খুলনা | বৃহস্পতিবার | ২৮ অগাস্ট ২০২৫ | ১২ ভাদ্র ১৪৩২

উর্ধ্বমুখি চাল, সবজি, মুরগি ও ভোজ্য সয়াবিনের বাজার

আল মাহমুদ প্রিন্স |
০১:০৮ এ.এম | ২৩ অগাস্ট ২০২৫


উর্ধ্বমুখি হয়ে উঠেছে চাল, সবধরনের সবজি, মুরগি ও ভোজ্য সয়াবিনের বাজার। একই সাথে বেড়ে চলেছে ব্রয়লা ও কক মুরগির দাম। কয়েক দিনের ব্যবধানে বেড়েছে কাঁচামরিচ, পেঁয়াজ ও রসুনের দাম। কমেনি লেয়ার ও দেশি মুরগির ডিমের দাম। দফায় দফায় বাড়ছে নিত্যপ্রয়োজনীয় এসব পণ্য ও জিনিসের দাম। স্থিতিশীল রয়েছে মশুর ডালের দামও। সব মিলিয়ে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য ও জিনিসের মূল্য যেন আকাশ ছোঁয়া। দুই মাসের ব্যবধানে কাঁচামরিচের দাম কেজিপ্রতি ১২০ টাকা ও পেঁয়াজের দাম ৪০টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। 
এদিকে বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ থাকলেও কমছে না সবজির দাম। কতিপয় ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেটের কারণে কৌশলে পকেট কাটছে ভোক্তাদের। দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছে নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ।    
শুক্রবার নগরীর কয়েকটি বাজার ঘুরে ও খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মহানগরীর ২৬টি বাজারে প্রতিকেজি বেগুন ১০০ টাকা, আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা, কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ মানভেদে ৭৫ থেকে ৮০ টাকা, দেশি রসুন ১০০ থেকে ১২০ টাকা, চায়না রসুন ২০০ টাকা। এছাড়া প্রতিকেজি কাকরল, মিষ্টিকুমড়া, পটল, ঝিঙে, ঢেঁড়শ, বরবটি সিম ৬০ টাকা, করল­া ৮০, পেঁপে ৩০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। 
অথচ গত ২০ জুন প্রতিকেজি প্রতিকেজি বেগুন ৬০ টাকা, আলু ২০ টাকা, কাঁচামরিচ ৮০ টাকা, দেশি পেঁয়াজ মানভেদে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা, দেশি রসুন ৮০ থেকে ১০০ টাকা, চায়না রসুন ২০০ টাকা। এছাড়া প্রতিকেজি কাকরল ৬০ টাকা, পেঁপে ২৫ টাকা, মিষ্টিকুমড়া ৩০ পটল ৩০ টাকা, ঝিঙে ৪০ টাকা, ঢেঁড়শ ৩০ টাকা, বরবটি সিম ৪০ টাকা, করল­া ৫০ টাকা ও  পেঁপে ২৫ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। 
কাটছে না চালের বাজারের অস্থিরতা। দিন দিন উর্ধ্বমুখি হয়ে উঠছে সবধরণের চালের দাম। চালের দাম কেজিপ্রতি বেড়েছে অন্তত ৫ থেকে ৬ টাকা। নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতিকেজি মোটা চাল (স্বর্ণা) ৫৫ থেকে ৬০ টাকা, আঠাশ বালাম ৬০ থেকে ৬৫ টাকা, মিনিকেট ভালোমানের ৭৫ থেকে ৮০ টাকা, মিনিকেট নি¤œমানের ৭০ থেকে ৭৫ টাকা, বাসমতি ৮০ থেকে ৮৫ টাকা, কালোজিরা ১১০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে। 
অথচ গত ২০ জুন নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজারে প্রতিকেজি মোটা চাল (স্বর্ণা) ৫২ থেকে ৫৪ টাকা, আঠাশ বালাম ৬০ থেকে ৬২ টাকা, মিনিকেট ভালোমানের ৭২ থেকে ৭৪ টাকা, মিনিকেট নিম্নমানের ৬৫ টাকা, বাসমতি ৭৫ থেকে ৭৬ টাকা,  কালোজিরা ১০০ টাকা দরে বিক্রি হয়।
বেড়েছে কাঁচামরিচের দাম। ব্যবসায়ীরা বলছেন অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে এ পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বাজার দর মনিটরিং ব্যবস্থা কম থাকায় কৌশলে পকেট কাটছে ভোক্তাদের। কমেনি কাঁচাকলার দাম। প্রতিহালি কাঁচাকলা বিক্রি হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে। 
কমছে না মশুর ডালের দাম। মাসের পর মাস চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে এ পণ্যটি। অধিকাংশ ভোক্তা মশুর ডাল কমবেশি পছন্দ করেন। অথচ খুলনার বাজারে প্রতিকেজি মশুর ডাল (সরু) ১৫০ টাকা ও মশুর ডাল (মোটা) ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অথচ সপ্তাহখানেক আগেও প্রতিকেজি মশুর ডাল (সরু) বিক্রি হয়েছে ১৪০ টাকা দরে। অর্থাৎ, কেজিপ্রতি বৃদ্ধি পেয়েছে দশ টাকা। 
বেড়েছে নিত্যপ্রয়োজনীয় ভোজ্য সয়াবিন তেলের মূল্য। বাজারে বোতলজাত সয়াবিন ফ্রেশ, তীর, বসুন্ধরা সয়াবিন (৫ লিটার) বিক্রি হচ্ছে ৯১৫ টাকা দরে। লিটারপ্রতি যা বিক্রি হয়েছে ১৮৩ টাকা দরে। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে লুজ সয়াবিন। অথচ দুই মাস আগে বাজারে বোতলজাত সয়াবিন ফ্রেশ, তীর, বসুন্ধরা সয়াবিন (৫লিটার) বিক্রি হচ্ছে ৮৭৫ টাকা দরে। লিটারপ্রতি যা বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ টাকা দরে। 
কমেনি মুরগির দাম। বাজারে প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি ১৬০ টাকা, কক মুরগি ২৮০ থেকে ৩০০টাকা,  সোনালী মুরগি ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বেড়েছে ডিমের দাম। প্রতিহালি লেয়ার মুরগির ডিম (সাদা) ৪০ থেকে ৪৪ টাকা, লেয়ার মুরগির ডিম (লালচে) ৪৮ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।    
নগরীর ময়লাপোতাস্থ কেসিসির সন্ধ্যা বাজারে আসা ক্রেতা সফিউল ইসলাম বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের পাশাপাশি সবধরনের সবজির দাম বেড়েছে। বাজার দর মনিটরিং ব্যবস্থা আরো জোরদার করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, বাজারে পর্যাপ্ত সবজি থাকার পরও দাম অনেক বাড়তি। ষাট টাকার নিচে কোনো সবজি মিলছে না। তিনি বলেন, বেগুনও ১০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে। আর ২০০ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ। আরো বলেন, চালের বাজারতো উর্দ্ধমূখি। নগরীর এ্যাপ্রোচ রোড়স্থ কেসিসি রূপসা মার্কেটে আসেন মাদ্রাসা শিক্ষক হায়দার আলী। তিনি বলেন, চাল, ডাল, সয়াবিন তেল ও সবজির পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রত্যেকটি পণ্য ও জিনিসের দাম দফায় দফায় বেড়ে চলেছে। বাজার দর মনিটরিং ব্যবস্থা আরো জোরদার করার জন্য সংশ্লিষ্ট ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন তিনি।  

্রিন্ট

আরও সংবদ