদি ফের যশোরের সামাজিক সম্প্রীতি বিনষ্ট করার চেষ্টা করে আপনাদের সাথে নিয়ে তা মোকাবিলা করতে আমরা প্রস্তুত আছি।

পরে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করে শ্রী কৃষ্ণের জন্ম উৎসব এবং মঙ্গল শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথিসহ অন্যান্য অতিথিরা।

্রিন্ট

আরও সংবদ