খুলনা | বুধবার | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ২৫ ভাদ্র ১৪৩২

জিন তাড়াতে গিয়ে ধর্ষণ চেষ্টা, ব্যর্থ হয়ে মা-মেয়েকে হত্যা

খবর প্রতিবেদন |
০৪:২১ পি.এম | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫


ধর্ষণে ব্যর্থ হয়ে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের লোক প্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন ও তাঁর মা তাহমিনা বেগমকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। হত্যাকারী মোবারক হোসেন (২৯) পেশায় একজন কবিরাজ এবং মাদ্রাসার খাদেম।

মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) দুপুর ২ টার দিকে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিষয়গুলো তুলে ধরেন।

গ্রেফতারকৃত আসামির নাম মোবারক হোসেন (২৯)। তিনি কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার কাবিরপুরের মৃত আব্দুল জলিল ও খাদিজা বেগমের সন্তান। ঢাকা পালিয়ে যাওয়ার পথে দুর্গাপুর থেকে গতকাল সোমবার তাকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ।

ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, গ্রেফতারকৃত আসামি মোবারক হোসেনকে (২৯) জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, নিহত তাহমিনা বেগমের মেয়ে সুমাইয়া আফরিন কথিতভাবে জিনে ধরা সমস্যায় ভুগছিলেন। এজন্য তাহমিনা বেগম মেয়েকে নিয়ে বাবুস সালাম জমিরিয়া মাদরাসার ইলিয়াস হুজুরের কাছে ঝাড়ফুঁক করাতে যেতেন। এ সময় আসামি মোবারক হোসেনের সাথে তাহমিনা বেগমের পরিচয় হয় এবং তিনি মোবারককে তার বাসায় এসে মেয়ের ওপর ঝাড়ফুঁক করার অনুরোধ জানান।

এরপর আসামি একাধিকবার নিহতের বাসায় গিয়ে সুমাইয়া আফরিনকে ঝাড়ফুঁক করেন। প্রায় এক মাস ধরে আসামি নিয়মিতভাবে ওই বাড়িতে যাতায়াত করছিলেন।

আরও জানানো হয়, ঘটনার দিন সকাল সাড়ে আটটার দিকে মোবারক একটি কমলা রঙের শপিং ব্যাগ ও একটি কালো ব্যাগ নিয়ে নিহতের বাসায় প্রবেশ করেন। তিনি সেদিনও সুমাইয়াকে ঝাড়ফুঁক করেন এবং বাসায় পানি ছিটিয়ে দেন। তারপর সকাল ১১টা ২৩ মিনিটে বাসা থেকে বের হয়ে ১১টা ৩৪ মিনিটে তিনি আবার বাসায় ফিরে আসেন। ফিরে এসে দেখেন, তাহমিনা বেগম নিজের কক্ষে বিশ্রাম নিচ্ছেন। এরপর আসামি মোবারক সরাসরি সুমাইয়া আফরিনের কক্ষে গিয়ে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন।

এ সময় তাহমিনা বেগম ঘটনাটি দেখে ফেলেন এবং বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাদের মধ্যে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে মোবারক তাহমিনা বেগমকে তার কক্ষে নিয়ে গিয়ে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। পরে তিনি আবার সুমাইয়ার কক্ষে প্রবেশ করে পুনরায় ধর্ষণের চেষ্টা করেন। কিন্তু সুমাইয়া প্রতিরোধ করলে আসামি তাকে গলা টিপে শ্বাসরোধে হত্যা করে।

এছাড়া আসামীর কাছে থেকে চোরাইকৃত চারটি মোবাইল ও একটি ল্যাপটপ, মোবাইল ও ল্যাপটপের চার্জার উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া আসামি নিহতের বাসায় কমলা রঙের যে ব্যাগটি নিয়ে প্রবেশ করা হয়েছি। তা আসামীর বাসা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

এ বিষয়ে পুলিশ সুপার মোহাম্মদ নাজির আহমেদ খানও কোন আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করতে রাজি হননি।

উল্লেখ্য, গতকাল সোমবার (০৮ সেপ্টেম্বর) সকালে লোকপ্রশাসন বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সুমাইয়া আফরিন ও তার মা তাহমিনা বেগমের লাশ কুমিল্লা শহরের কালিয়াজুরীর ভাড়া বাসা উদ্ধার করে পুলিশ।

্রিন্ট

আরও সংবদ