খুলনা | শনিবার | ২৩ অগাস্ট ২০২৫ | ৭ ভাদ্র ১৪৩২

দুর্ঘটনা রোধে সড়কে ধানমাড়াই বন্ধ করতেই হবে

|
১২:১২ এ.এম | ২৩ অগাস্ট ২০২৫


সড়কে ধানমাড়াইয়ের ঘটনা এ দেশে নতুন নয়। ধান কাটার পর গ্রামগঞ্জ বা মফস্বলের সড়কগুলোতে এ দৃশ্য অহরহ দেখা যায়। কিন্তু কোনো ব্যস্ততম সড়কে ধানমাড়াইয়ের কাজ কতটা ঝুঁকিপূর্ণ, তা প্রকাশ পায় রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ-ফরিদপুর-তারাইল (গোপালগঞ্জ) ভেড়িবাঁধ সড়কটির ক্ষেত্রে। স¤প্রতি এ সড়কের ওপর বেপরোয়াভাবে ধানমাড়াইয়ের কাজ চলায় শুধু সাধারণ মানুষ নয়, যানবাহনের চালক ও আরোহীরাও মারাত্মক ঝুঁঁকির মধ্যে পড়ছেন।
সড়কের বিভিন্ন অংশে, কৃষকেরা নির্বিচার ধানমাড়াইয়ের যন্ত্র বসিয়ে কাজ করছেন। এতে সড়কের একটি বড় অংশ দখল হয়ে যাচ্ছে। ফলে পথচারী ও ছোট যানবাহন চলাচলের জায়গা সীমিত হয়ে পড়ছে। সমস্যা আরও গুরুতর হচ্ছে, যখন মাড়াইয়ের সময় যন্ত্র থেকে ছিটকে আসা খড় পথচারী ও বাইক আরোহীদের চোখেমুখে লাগছে, যা মারাত্মক দুর্ঘটনার কারণ হচ্ছে। এমনকি এই খড় চোখের মধ্যে ঢুকে গিয়ে দৃষ্টিশক্তিও কেড়ে নিতে পারে।
শুধু তা-ই নয়, ধানমাড়াইয়ের পর কৃষকেরা ওই খড় সড়কের ওপরই শুকাতে দিচ্ছেন। এর ফলে যানবাহন চলাচলে বড় ধরনের বাঁধা তৈরি হচ্ছে। সামান্য অসাবধানতায় বড় দুর্ঘটনা ঘটে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়। এই বেপরোয়া কার্যকলাপে এরই মধ্যে একাধিক দুর্ঘটনার খবর পাওয়া গেছে। কয়েকজন ব্যবসায়ী মোটরসাইকেল নিয়ে যাওয়ার সময় খড়ের কারণে চোখেমুখে আঘাত পেয়ে গুরুতর আহত হয়েছেন, এমনকি হাসপাতালে পর্যন্ত চিকিৎসা নিতে হয়েছে।
কৃষকদের দাবি, তাঁদের বাড়িতে পর্যাপ্ত জায়গা না থাকায় তাঁরা বাধ্য হয়ে সড়কের ওপর ধানমাড়াইয়ের কাজ করছেন। কিন্তু সড়ক তো কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর নিজস্ব সম্পত্তি নয়। যন্ত্রের মালিকেরাও এখানে নিজেদের দায় এড়িয়ে যাচ্ছেন, কেবল টাকার বিনিময়ে যেখানে খুশি যন্ত্র বসিয়ে দিচ্ছেন।
স্থানীয় প্রশাসন, বিশেষ করে গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মন্তব্য কিছুটা আশাব্যঞ্জক। তিনি এ সমস্যার কথা জেনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। তবে শুধু আশ্বাসই যথেষ্ট নয়। প্রশাসনের উচিত দ্রুত সরেজমিনে এ সমস্যার সমাধান করা। প্রথমত, কৃষি কর্মকর্তার মাধ্যমে কৃষকদের বোঝানো যেতে পারে। যদি তাতে কাজ না হয়, তাহলে প্রয়োজনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া অপরিহার্য। ধানমাড়াইয়ের যন্ত্রও জব্দ করতে হবে। কারণ, জননিরাপত্তা সবার আগে। এমনিতেই আমাদের সড়কগুলোয় জননিরাপত্তা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। আইন প্রয়োগ না হওয়া, আইন না মানাসহ সড়ক অব্যবস্থাপনার অনেক কিছুই এখানে যুক্ত। এমন পরিস্থিতির মধ্যে ধানমাড়াইয়ের কারণেও সড়কের এমন নিরাপত্তাহীনতা মানা যায় না। আমরা আশা করব, শুধু রাজবাড়ী নয়; দেশের অন্যান্য এলাকায়ও সড়কে ধানমাড়াইয়ের কাজ বন্ধ করতে হবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ