খুলনা | বুধবার | ২০ অগাস্ট ২০২৫ | ৪ ভাদ্র ১৪৩২

মৎস্য খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানে জাতীয় মৎস্য স্বর্ণ পদক পেলেন ঘের ব্যবসায়ী গোলাম কিবরিয়া রিপন

নিজস্ব প্রতিবেদক |
০২:২১ এ.এম | ১৯ অগাস্ট ২০২৫


এবারে মৎস্য খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ জাতীয় মৎস্য স্বর্ণ পদক পেলেন নগরীর রায়েরমহলের বাসিন্দা ও পাইকগাছা চিংড়ি চাষি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও রয়্যাল ফিস কালচারের স্বত্বাধিকারী তরুণ  মৎস্য ও ঘের ব্যবসায়ী গোলাম কিবরিয়া রিপন।
সোমবার চীন বাংলাদেশ মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ-২০২৫ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান উপদেষ্টা ড. মোঃ ইউনুস-এর কাছ থেকে পদক গ্রহণ করেন চিংড়ি চাষি গোলাম কিবরিয়া রিপন। এর আগে ১৭ জুলাই মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ভারপ্রাপ্ত ড. মোঃ আব্দুর রউফ স্বাক্ষরিত পত্রে বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়। গোলাম কিবরিয়া রিপন নগরীর বয়রা রায়ের মহল এলাকার মৃত নজির উদ্দিন আহমেদের পুত্র। তিনি সরকারি বিএল কলেজ থেকে মাস্টার্স পাস করে চাকুরির প্রত্যাশা না করে পিতাকে অনুসরণ করে ২০০১ সালে পাইকগাছায় চিংড়ি পোনা ব্যবসায়ের মাধ্যমে ব্যবসায়িক জীবন শুরু করেন। পোনা ব্যবসায়ে সফলতা পেয়ে তিনি ২০০৭ সালে ১৫০ বিঘা জমি লীজ নিয়ে চিংড়ি চাষ শুরু করেন। চিংড়ি চাষে সাফল্যের ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকায় তিনি ঘেরের সংখ্যা ও চিংড়ি চাষের পরিধি বাড়াতে শুরু করেন। বর্তমানে তার পাইকগাছা ও কয়রা উপজেলায় ১ হাজার ৮শ’ বিঘার ৬টি চিংড়ি ঘের রয়েছে। সনাতনী পদ্ধতি পরিহার করে তিনি উন্নত সনাতন পদ্ধতি অনুসরণ করে মৎস্য স¤প্রসারণ অধিদপ্তরের সার্বিক পরামর্শে চিংড়ি চাষ করছেন। এতে উৎপাদন ভালো হওয়ায় চিংড়ি চাষের মাধ্যমে তিনি উপকূলীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন।
পোনা ব্যবসা এবং চিংড়ি উৎপাদন থেকে প্রতি বছর তিনি ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকা আয় করে থাকেন। তার চিংড়ি ঘের ও ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানে কাজ করে ৪ থেকে ৫শ’ লোকের জীবন-জীবিকা নির্বাহ হয়ে থাকে। তাকে অনুসরণ করে অন্যান্য ঘের মালিকরাও উন্নত সনাতন পদ্ধতিতে চিংড়ি চাষ করতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। 
দেশের আপামর জনগোষ্ঠীর নিরাপদ আমিষ ও পুষ্টির চাহিদা পূরণ, কর্মসংস্থান সৃষ্টি, রপ্তানি স¤প্রসারণ, বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন তথা দেশের সামগ্রিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে মৎস্য খাতের অবদান অনস্বীকার্য। নদ-নদী, খাল-বিল, পুকুর, হাওড়, বাওড় নিয়ে বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ মুক্ত জলাশয় আছে ৩৮.৬ লক্ষ হেক্টর, আর বদ্ধ জলাশয় আছে ৮.৫ লক্ষ হেক্টর এবং দক্ষিণের সুবিস্তৃত ১ লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার সামুদ্রিক জলসীমা আমাদের মৎস্য সম্পদের উৎস। মৎস্য সম্পদ সংরক্ষণ, উন্নয়ন, ব্যবস্থাপনা, টেকসই আহরণ ও উৎপাদনে সরকার কার্যকর, সময়োপযোগী, কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করে চলেছে। তাই বাংলাদেশ আজ মাছে স্বয়ংসম্পূর্ণ।
শ্রেষ্ঠ চিংড়ি চাষি হিসেবে ইতোমধ্যে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে অসংখ্য পুরস্কার পেয়েছেন গোলাম কিবরিয়া রিপন। ২০১৩, ২০১৬, ২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে উপজেলা পর্যায়ে এবং ২০২৩ সালে উপজেলা ও জেলা পর্যায়ে মৎস্য অধিদপ্তর থেকে পুরস্কার হিসেবে সম্মাননা ক্রেস্ট পান। 
এ প্রসঙ্গে গোলাম কিবরিয়া রিপন বলেন, যেকোনো পুরস্কার মানুষকে তার কর্মক্ষেত্রে উৎসাহিত এবং অনুপ্রাণিত করে। জাতীয় মৎস্য পদকের জন্য মনোনীত হওয়া এটি আমার জীবনের জন্য সৌভাগ্যের অনেক বড় প্রাপ্তি। পদকের জন্য মনোনীত করায় সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, মৎস্য অধিদপ্তর এবং চিংড়ি চাষিসহ সকল শুভাকাক্সক্ষীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন গোলাম কিবরিয়া রিপন।
 

্রিন্ট

আরও সংবদ