খুলনা | মঙ্গলবার | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ২৫ ভাদ্র ১৪৩২

হরতাল চলাকালে মোংলা ও ফকিরহাটে নির্বাচন অফিসে তালা

মোংলা ও ফকিরহাট প্রতিনিধি |
১২:১৯ এ.এম | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫


মোংলা-রামপাল সংসদীয় আসন বাগেরহাটের-৩-সহ জেলার চারটি আসন পুনর্বহালের দাবিতে প্রথম দিনের মোংলা বন্দর জুড়ে চলছে হরতাল। পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী চার দিনের কর্মসূচির মধ্যে সোমবার সকাল ৬টা থেকে নদী পাড়াপার, ইপিজেড, মোংলা বন্দরসহ সকল শিল্প প্রতিষ্ঠান, সরকারি-বেসরকারি অফিসসহ সকল কার্যক্রম বন্ধ ও সড়ক অবরোধসহ এক টানা এ হরতাল সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত চলে বলে জানায় সর্ব দলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতৃবৃন্দরা। মঙ্গলবার বিক্ষোভ ও বুধ ও বৃহস্পতিবার এক টানা ৪৮ ঘন্টা আবারও হরতাল পালন করার ঘোষণা দিয়েছে সর্ব দলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতৃবৃন্দরা। 
সোমবার সকাল ৬টা থেকেই মোংলার সকল দোকানপাট ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখছে ব্যবসায়ীরা। সাথে সাথে বন্ধ হয়ে যায় মোংলা-ঘষিয়াখালী নৌ-ক্যানেল দিয়ে সকল ধরণের নৌচলাচল। বন্ধ রাখা হয়েছে নদী পাড়াপারের খেয়ার ট্রলারও। এতে নদীর দুই পাড়ে ইপিজেডের গার্মেন্টস কর্মীসহ শত শত মানুষ জড়ো হয় তাদের কর্মস্থলে যাওয়ার জন্য। বিড়ম্বনায় পড়েছে দূরপাল­ার যাত্রীরা। 
এছাড়া মোংলা বাসস্ট্যান্ড থেকে সকাল থেকে ছেড়ে যায়নি খুলনা-যশোর-বাগেরহাট ও ঢাকা চট্টগামসহ দূরপাল­ার কোন বাস। শহরেও কোন গাড়ি বা ভ্যান রিকশা চলতে দেয়া হয়নি। এ হরতালের ফলে নি¤œ আয়ের মানুষগুলোর কাটাতে হবে মানবতার জীবন-যাপন। যারা সকাল হলেই দিন মজুর বার ভ্যান রিকশা চালিয়ে সংসার পরিচালিত হতো, তাদের এখন অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাতে হবে। 
ভোর থেকেই হরতাল সফল হওয়ার জন্য সড়ক-মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে এবং রাস্তার মোড়ে মোড়ে বসে থেকে হরতাল পালন করতে সহায়তা করে সর্ব দলীয় সম্মিলিত কমিটির নেতা-কর্মীরা। শহরের বিক্ষোভ মিছিল ও পথসভাও করেছে তারা। এছাড়া হরতালের অংশ হিসেবে নেতা-কর্মীরা সকাল থেকে সড়ক অবরোধ করে মোংলা উপজেলা নির্বাচন অফিসের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয় নেতা-কর্মীরা। পরে উপজেলা চত্বর থেকে মিছিল সহকারে শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। 
নেতা-কর্মীরা বলেন, দেশ স্বাধীনতার পর থেকেই বাগেরহাট জেলা ৪টি আসন বহালছিল। ৩০ জুলাই আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ জেলার চারটি আসনের মধ্যে একটি অংশ কমিয়ে তিনটি আসন করার প্রাথমিক প্রস্তাব দিয়েছিল নির্বাচন কমিশন। এরপর থেকেই মোংলা-রামপালসহ বাগেরহাটবাসী আন্দোলন শুরু করে। তবে যদি নির্বাচন কমিশন তার সিদ্ধান্ত থেকে সরে না আসে তবে আরো কঠোর আন্দোলনের হুঁশিয়ারী দেন সর্বদলীয় সম্মিলিত কিমিটর নেতৃবৃন্দরা। 
ফকিরহাট: একই দাবিতে সর্বদলীয় সম্মিলিত কমিটির ডাকা কর্মসূচির অংশ হিসেবে ফকিরহাট উপজেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হয়েছে। এছাড়াও সকল দোকান-পাট বন্ধ দেখা গেছে। সোমবার সকালে হরতাল সমর্থনকারী ফকিরহাট উপজেলা নির্বাচন অফিসের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়। এ কর্মসূচিতে বিএনপি, জামায়াত ইসলামীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা অংশ নেয়।
এদিন সকাল থেকে ফকিরহাট সড়ক মহাসড়কে দূরপাল­ার কোনো পরিবহন যাতায়াত করতে দেখা যায়নি। সকাল থেকে ফকিরহাট বিশ্বরোড় মোড়, কাটাখালী চত্বরসহ বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, দূরপাল­ার বাস চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল। তবে গ্রাম অঞ্চল দিয়ে সীমিত আকারে ব্যাটারি চালিত ইজিবাইক ও ভ্যান চলতে দেখা গেছে। হরতালের কারণে উপজেলার সকল দোকানপাটও বন্ধ রয়েছে। জরুরি প্রয়োজনে কিছু ফার্মেসীর দোকান খোলা দেখা গেছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো।
এদিকে হরতাল সমর্থনে এবং চারটি আসন বহাল রাখার দাবিতে মহাসড়কে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ মিছিল করে হরতাল সমর্থনকারীরা। টায়ার চালিয়ে ও কাঠের গুড়ি ফেলে সড়কে ব্যারিকেট দিয়ে রাখে। এ সময় এ্যাম্বুলেন্সসহ জরুরি পরিবহনগুলো ছেড়ে দিতে দেখা গেছে।
এ সময় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীরা জানান, বাগেরহাট জেলায় চারটি সংসদীয় আসন পুনর্বহাল না করা হলে লাগাতার কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।  

্রিন্ট

আরও সংবদ