খুলনা | মঙ্গলবার | ২৬ অগাস্ট ২০২৫ | ১০ ভাদ্র ১৪৩২

শত্রুতা ভুলে চীনের সঙ্গে বন্ধুত্ব বাড়াচ্ছে ভারত

খবর প্রতিবেদন |
০৩:৪৭ পি.এম | ২১ অগাস্ট ২০২৫


সম্পর্ক মজবুত করতে সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে সফর করেছেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং লি। পাশাপাশি- নয়াদিল্লিকে ফের বিরল খনিজ, রাসায়নিক সার থেকে বিভিন্ন পণ্য সরবরাহ করবে বেইজিং।

‘শুল্ক-খ্যাপা’ মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সামলাতে পাল্টা চাল দেওয়া শুরু করেছে ভারত। এই অবকাশে ধীরে ধীরে চীনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়াচ্ছে ভারত।

অন্য দিকে, শত্রুতা সরিয়ে রেখে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বেইজিংও। এই পরিস্থিতি যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ‘জোঁকের মুখে নুন’ পড়ার শামিল বলে মনে করছেন কূটনীতিকদের একাংশ।

যদিও ২০২০ সালের গালওয়ান সংঘর্ষকে মাথায় রেখে চীনকে পুরোপুরি বিশ্বাস করা নিয়ে আপত্তি রয়েছে এ দেশের অধিকাংশ সাবেক সেনা অফিসারের।

চলতি বছরের এপ্রিলে ট্রাম্প ‘শুল্কযুদ্ধ’ শুরু করা পর্যন্ত ভারতের কাছাকাছি আসতে মরিয়া হয়ে ওঠে চীন। এ অঞ্চলে মার্কিন আধিপত্য ভাঙতে এশিয়ার সুপার পাওয়ারদের মধ্যে ঐক্য জরুরি।

যদিও প্রাথমিক ভাবে সীমান্ত সংঘাতের কারণেই বিষয়টিকে আমল দেয়নি সাউথ ব্লক। কিন্তু, জুলাইয়ে এ দেশের পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট অতিরিক্ত ২৫ শতাংশ কর চাপাতেই ঘুরতে থাকে খেলা।

বাণিজ্যিক সম্পর্ক মজবুত করতে উত্তর ও উত্তর-পূর্বের প্রতিবেশীর সঙ্গে আলোচনায় বসেন নয়াদিল্লির কর্তাব্যক্তিরা।

কূটনীতিকদের দাবি, ঠিক এক মাসের মাথায় এ ব্যাপারে যথেষ্ট সাফল্য পেয়েছে কেন্দ্র। এতদিন পর্যন্ত ভারতে বিরল খনিজ রফতানি বন্ধ রেখেছিল চীন।

কিন্তু, ট্রাম্পের ‘শুল্ক-বাণ’ ঠেকাতে এবার সেই দরজা খুলতে রাজি হয়েছে বেইজিং। এ ছাড়া রাসায়নিক সার এবং টানেল বোরিং মেশিনও নয়াদিল্লিকে সরবরাহ করবে ড্রাগনভূমির বিভিন্ন সংস্থা।

মেট্রো রেলের সম্প্রসারণ এবং পাহাড়ি এলাকায় রাস্তা নির্মাণে সুড়ঙ্গ খুঁড়তে এই যন্ত্র একান্ত ভাবে প্রয়োজন।

বর্তমানে বিশ্বের বৃহত্তম বিরল খনিজের রফতানিকারী দেশ হল চীন। ভারতের আমদানি করা এই খনিজ সম্পদের ৬৬ শতাংশ পাঠায় চীন সরকার। মাঝে চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় সেটা বেড়ে ৮৫ শতাংশে পৌঁছেছিল।

বৈদ্যুতিন গাড়ি থেকে শুরু করে মহাকাশ গবেষণা, এমনকি প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম নির্মাণেও বিপুল পরিমাণে ব্যবহার হয়ে থাকে এই বিরল খনিজ।

২০২০ সালের পর এর রফতানিতে বেইজিং রাশ টানায় বিপাকে পড়ে নয়াদিল্লি। গতি হারায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি।

গত ১৮ অগস্ট ভারত সফরে আসেন চীনা পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই। ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্করের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি।

এর পরেই বিরল খনিজের রফতানি ফের পূর্ণ গতিতে বেইজিং শুরু করবে বলে খবর প্রকাশ্যে আসে। নয়াদিল্লি অবশ্য এই ক্ষেত্রেও ‘আত্মনির্ভর’ হওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে।

দ্বিতীয় সাফল্যের জায়গাটি হল রাসায়নিক সার। বিরল খনিজের মতো ভারতের ক্ষেত্রে এটির রফতানিও বন্ধ রেখেছিল চীন। এ দেশের কৃষিতে ডায়মনিয়াম ফসফেটের গুরুত্ব অপরিসীম, যার সিংহভাগই আসত ড্রাগনভূমি থেকে।

বেইজিংকে বাদ দিলে রাশিয়া থেকে বিপুল পরিমাণে সার আমদানি করে নয়াদিল্লি। কিন্তু, মস্কোর দূরত্ব বেশি হওয়ায় এর জন্য খরচ হয় অনেক বেশি।

চীনা সারের সরবরাহ ফের শুরু হলে ভারতের চাষিদের মুখে যে হাসি ফুটবে, তা বলাই বাহুল্য। শীতের ফসলে এর সুফল দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

্রিন্ট

আরও সংবদ