খুলনা | বুধবার | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ২৬ ভাদ্র ১৪৩২

নেপালের সরকারপ্রধান হিসেবে যাকে চায় ‘জেন জি’

খবর প্রতিবেদন |
০৬:০১ পি.এম | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫


ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি। ইতোমধ্যেই তিনি দেশ ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এর মধ্যেই দেশটির পরবর্তী সরকারপ্রধান কে হবে তা নিয়ে আলোচনা শুরু হয়েছে। এই তালিকায় সবার ওপরে আছেন রাজধানী কাঠমান্ডুর মেয়র বালেন্দ্র শাহ, যিনি বালেন শাহ নামে পরিচিত। ধারণা করা হচ্ছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধের সিদ্ধান্ত এবং সরকারের দুর্নীতির বিরুদ্ধে শুরু হওয়া এই আন্দোলনের নেপথ্যে যারা রয়েছেন তাদের মধ্যে বালেন শাহ অন্যতম। তাকেই কেপি শর্মা ওলির আসনে দেখতে চায় জেন জি।    

বর্তমানে কাঠমাণ্ডুর মেয়র বালেন্দ্র শাহ। মেয়রের দায়িত্বে থাকলেও সামাজিক কাজেই বেশি যুক্ত থাকেন তিনি। যুবসমাজের একটা বিশাল অংশ বালেনের ভক্ত। সোশ্যাল মিডিয়ায় খুব সক্রিয় তিনি। সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন এমন জিনিস পোস্ট করেন যা বিতর্কের জন্ম দেয়। তার জীবনযাপন, স্টাইল, গাড়ির কালেকশন ইত্যাদির কারণে অনেকের কাছে রোল মডেল।

বালেন শাহ কোনও রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান নন। তিনি একজন সিভিল ইঞ্জিনিয়ার হিসেবে তার ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন। তারপর র‍্যাপার হিসেবে ভাগ্যে অন্বেষণের চেষ্টা করেন। তাতে সাফল্যও পান। সবশেষে রাজনীতিতে যোগ দেন। ২০২২ সালে কাঠমাণ্ডুর মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন এবং জেতেন। রাজনীতিতে তার অপ্রত্যাশিত উত্থান, জনপ্রিয়তা তাকে যুবসমাজের আইডল করে তোলে।

নেপাল সরকার ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব এবং এক্সসহ ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম নিষিদ্ধের প্রতিবাদে রাস্তার নামে জেন-জি হিসেবে পরিচিত দেশটির তরুণ প্রজন্ম, পরে এতে যোগ দেয় সর্বস্তরের নাগরিগরাও এবং বিক্ষোভ তীব্র আকার ধারণ করে। এই অস্থিরতার মধ্যেই বালেন শাহ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন।

এক ফেসবুক পোস্টে বালেন জানান, আয়োজকরা আন্দোলনে যোগ দেওয়ার জন্য বয়সসীমা বেধে দেওয়া কারণে তিনি এতে অংশ নেননি। তবে আন্দোলনকে পূর্ণভাবে তিনি সমর্থন করেন।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের দাবি, বালেন শাহ এই আন্দোলনের গুরুত্ব বোঝেন এবং এতে সবধরণের সহযোগিতাও করেছেন তিনি।

এদিকে নেপালের তরুণরা শীর্ষ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের সঙ্গে বালেন শাহের তুলনা করতে শুরু করেছে। মেয়র পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশের দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বানও জানানো হচ্ছে তাকে।

নেপালি সংবাদমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বিশেষ করে ফেসবুকে বালেনের সমর্থনে বহু পোস্ট করা হয়েছে। তাকে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করে দেশ পরিচালনার আবেদন জানানো হচ্ছে। সেই দেশের বৃহৎ অংশের মানুষের দাবি, দেশের তিনটি ঐতিহ্যবাহী প্রধান দলের নেতারা তাদের কাজ করতে ব্যর্থ হয়েছেন। সেই কারণে নতুন দলের প্রয়োজন।

অন্যদিকে কেপি শর্মা ওলি ও বালেন শাহর মধ্যে দ্বন্দ্ব যদিও আজকের নয়। এক সময় কাঠমাণ্ডু মেট্রোপলিটন সিটির ৩ হাজার ৫০০ জনেরও বেশি কর্মচারীর দীর্ঘদিন ধরে বেতন পাচ্ছিলেন না। তখন বালেন তাদের পাশে দাঁড়ান। তখন তরুণরা আন্দোলনকে সমর্থন করেন। এছাড়াও একাধিক আন্দোলনে সরকার বিরোধিতা করেছিলেন বালেন।

নেপালি সংবাদমাধ্যম কাঠমান্ডু পোস্ট এক সম্পাদকীয় প্রতিবেদনে জানিয়েছে, গত কয়েক দিনের হত্যাযজ্ঞের পর দেশকে নিতে হবে শান্তির পথে। দরকার সংলাপ, সহযোগিতা ও বোঝাপড়া। এমন রোডম্যাপ দরকার যেখানে মানুষের জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। রাষ্ট্র আর নাগরিকের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরবে না। এখনকার নেতৃত্বকে দ্রুত এগিয়ে এসে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করতে হবে। সেখান থেকে দেশকে নতুন নির্বাচনের পথে নিতে হবে।

এর জন্য বালেন শাহকে এখনই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তিনি নতুন প্রজন্মের প্রতিনিধি। দেশের সাংবিধানিক কাঠামো, নিরাপত্তা বাহিনী, বিরোধী দল ও সাধারণ মানুষ—সবাইকে যুবসমাজের এই দাবি ও নেতৃত্বকে সমর্থন করতে হবে।

্রিন্ট

আরও সংবদ