খুলনা | বৃহস্পতিবার | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ | ২৬ ভাদ্র ১৪৩২

কারাগারে বন্দিদের পালানোর চেষ্টা, সেনার গুলিতে নিহত ২

নেপালের অন্তর্বর্তী সরকারের নেতৃত্বে আসছেন নারী, তরুণরা চাচ্ছে বিচারপতি সুশিলাকে

খবর প্রতিবেদন |
১২:৪৫ এ.এম | ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫


অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের আলোচনা শুরু করেছে  নেপাল। জেন-জিদের আন্দোলনে কেপি শর্মা অলির সরকারের পতনের পর নেপালে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নেতৃত্বে আসতে পারেন দেশটির সাবেক প্রধান বিচারপতি সুশীলা কার্কি। বিক্ষোভকারীদের পছন্দের প্রার্থী কার্কি ভারতের উত্তর প্রদেশের বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয় (বিএইচইউ) থেকে পড়াশোনা করেছেন।
তিনি নেপালের সুপ্রিম কোর্টের প্রথম এবং একমাত্র নারী প্রধান বিচারপতি ছিলেন। দুর্নীতির মামলায় এক মন্ত্রীর কারাদণ্ডসহ একাধিক ঐতিহাসিক রায়ের জন্য দেশটিতে ব্যাপক পরিচিত তিনি।
এর আগে দেশটির অন্তর্বর্তী সরকার প্রধান কে হবেন এ বিষয়ে একটি ভার্চুয়াল মিটিংয়ে যোগ দেয় প্রায় ৫ হাজার মানুষ। প্রাথমিকভাবে কাঠমান্ডুর মেয়র বালেন শাহ জনপ্রিয়তার শীর্ষে ছিলেন। তবে এ বিষয়ে তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। 
তরুণদের এক প্রতিনিধি জানায়, তিনি আমাদের ফোন ধরেননি। সেক্ষেত্রে অন্যদের নামও আলোচনায় আসে। তরুণরা সবচেয়ে বেশি সমর্থন দিয়েছেন সুশিলা কার্কিকে। তার কাছে এর আগে ওই প্রস্তাব দেয়া হলে তিনি সমর্থনের জন্য কমপক্ষে ১ হাজার লিখিত স্বাক্ষর চান। 
সূত্রমতে, তিনি ২ হাজার ৫০০ জনের স্বাক্ষর সংগ্রহ করেছেন। যা প্রয়োজনের তুলনায় বেশি। যদিও কার্কি সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়তা পেয়েছেন, তবে ভার্চুয়াল মিটিংয়ে অন্যদের নামও উঠে আসে। এর মধ্যে নেপালের বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের প্রধান কুলমান ঘিসিং, যুব নেতা সাগর ধাকাল ও ধারানের মেয়র হারকা সামপাঙ অন্যতম। 
র‌্যান্ডম নেপালি নামের এক ইউটিউবারও যথেষ্ট সমর্থন পেয়েছেন। তবে তিনি বলেন, যদি অন্য কেউ ওই দায়িত্ব গ্রহণ করতে না চান সেক্ষেত্রে তিনি অগ্রসর হবেন। 
সুশিলা কার্কি যদি প্রস্তাব গ্রহণ করেন, তাহলে তিনি প্রথমে সেনা প্রধান জেনারেল অশোক রাজের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। এরপর তার প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। তবে প্রক্রিয়াটি এখন যথেষ্ট জটিল। কারণ বর্তমানে দেশটিতে কোনো প্রেসিডেন্টই নেই। 
এর আগে সরকারের দুর্নীতি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের ওপর নিষেধাজ্ঞার জেরে বিক্ষোভ করে তরুণরা। ওই বিক্ষোভে পুলিশ গুলি চালালে সেখানে প্রাণ হারান ২২ জন। এরপর পার্লামেন্ট, প্রেসিডেন্টের কার্যালয়, প্রধানমন্ত্রীর বাসভবন ও পার্টির হেড কোয়ার্টারে আগুন দেয় বিক্ষোভকারীরা। সাবেক প্রধানমন্ত্রী শের বাহাদুর দেউবা ও তার স্ত্রী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আরজু রানা দেউবার ওপর হামলা চালায় বিক্ষোভকারীরা। 
কারাগারে বন্দিদের পালানোর চেষ্টা, সেনার গুলিতে নিহত ২: নেপালের ধাদিং জেলা কারাগার থেকে বন্দিরা পালানোর চেষ্টা করলে সেনাবাহিনী গুলি চালায়। এ সময় দুই বন্দির মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধান জেলা কর্মকর্তা বিজয়রাজ সুবেদি। বুধবার নেপালের সংবাদমাধ্যম ‘সেতুপতি’ এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে।
নিহতরা হলেন ধাদিংয়ের বেনিঘাট রোরাং-৪ এলাকার ৭৫ বছর বয়সি জিতবাহাদুর ঘলে এবং নওয়ালপরাসি পশ্চিমের সুনওয়াল-১২ এলাকার ৩৬ বছর বয়সী ইন্দ্রবাহাদুর দালা।
প্রধান জেলা কর্মকর্তা আরও জানান, ঘটনায় অন্তত সাতজন বন্দি আহত হয়েছেন। তারা মানব পাচার, ধর্ষণ এবং মাদক মামলায় সাজা ভোগ করছিলেন। আহতদের বুধবারই চিকিৎসার জন্য কাঠমান্ডু পাঠানো হয়েছে। গুলির ঘটনা ঘটে বুধবার দুপুর আড়াইটা নাগাদ।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বুধবার সকাল ৯টা থেকেই বন্দিরা কারাগারের ভেতরে শ্লোগান দিচ্ছিল এবং ভাঙচুর শুরু করে। পরে তারা অগ্নিসংযোগ করলে দমকল গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। বন্দিরা কারাগারের ভেতরে কাজের জন্য ব্যবহৃত সরঞ্জাম দিয়ে নিরাপত্তাকর্মীদের আক্রমণের চেষ্টা চালায়। এমনকি কারাগারের তালাও ভেঙে ফেলার ঘটনা ঘটে।
প্রধান জেলা কর্মকর্তা সুবেদি জানান, বন্দিরা দাবি করেছি-যেহেতু কাঠমান্ডুতে রবি লামিছানেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে, তাই তাদেরও ছেড়ে দিতে হবে। ‘তাদের দাবি ছিল, রভিকে হয় ধাদিং নিয়ে এসে এখানে আটকাতে হবে, না হলে আমাদেরও মুক্তি দিতে হবে,’ বলেন তিনি।
সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা উত্তেজনা চলার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে প্রথমে পানি ছিটানো হয়। কিন্তু তাতেও পরিস্থিতি শান্ত না হলে বিকালে সেনারা গুলি চালায়। বর্তমানে কারাগার এলাকাটি সেনার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলে জানিয়েছেন সুবেদি।
চলতি সপ্তাহের সপ্তাহের শুরুতে কাঠমান্ডু এবং অন্যান্য শহরে সহিংস বিক্ষোভের পর নিরাপত্তা বাহিনী উচ্চ সতর্কতায় থাকার কথা জানানোর পর এই ঘোষণাটি এসেছে। বিক্ষোভে সরকারি অফিস, রাজনৈতিক নেতাদের বাসভবন এবং সরকারি ভবনগুলোতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে।

্রিন্ট

আরও সংবদ