খুলনা | শনিবার | ২৩ অগাস্ট ২০২৫ | ৮ ভাদ্র ১৪৩২

সাদাপাথর লুটে জড়িত কার্যক্রম নিষিদ্ধ আ’লীগ বিএনপি-জামায়াত ও এনসিপির ৫২ নেতা

খবর প্রতিবেদন |
০১:০২ এ.এম | ২২ অগাস্ট ২০২৫


সিলেটের কোম্পানীগঞ্জ ভোলাগঞ্জে সাদাপাথর লুটের ঘটনায় ৫২ জনকে চিহ্নিত করেছে দুদক। তাদের মধ্যে সিলেট মহানগর বিএনপি, জামায়াত, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) ও কার্যক্রম নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতারা রয়েছেন। কমিশনের এনফোর্সমেন্ট টিম অভিযান ও অনুসন্ধান চালিয়ে তাদের সংশ্লিষ্টতা পেয়েছে। তবে আরও কয়েকজনের নাম যাচাই-বাছাইয়ের কাজ চলমান।
সাদাপাথর চুরির ঘটনায় খনিজসম্পদ উন্নয়ন ব্যুরো, স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যদের কর্তব্যে অবহেলার তথ্যও পেয়েছে দুদক।
সূত্র জানায়, স¤প্রতি ভোলাগঞ্জ থেকে ১০ লাখ ঘনফুট পাথর চুরি হয়েছে। এর মধ্যে অতি মূল্যবান সাদাপাথর উদ্ধার করা হয়েছে প্রায় আড়াই লাখ ঘনফুট। গত এক বছরে সাদাসহ অন্যান্য পাথর চুরি হয়েছে প্রায় ৪০ লাখ ঘনফুট। সাদাপাথর চুরির ঘটনা ধরা পড়ে গত ১০ আগস্ট। এরপর দুদক ভোলাগঞ্জে অভিযান চালায় গত ১৩ আগস্ট।
দুদকের অনুসন্ধানে ভোলাগঞ্জ থেকে পাথর চুরির সঙ্গে ৪২ জন স্থানীয় ব্যক্তি চিহ্নিত হয়েছেন। তালিকায় বিএনপি’র ২০, আওয়ামী লীগের ৭, জামায়াতে ইসলামী ও এনসিপি দু’জন করে এবং স্থানীয় ১১ জন ব্যক্তি রয়েছেন।
বিএনপি’র ২০ নেতা-কর্মী হলেন সিলেট মহানগর বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি রেজাউল হাসান কয়েস লোদী, সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র সভাপতি সাহাব উদ্দিন, সদস্য হাজি কামাল, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা শ্রমিক দলের সাবেক সভাপতি ও সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান লাল মিয়া, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন ওরফে দুদু, সিলেট জেলা যুবদলের যুগ্ম-সম্পাদক রুবেল আহমেদ বাহার, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মুসতাকিন আহমদ ফরহাদ, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র দফতর সম্পাদক মোঃ দুলাল মিয়া ওরফে দুলা, যুগ্ম-আহŸায়ক রজন মিয়া, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা যুবদল নেতা জসিম উদ্দিন, সাজন মিয়া, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপি’র কর্মী জাকির হোসেন, সদস্য মোজাফর আলী, মানিক মিয়া, সিলেট জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মকসুদ আহমদ, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম ওরফে শাহপরান, কোষাধ্যক্ষ (বহিষ্কৃত) শাহ আলম ওরফে স্বপন, সাংগঠনিক সম্পাদক আবুল কাশেম এবং পূর্ব জাফলং ইউনিয়ন বিএনপি’র সভাপতি আমজাদ বক্স।
আওয়ামী লীগের ৭ নেতা-কর্মী হলেন সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের কর্মী বিল­াল মিয়া, শাহাবুদ্দিন, গিয়াস উদ্দিন, কোম্পানীগঞ্জ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আবদুল ওদুদ আলফু, কর্মী মনির মিয়া, হাবিল মিয়া ও সাইদুর রহমান।
জামায়াতের ২ নেতা হলেন সিলেট মহানগর জামায়াতের আমির মোঃ ফখরুল ইসলাম এবং সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন।
এনসিপির দুই নেতা হলেন সিলেট জেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির প্রধান সমন্বয়কারী নাজিম উদ্দিন ও মহানগর প্রধান সমন্বয়কারী আবু সাদেক মোহাম্মদ খায়রুল ইসলাম চৌধুরী।
দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিমের প্রতিবেদনে বলা হয়, অবৈধ পাথর উত্তোলনে প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এ কাজে স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ ও বিজিবির সদস্যদের অবহেলাও ধরা পড়েছে। বিষয়টি দ্রুত কমিশনে জমা দিয়ে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
অভিযুক্ত বিএনপি নেতা কয়েস লোদী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘আমাকে মিথ্যাভাবে জড়ানো হয়েছে প্রকৃত লুটেরাদের আড়াল করার জন্য। এই অপপ্রচার প্রকৃত দোষীদের আড়াল করার ষড়যন্ত্র।’
একই ভাবে জামায়াত নেতা ফখরুল ইসলামও অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, ‘পাথর লুটের সঙ্গে আমার নাম জড়ানো একটি ষড়যন্ত্রমূলক অপপ্রচার।’
দুদক মহাপরিচালক ও মুখপাত্র মোঃ আক্তার হোসেন বলেন, ‘এনফোর্সমেন্ট টিম পাথর উত্তোলনের মাধ্যমে প্রাকৃতিক সম্পদের ব্যাপক ক্ষতিসাধনের অভিযোগে দ্রুত কমিশনে প্রতিবেদন দাখিল করবে। এর ভিত্তিতে কমিশন পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেবে।’

্রিন্ট

আরও সংবদ